সাহস আর লড়াইয়ে বিশ্বকাপের স্বপ্ন জিম্বাবুয়ের
দৈনিকসিলেট ডেস্ক :
শ্রীলঙ্কা ও ওয়েস্ট ইন্ডিজের মতো দল যেখানে আছে, সেখানে বাছাইপর্ব পেরিয়ে বিশ্বকাপ খেলায় জিম্বাবুয়ে নেই ফেভারিটদের তালিকায়। তবে তাদের আছে চোখভরা স্বপ্ন আর বুকভরা সাহস। এসবকে সম্বল করে তারা ছুটছে ভারত বিশ্বকাপের জায়গা করে নেওয়ার অভিযানে। ওয়েস্ট ইন্ডিজকে হারিয়ে দেওয়ার পর তাদের স্বপ্নে লেগেছে নতুন রঙের ছোঁয়া। দলের সেরা ক্রিকেটার সিকান্দার রাজার তাই প্রত্যয়ী উচ্চারণ, সাহসিকতা ও লড়িয়ে মানসিকতা থাকলে বিশ্বের সেরা দলের চেয়েও খুব একটা পিছিয়ে নন তারা।
দুইবারের বিশ্ব চ্যাম্পিয়ন ওয়েস্ট ইন্ডিজকে ৩৫ হারিয়ে জিম্বাবুয়ে শনিবার নিশ্চিত করেছে সুপার সিক্স। পাশাপাশি পরের ধাপে তারা সঙ্গে নিয়ে যাচ্ছে পূর্ণ ৪ পয়েন্ট। ‘এ’ গ্রুপ থেকে সুপার সিক্স পর্বে পা রাখা ওয়েস্ট ইন্ডিজ ও নেদারল্যান্ডসকে হারিয়েছে তারা।
এই দুই ম্যাচেই জিম্বাবুয়ের নায়ক ছিলেন রাজা। প্রথম ম্যাচে নেপালের বিপক্ষে ক্রেইন আরভিন ও শন উইলিয়ামসের সেঞ্চুরিতে ৮ উইকেটের জয়ে রাজাকে ব্যাটিংয়ে প্রয়োজন হয়নি। পরের ম্যাচে ডাচদের বিপক্ষে ৫৪ বলে ১০২ রানের ম্যাচ জেতানো অপরাজিত ইনিংস খেলেন তিনি। বল হাতে উইকেট নেন ৪টি। তৃতীয় ম্যাচে ক্যারিবিয়ানদের বিপক্ষেও নায়ক তিনিই। ব্যাটিংয়ে ৫৮ বলে ৬৮ রানের পর বল হাতে শিকার করেন ক্যারিবিয়ান অধিনায়ক শেই হোপ ও কিমো পলের উইকেট।
এই টুর্নামেন্টেই শুধু নয়, গত দেড়-দুই বছর ধরেই অসাধারণ পারফর্ম করে চলেছেন এই অলরাউন্ডার। ওয়েস্ট ইন্ডিজকে হারিয়ে ম্যাচ সেরার স্বীকৃতি পেয়ে তিনি বললেন, সাহস আর বিশ্বাসই তাদের এগিয়ে চলার রসদ।
“ছেলেদের কাছ থেকে স্রেফ সাহস আর লড়াই চাইছিলাম, ব্যস। যতক্ষণ পর্যন্ত আমরা তা করতে পারছি… স্কিল তো এসবকে অনুসরণ করবেই…বিশ্বের সেরা দল থেকেও আমরা খুব একটা পিছিয়ে নেই।”
ওয়েস্ট ইন্ডিজের বিপক্ষে এই ম্যাচে শুরুটা ভালো ছিল না জিম্বাবুয়ের। ২৫তম ওভারে তাদের রান ছিল ৪ উইকেটে ১১২। পঞ্চম উইকেটে ৮৭ রানের জুটি গড়েন রাজা ও রায়ান বার্ল। আম্পায়ারের প্রশ্নবিদ্ধ সিদ্ধান্তে বার্ল আউট হয়ে যান ৫০ রান করে। রাজা দলকে টেনে নেন আরেকটু। শেষ পর্যন্ত তবু ২৬৮ রানে আটকে যায় জিম্বাবুয়ে। ব্যাটিং সহায়ক উইকেটে যা খুব ভালো স্কোর নয়।
তার পরও দলের এমন জয়ের কৃতিত্ব বোলারদের দিলেন রাজা। পাশাপাশি তুলে ধরলেন তাদের স্বপ্ন পূরণের তাড়নার কথাও।
“আমাদের বোলিং অনেক দিন ধরেই অসাধারণ। আমার মনে হয়েছিল, ২০-৩০ রানের ঘাটতি আছে আমাদের। তবে জয়ের যে ক্ষুধা আমাদের আছে এবং ভারতে বিশ্বকাপ খেলতে যাওয়ার যে তাড়না, সেটিই ঘাটতিগুলোকে পুষিয়ে দিয়েছে।”
“বোলারদের ওপর আমাদের বিশ্বাস ছিল সবসময়ই। তাদেরকে নিয়ে কখনোই সংশয় ছিল না আমাদের। তারাই আমাদেরকে ম্যাচটি জিতিয়েছে।”
হারারে স্পোর্টস ক্লাব মাঠ এ দিন ছিল দর্শকে টইটম্বুর। দলকে সমর্থন দিয়ে গেছেন তারা ক্লান্তিহীনভাবে। ম্যাচ শেষে তাদের প্রতিও কৃতজ্ঞতা জানালেন রাজা।
“আমার মনে হয় না, স্রেফ স্কিল দিয়ে আমরা এই ম্যাচ জিততে পারতাম। দর্শকেরাও এখানে বড় ভূমিকা রেখেছেন। আমরা তাই এখন ল্যাপ অব অনার দেব।”
বাছাইয়ের গ্রুপ পর্বে জিম্বাবুয়ের শেষ ম্যাচ সোমবার যুক্তরাষ্ট্রের বিপক্ষে। এই ম্যাচের ফলাফলের অবশ্য কোনো ভূমকা থাকবে না সুপার সিক্স পর্বে।