৩০ টাকার দিনমজুর আজ ১৩ হাজার কোটি টাকার মালিক
দৈনিকসিলেটডেস্ক
ইচ্ছাশক্তির জোরে অনেক কিছুই করা যায়। যে কোনও প্রতিকূলতাই শেষ পর্যন্ত হার মানতে বাধ্য হয় এই ইচ্ছাশক্তির জোরেই। ভারতের পাঞ্জাবের সাধারণ পরিবারের ছেলে রাজিন্দর গুপ্তাই তার জ্বলন্ত প্রমাণ।
আসুন একবার দেখে নিই এই রাজিন্দরের সফর কেমন ছিল। সালটা ১০৫৯। একজন তুলা ব্যবসায়ীর বাড়িতে জন্মান রাজিন্দর। পরিবারের আর্থিক অবস্থা ভালো ছিল না। নবম শ্রেণি পর্যন্ত পড়াশোনা করেন তিনি। এরপর পরিবারের অর্থকষ্ট দূর করতে উপার্জনের পথই বেছে নেন তিনি।
একসময়, মোমবাতি, সিমেন্টের পাইপ তৈরির জন্য দিনমজুর হিসাবে কাজ শুরু করেন। দিনে উপার্জন ছিল মাত্র ৩০ টাকা। এরপর সাল ১৯৮৫। সে বছরই রাজিন্দরের জীবন বদলাতে শুরু করল। তৈরি করলেন একটি সার কারখানা। এরপরে ১৯৯১ সালে তৈরি করলেন একটি সুতোর কল।
সেই থেকেই একের পর এক ব্যবসায় সাফল্যের মুখ দেখতে শুরু করলেন রাজিন্দর। পরবর্তী সময়ে বস্ত্র, কাগজ এবং রাসায়নিকের ব্যবসায় সফল হন রাজিন্দর। তৈরি করেন নিজস্ব সংস্থা। পাঞ্জাব এবং মধ্যপ্রদেশে রয়েছে তার সংস্থার বিভিন্ন কেন্দ্র।
নিজের সংস্থার ডিরেক্টর পদে ছিলেন রাজিন্দর। ২০২২ সালে শারীরিক অসুস্থতার কারণে ওই পদ থেকে সরে দাঁড়ান তিনি। বর্তমানে ‘চেয়ারম্যান ইমেরিটাস’ পদে রয়েছেন তিনি। বাণিজ্য এবং শিল্প ক্ষেত্রে অবদানের স্বীকৃতি হিসাবে ২০০৭ সালে পদ্মশ্রী সম্মানে ভূষিত হন রাজিন্দর।
চণ্ডীগড়ে পঞ্জাব ইঞ্জিনিয়ারিং কলেজের বোর্ড অফ গভর্নর্স-এর চেয়ারম্যান হিসাবে দায়িত্ব সামলাচ্ছেন তিনি। এক সময় তার দৈনিক মজুরি ছিল ৩০ টাকা। আর এখন তিনি কোটিপতি। রাজিন্দরের মোট সম্পত্তির পরিমাণ ১৩ হাজার কোটি টাকা।
ভারতের অন্যতম নামী শিল্পপতি ধীরুভাই অম্বানী। রাজিন্দরকে ‘পাঞ্জাবের ধীরুভাই অম্বানী’ বলা হয়। রাজিন্দরের এক পুত্র এবং এক কন্যাসন্তান রয়েছেন। পুত্রের নাম অভিষেক গুপ্তা। তিনি সংস্থার ম্যানেজিং ডিরেক্টর পদে রয়েছেন।
রাজিন্দরের কন্যার নাম নেহা গুপ্তা। লন্ডনে কাস বিজনেস স্কুলে অর্থনীতি (ফিনান্স) নিয়ে স্নাতকোত্তর যোগ্যতা অর্জন করেছেন তিনি। রাজিন্দরের সাফল্য অনেকের কাছেই প্রেরণা। তার এই উত্থানকাহিনি পাঞ্জাবের বিভিন্ন বিজনেস স্কুলে ‘কেস স্টাডি’ হিসাবে পড়ানো হয়।