ডেউয়া ফলের পুষ্টিগুণ জানলে আপনিও অবাক হবেন!
দৈনিকসিলেটডেস্ক
যে ফলগুলোকে পুরোপুরি দেশি ফল বলা যায় তাদের মধ্যে ডেউয়া একটি। শহরাঞ্চলে খুব একটা দেখা না গেলেও গ্রামাঞ্চলে এটি অত্যন্ত পরিচিত ফল। অবশ্য বর্তমানে ঢাকার বাজারে দেখা মিলছে ফলটির। কেউ চিনতে পারছেন না। কেউবা শৈশবের স্মৃতিচারণ করছেন।
চিনুন কিংবা না চিনুন, খাদ্যতালিকায় কিন্তু গ্রাম্য এই ফলটি নিশ্চিন্তে রাখতে পারেন। যেসব দেশি ফল পুষ্টিগুণে ভরপুর তাদের মধ্যে ডেউয়া অন্যতম। অঞ্চলভেদে ফলটি মানুষের কাছে বিভিন্ন নামে পরিচিত। ঢেউয়া, ডেলোমাদার, ডেউফল, ঢেউফল ইত্যাদি নামেও অনেকে চেনেন একে।
ডেউয়ার পাতাহীন ডালপালায় ফুল আসে মার্চে আর আগস্ট মাসে ফল পাকে। এখন অবশ্য জুন/জুলাইয়েও পাকা ফল পাওয়া যায়। ডেউয়া ফলের ভেতরে কাঁঠালের মতো ভেতরে হলুদ রঙের ছোট ছোট কোষ থাকে। পাকা ফল অতি মোলায়েম হয়।
পাকা ফলের ভেতরের শাঁস লালচে হলুদ হয়। ডেউয়ার শারীরিক গঠন কিছুটা এবড়ো থেবড়ো হয়ে থাকে। স্বাদ টক আর মিষ্টি মিশেল। পুষ্টিগুণে ডেউয়া অনেকাংশে কাঁঠালের সমান। শরীরের জন্য নানা প্রয়োজনীয় উপাদান রয়েছে এতে। কেন খাবেন ডেউয়া?
কোষ্ঠকাঠিন্য দূর করে: কোষ্ঠকাঠিন্য ও গ্যাসের কারণে সৃষ্ট পেটব্যথা কমাতে সাহায্য করে ফলটি। এটি যকৃতের নানা অসুখ নিরাময়েও সাহায্য করে। এছাড়াও নিয়মিত ডেউয়া খেলে স্মৃতিশক্তি বাড়ে।
মুখে রুচি আনে: অরুচিতে ভুগছেন? ভরসা রাখুন ডেউয়ায়। দু-তিন চামচ ডেউয়ার রসের সঙ্গে একটু লবণ আর গোলমরিচের গুঁড়া মিশিয়ে দুপুরবেলা ভাত খাওয়ার আগে খান। মুখে রুচি আসবে। অতিরিক্ত পিপাসা দূর হয়।
স্ট্রোকের ঝুঁকি কমায়: ডেউয়াতে রয়েছে পটাশিয়াম। যা রক্ত চলাচলে সহায়তা করে, রক্তচাপ নিয়ন্ত্রণে রাখে এবং হৃদরোগ ও স্ট্রোকের ঝুঁকি কমায়। সানস্ট্রোকের ঝুঁকি কমায় ফলটি।
ত্বকের রুক্ষতা দূর করে: ত্বকের রুক্ষতা দূর করতে ব্যবহার করুন ডেউয়া গাছের ছালের গুঁড়ো। এটি ত্বকের রুক্ষতা দূর করে এবং ব্রণের দুষিত পুঁজ বের করে দেয়।
মেদ কমায়: মেদভুঁড়ি কমাতে ডেউয়া খেতে পারেন। ফলের রস এক থেকে দেড় চামচ ঠান্ডা পানিতে মিশিয়ে প্রতিদিন একবার করে এক মাস খেলে উপকার পাবেন।
রোগ প্রতিরোধে সাহায্য করে: ত্বক, চুল, নখ, দাঁত ও মাড়ির নানা রোগ প্রতিরোধে সহায়তা করে। এতে রয়েছে প্রচুর পরিমাণে ক্যালসিয়াম যা দাঁত ও হাড়ের ক্ষয়রোগ প্রতিরোধ করে।
পেটের গ্যাস কমায়: পেট পরিষ্কার করতে এই ফল খুবই কার্যকর। দেড় চামচ পাকা ডেউয়ার রস আধা কাপ পানিতে মিশিয়ে অল্প চিনি দিয়ে প্রতিদিন একবার করে এক সপ্তাহ খেলে পেটের গ্যাস বা বায়ুর সমস্যা পুরোপুরি দূর হবে।