টাইগারদের বিপক্ষেই বিশ্বকাপ প্রস্তুতি শুরু করতে চায় আফগানিস্তান
দৈনিকসিলেটডেস্ক
তিন ম্যাচের ওয়ানডে আর দুই ম্যাচের টি-টোয়েন্টি সিরিজ খেলতে বাংলাদেশে এসেছে আফগানিস্তান। আগামী ৫ জুলাই থেকে চট্টগ্রামে শুরু হবে ওয়ানডে সিরিজ। এরপর সিলেটে হবে দুই ম্যাচের টি-টোয়েন্টি সিরিজ। বাংলাদেশের বিপক্ষে ওয়ানডে সিরিজ দিয়ে আগামী অক্টোবরে ভারতের মাটিতে শুরু হতে যাওয়া বিশ্বকাপের প্রস্তুতি শুরু করতে চায় আফগানিস্তান। ক্রিকেটবিষইয়ক ওয়েবসাইট ক্রিকবাজকে এমনটাই জানিয়েছেন আফগান অধিনায়ক হাসমতুল্লাহ শাহিদি।
আইসিসি সুপার লিগে দুর্দান্ত পারফরম্যান্স করে দুই সাবেক বিশ্বচ্যাম্পিয়ন শ্রীলঙ্কা ও ওয়েস্ট ইন্ডিজের মত দলকে পেছনে ফেলে সরাসরি বিশ্বকাপে খেলা নিশ্চিত করেছে আফগানিস্তান। ১৫ ম্যাচে ১১ জয়, ৩ হার ও ১টি পরিত্যক্ত ম্যাচের কারণে ১১৫ পয়েন্ট নিয়ে টেবিলের সপ্তম স্থানে থেকে বিশ্বকাপে যাবে আফগানরা।
আগামী বিশ্বকাপ নিয়ে পরিকল্পনার নকশা সাজিয়ে রেখেছে আফগানিস্তান। বাংলাদেশের বিপক্ষে সিরিজ দিয়েই বিশ্বকাপের প্রস্তুতি শুরু করতে চায় আফগানরা।
ক্রিকবাজকে দেওয়া এক সাক্ষাৎকারে আফগান অধিনায়ক শাহিদি বলেন, ‘এশিয়া কাপ বড় ইভেন্ট এবং আমরা যদি এই প্রতিযোগিতায় ভালো করি তাহলে বিশ্বকে বার্তা দিতে পারবো, আমরা বিশ্বকাপের জন্য আসছি। এশিয়া কাপে ভালো করতে আমরা অনেক বেশি আত্মবিশ্বাসী এবং এই আত্মবিশ্বাসটা বিশ্বকাপে নিয়ে যেতে চাই। আমরা বাংলাদেশ সিরিজের দিকে তাকিয়ে আছি। কারণ বিশ্বকাপের আগে এখন থেকে প্রতিটি ম্যাচই আমাদের জন্য গুরুত্বপূর্ণ হবে।’
ইংল্যান্ডের মাটিতে গত বিশ্বকাপে লিগ পর্বে একটি ম্যাচও জিততে পারেনি আফগানিস্তান। আফগানদের পারফরম্যান্স নিয়ে সমালোচনাও হয়েছে অনেক। বিশেষভাবে টুর্নামেন্টের আগ মুর্হূতে অধিনায়ক হিসেবে গুলবাদিন নাইবের নাটকীয়তা নিয়ে।
তবে পুরনো কথা নিয়ে ভাবতে চান না শাহিদি। তিনি বলেন, ‘আফগানিস্তান, পাকিস্তান ও বাংলাদেশের মতো দেশে বিশেষ করে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে অনেক বেশি সমালোচনা হয়। মাঝে মাঝে এটি দেখি এবং মুছে ফেলি আমি। কারণ আমি জানি আপনি ভাল করলে সবাই ভাল কথা বলবে এবং নয়তো এই দেশগুলিতে বিশেষ করে অধিনায়ককে টার্গেট করা হয়। এজন্য আমি সবকিছু মুছে ফেলেছি। আমার জন্য গুরুত্বপূর্ণ হলে, আমরা দলের ভিতরের আলোচনা এবং বাইরের মানুষদের মতামতকে গুরুত্ব দিই না। আপনি বলেছেন, খারাপ পারফরম্যান্স করলে আমি অধিনায়কত্ব হারাবো। দেখুন আমি যদি এই বিষয়গুলিতে ফোকাস করি তবে আমার উপর চাপ আরও বাড়বে। এজন্য একজন খেলোয়াড় এবং অধিনায়ক হিসেবে আমি অন্য কিছুর চেয়ে ভালো প্রস্তুতির দিকে ফোকাস করি। নেতিবাচক চিন্তা করলে দলের পারফরম্যান্সের ক্ষতি হবে এজন্য এসব গুরুত্ব দিই না।’
ওয়ানডে ক্রিকেটে অনেক বেশি পরিণত আফগানিস্তান। এর পেছনের কারনও তুলে ধরলেন শাহিদি, ‘তিন বা চার বছর আগে আমরা যখন ওয়ানডে ম্যাচ খেলতাম বেশিরভাগ নিজেদের মাঠে, যেমন ভারত বা দুবাই খেলা হতো। সেখানে আমাদের মত উইকেট বানাতাম। স্বাভাবিক বিষয় হলো, আমরা স্পিন বান্ধব উইকেট তৈরি করতাম যা খুব ধীরগতির হতো এবং ২৪০-২৫০ রানই যথেষ্ট ছিল। কিন্তু সর্বশেষ দুই বছরে আমরা একটি সিরিজ আয়োজন করেছি এবং বাকিগুলো শ্রীলঙ্কা-জিম্বাবুয়েতে খেলেছি। এখন বাংলাদেশে খেলবো।’
তিনি আরও বলেন, ‘এখন ওয়ানডে ক্রিকেটে নিয়মিত ৩০০-৩২০ রান হচ্ছে। আমরা উইকেট অনুযায়ী নিজেদের মত খেলবো, যেমন ৩০০ রানের উইকেট হলে আমাদের সেভাবে খেলতে হবে। ২০০ রানের উইকেট হলে আমাদের সেভাবেই খেলতে হবে।’
বাংলাদেশের বিপক্ষে গেল মাসে এক ম্যাচের টেস্ট সিরিজ খেলেছে আফগানিস্তান। টেস্টটি ৫৪৬ রানের বড় ব্যবধানে হেরেছে আফগানরা। টেস্ট স্ট্যাটাস থাকলেও এখনও আইসিসি টেস্ট চ্যাম্পিয়নশিপের অংশ হতে পারেনি তারা। আরও বেশি টেস্ট খেলার ইচ্ছা প্রকাশ করলেন শাহিদি, ‘আমরা গত চার বছরে ৬টি টেস্ট খেলেছি এবং পারফরম্যান্স খারাপ হয়নি। আমরা জিম্বাবুয়ে, আয়ারল্যান্ড এবং বাংলাদেশকে হারিয়েছি। আইসিসি যদি আমাদের আরও বেশি টেস্ট খেলার সুযোগ দেয় তাহলে আমরা দল হিসেবে উন্নতি করবো।’