বাড়ছে ঢলের পানি, উৎকণ্ঠায় হাওর এলাকার মানুষ
সুনামগঞ্জ প্রতিনিধি :
টানা বৃষ্টি ও উজান থেকে নেমে আসা পাহাড়ী ঢলে জেলার যাদুকাটা,চেলা,সুরমাসহ সবকটি নদ-নদী ও হাওরে পানি আবারও বৃদ্ধি পাচ্ছে।এতে ভোগান্তিতে পড়েছে ঈদে বাড়ি থেকে কর্মস্থল ফেরত মানুষসহ এলাকাবাসী।
পানি উন্নয়ন বোর্ড জানিয়েছে,সুরমা নদীর পানি ছাতক পয়েন্টে বিপদসীমার ৬৯ সেন্টিমিটার ওপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে।
তবে সুনামগঞ্জ পয়েন্টে নদীর সুরমার পানি এখনো বিপদসীমার ২৫ সেন্টিমিটার নিচে রয়েছে। আগামী ২৪-৪৮ ঘন্টা বৃষ্টিপাত অব্যাহত থাকলে জেলার নিম্নাঞ্চল প্লাবিত হয়ে স্বল্প মেয়াদি বন্যা সৃষ্টি হওয়ার আশঙ্কা করছেন সংশ্লিষ্টরা।
পানি উন্নয়ন বোর্ড জানিয়েছে,আগামী ৭২ ঘন্টায় দেশের উত্তর-পূর্বাঞ্চল এবং তৎসংলগ্ন উজানে ভারি থেকে অতিভারি বৃষ্টিপাতের সম্ভাবনা রয়েছে। ফলে সুনামগঞ্জের হাওর ও সীমান্ত এলাকায় বসবাসকারী মানুষ বন্যার আশংকায় উৎবেগ আর উৎকণ্ঠা মধ্যে সময় পার করছেন।
ভারি বৃষ্টিপাত ও পাহাড়ি ঢলে সুনামগঞ্জ জেলার ৬টি স্টেশনের মধ্যে ৪টি স্টেশনেই পানি কিছুটা বেড়েছে এবং ২টি স্টেশনে পানি সামান্য কমেছে।
ফলে কয়েকটি উপজেলায় সড়কও পানিতে তলিয়ে গেছে। জেলা শহরে আসতে গিয়ে কোনো কোনো সড়কে মানুষজন নৌকা দিয়ে পাড়া পাড় হচ্ছে। পাহাড়ি ঢলের পানি বৃদ্ধি পাওয়ার জেলার হাওর পাড়ে ও সীমান্ত এলাকায় বসবাসকারী কয়েক লক্ষাধিক মানুষ গত বছরের বন্যার আশংকায় আতংকের মধ্যে সময় পার করছে।
বাংলাদেশ পানি উন্নয়ন বোর্ডের বন্যা পূর্বাভাস ও সতর্কীকরণ কেন্দ্র জানিয়েছে,দেশের উত্তর-পূর্বাঞ্চলের সকল নদ-নদীসমূহের পানি সমতল বৃদ্ধি পাচ্ছে। আবহাওয়া সংস্থা সমূহের তথ্য অনুযায়ী,আগামী ৭২ ঘন্টায় দেশের উত্তর পূর্বাঞ্চল এবং তৎসংলগ্ন উজানে ভারি থেকে অতিভারি বৃষ্টিপাতের সম্ভাবনা রয়েছে। ফলে এ সময় এ অঞ্চলের কতিপয় নদ-নদীসমূহের (যাদুকাটা,সুরমা,কুশিয়ারা,সারিগোয়াইন, সোমেশ্বরি)পানি দ্রুত বৃদ্ধি পেয়ে সিলেট, সুনামগঞ্জ, নেত্রকোনা জেলার নিম্নাঞ্চলে বন্যা পরিস্থিতির সৃষ্টি করতে পারে।
মধ্যনগর উপজেলার মহেষখলা গ্রামের বাসিন্দা অজিত কুমার জানায়,মেঘালয় অতিরিক্ত বৃষ্টিপাত হওয়ায় ঢলের পানি,মধ্যনগর উপজেলার,বংশীকুন্ডা উত্তর ইউনিয়নের সীমান্ত এলাকার সড়ক উপচে প্রবলবেগে হাওর এলাকায় প্রবেশ করছে।
জরুরি প্রয়োজন তাহিরপুর উপজেলা থেকে জেলা শহরে আসা মেহেদী হাসান জানান, জেলার সাথে বিশ্বম্ভরপুর ও তাহিরপুর সড়কের শক্তিয়ারখলাসহ কয়েকটি অংশ পানিতে তলিয়ে গেছে। এছাড়াও জেলার হাওর পাড়ের সড়ক গুলো পানিতে তলিয়ে যাওয়ায় ভেঙে ভেঙে কষ্ট করে সুনামগঞ্জ জেলা শহরে পৌছাতে হয়েছে।
সুনামগঞ্জ পানি উন্নয়ন বোর্ডের নির্বাহী প্রকৌশলী মামুন হাওলাদার জানান, টানা ভারী বর্ষণ ও পাহাড়ি ঢলে আরও বাড়তে থাকলে জেলার নিম্নাঞ্চলে স্বল্পমেয়াদী বন্যা পরিস্থিতি সৃষ্টি হতে পারে। এখন পর্যন্ত লোকালয়ে পানি প্রবেশ করে নি। আগামী ৭২ ঘন্টায় দেশের উত্তর-পূর্বাঞ্চল এবং তৎসংলগ্ন উজানে ভারি থেকে অতিভারি বৃষ্টিপাতের সম্ভাবনা রয়েছে।
সুনামগঞ্জ জেলা প্রশাসক দিদারে আলম জানান, বৃষ্টিপাত অব্যাহত থাকলে বন্যার আশংঙ্কা দেখা দিলে পর্যাপ্ত খাদ্য সহায়তা মজুদ রয়েছে এবং আশ্রয় কেন্দ্র গুলো প্রস্তুত রাখা হয়েছে।