টানা বৃষ্টি ও পাহাড়ি ঢলে বাড়ছে সুনামগঞ্জে নদ-নদীর পানি
দৈনিকসিলেট প্রতিবেদক :
টানা বৃষ্টি ও পাহাড়ি ঢলে বাড়ছে সুনামগঞ্জের নদ-নদীর পানি। ঢলের পানিতে ডুবেছে জেলার বিভিন্ন এলাকার রাস্তাঘাট। প্লাবিত হচ্ছে জেলার নিম্নাঞ্চলের বেশ কিছু এলাকা। জলাবদ্ধতা তৈরি হয়েছে শহরের কাজির পয়েন্ট, ষোলঘর আরপিননগরসহ বিভিন্ন এলাকায়।
রোববার (২ জুলাই) বেলা ১২টা নাগাদ সুরমা নদীর পানি বিপৎসীমার ৬ সেন্টিমিটার ওপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছিল। এ পরিস্থিতিতে দুর্যোগ মোকাবেলায় জরুরি সভা করেছে জেলা দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা কমিটি।
জেলা পানি উন্নয়ন বোর্ডের নির্বাহী প্রকৌশলী-১ মামুন হাওলাদার জানান, সুনামগঞ্জ ও ভারতের চেরাপুঞ্জিতে বৃষ্টিপাত বেড়েছে। এতে শহরে জলাবদ্ধতা তৈরি হয়েছে এবং বাড়ছে নদী ও হাওরের পানি। গেল ২৪ ঘণ্টায় সুনামগঞ্জ ৩৩২ মিলিমিটার বৃষ্টিপাত রেকর্ড করা হয়েছে। এছাড়া আগামী দুদিন বৃষ্টিপাত অব্যাহত থাকলে নিম্নাঞ্চল প্লাবিত হতে পারে।
জেলা প্রশাসক দিদারে আলম মোহাম্মদ মাকসুদ চৌধুরী বলেন, একদিকে পাহাড়ি ঢল আর অন্যদিকে ভারি বৃষ্টিপাত। হাওর ও নদ-নদীতে পানি বাড়ছে। সুরমা নদীর পানি বিপৎসীমার ৬ সেন্টিমিটার ওপর দিয়ে প্রবাহিত হয়েছে। আমরা সকল উপজেলা নির্বাহী অফিসারদের সতর্ক অবস্থায় থাকার জন্য জানিয়ে দিয়েছি। হাওর এলাকায় আশ্রয়কেন্দ্র খোলা আছে, পানিবন্দি মানুষ আশ্রয়কেন্দ্রে যেতে পারবেন। আমরা ত্রাণ সামগ্রীও প্রস্তুত রেখেছি।
পর্যটন কেন্দ্রিক পাহাড়ি এলাকা তাহিরপুর সড়কের শক্তিয়ার খলা পয়েন্টর ১০০ মিটার সড়কে ডুবে গিয়ে বন্ধ রয়েছে সুনামগঞ্জ-তাহিরপুর সরাসরি যান চলাচল।
সাধারণত এ সময় পর্যটকদের আনাগোনা বেশি থাকে। বর্তমান দুর্যোগ পরিস্থিতিতে পর্যটকরা যেন সুনামগঞ্জে বেড়াতে না আসেন, সেই অনুরোধ জানিয়েছেন জেলা প্রশাসক।
জেলা প্রশাসক সুত্রে জানা গেছে, বন্যা পরিস্থিতি মোকাবেলায় জেলায় ৪৪৯ টন জিআর চাল মজুদ আছে। ২২ লাখ ৫০ হাজার ৫০০ জিআর নগদ, এক হাজার ৯০০ প্যাকেট শুকনো খাবার ও ১ লাখ ৯৪ হাজার টাকা রয়েছে।
এরই মধ্যে উপজেলা নির্বাহী অফিসারদের কাছে ৩০ টন করে জিআর চাল বরাদ্দ দেয়া আছে। এছাড়া বন্যা পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণের বাইরে চলে গেলে পানিবন্দি মানুষের উদ্ধারে জেলা প্রশাসন, পুলিশ, বিজিবি, পানি উন্নয়ন বোর্ডসহ বিভিন্ন দপ্তরের বেশকিছু স্পিডবোড ও নৌকা প্রস্তুত আছে বলে জানিয়েছে জেলা প্রশাসন।
আজ জেলা দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা কমিটির জরুরি সভায় জেলা প্রশাসক দিদারে আলম মোহাম্মদ মাকসুদ চৌধুরীর সভাপতিত্বে বক্তব্য রাখেন পুলিশ সুপার মোহাম্মদ এহসান শাহ, ২৮ বর্ডার গার্ড ব্যাটালিয়নের (বিজিবি) অধিনায়ক লে. কর্নেল মাহবুবুর রহমান, স্থানীয় সরকার বিভাগের উপপরিচালক মোহাম্মদ জাকির হোসেন প্রমুখ।