বিয়ের ২৪ বছর পর স্ত্রীর যৌতুক মামলা: কারাগারে স্বামী
নুর উদ্দিন সুমন, হবিগঞ্জ
হবিগঞ্জ জেলার চুনারুঘাট উপজেলার সদর ইউনিয়নের ঘরগাঁও এলাকায় ২৪ বছর সংসার করার পর স্ত্রী’র দায়ের করা যৌতুক মামলায় স্বামী মো: আবুল কালাম (৪৫) কে কারাগারে পাঠানোর আদেশ দিয়েছেন আদালত।
মঙ্গলবার দুপুরের দিকে হবিগঞ্জের নারী ও শিশু ট্রাইব্যুনালের বিচারক (জেলা ও দায়রা জজ) মো: জাহিদুল হক আসামির জামিন আবেদন না মঞ্জুর করে কারাগারে পাঠানোর আদেশ দেন। মামলার বিবরণ থেকে জানা যায়, গত ১৫ মে, ৫ লাখ টাকা যৌতুকের জন্য স্ত্রী’কে মারধর করে দুই সন্তান সহ বাড়ি থেকে বের করে দেন চুনারুঘাট সদর ইউনিয়নের ঘরগাঁও গ্রামের সিকান্দার আলীর পুত্র আবুল কালাম ।
স্থানীয়রা সামাজিকভাবে বিষয়টি আপোষ মিমাংসার চেষ্টা করেও কোন ফলাফল না হওয়ায় স্বামী আবুল কালামকে আসামি করে চুনারুঘাট থানায় ২০ মে মামলা করেন ভুক্তভোগী স্ত্রী। এ ঘটনার পর গত ২৩ মে হাইকোর্ট থেকে ৬ সাপ্তাহের আগাম জামিন নেন আবুল কালাম। আগাম জামিনের মেয়াদ শেষে আদালতে আত্মসমর্পণ করে জামিন প্রার্থনা করলে বিচারক না মঞ্জুর করে কারাগারে পাঠানোর আদেশ দেন ।
এসব তথ্য নিশ্চিত করে ভুক্তভোগী স্ত্রী বলেন, অনুমান ২৪ বৎসর পূর্বে মোঃ আবুল কালাম সাথে বাদীনির সামাজিকভাবে বিবাহ হয়। বিবাহের পর অনুমান কয়েকমাস যাবত সাংসারিক জীবন সুখে শান্তিতেই অতিবাহিত হয়। এর পর স্বামীর আসল চেহারা প্রকাশ পায়। বিবাহের ৩ মাস পর থেকে যৌতুকের দাবীতে স্ত্রীকে শারীরিক ও মানুষিক নির্যাতন সহ মারধর শুরু করেন। এরই মধ্যে বাদীনির গর্ভে (২১) ও (১৯) বছরের দুইটি পুত্র সন্তান জন্ম হয়। বাদীনি তাহার ভবিষ্যতের কথা চিন্তা করে ৬ লাখ টাকা যৌতুক প্রদান করেন। এর পরও থামেনি নির্যাতন। সম্প্রতি, কারণে-অকারণে তাকে বেদম মারধর করেন আবুল কালাম । সবশেষ ৫ লাখ টাকার যৌতুক দাবি করে মারধর করে তাকে বাড়ি থেকে বের করে দেওয়া হয়। পরে বাধ্য হয়েই থানায় মামলা করেন তিনি।
এ ঘটনা তদন্ত সাপেক্ষে যথাযথ বিচার প্রার্থনার জন্য সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের দৃষ্টি কামনা করেন তিনি। এসব বিষয়ে জানতে চাইলে বাদীপক্ষের আইনজীবী মো: ইউসুফ আহমেদ বলেন, বাদীপক্ষের দায়েরকৃত মামলায় আদালতে আত্মসমর্পণ করে জামিনের প্রার্থনা করেন ভুক্তভোগীর স্বামী আবুল কালাম । আদালতের বিচারক উভয় পক্ষের আইনজীবীর শুনানী শেষে তাকে কারাগারে পাঠানোর আদেশ দেন। এ ঘটনায় বাদীপক্ষ ন্যায় বিচার পাবে বলে মন্তব্য করেন তিনি।