গ্রিসে দাবানলে বাড়ি-হোটেল ছেড়ে পালাচ্ছে মানুষ

দৈনিকসিলেট ডেস্ক :
গ্রিসের পর্যটন এলাকা রোডস দ্বীপের বিস্তৃত এলাকায় দাবানল ছড়িয়ে পড়ায় হাজার হাজার মানুষকে ঘরবাড়ি ও হোটেল থেকে সরিয়ে নেওয়া হয়েছে। দেশটির ফায়ার সার্ভিস বলছে, তারা এখন সবচেয়ে কঠিন পরিস্থিতি মোকাবিলা করছে। এখন পর্যন্ত প্রায় সাড়ে তিন হাজার মানুষকে নিরাপদ জায়গায় সরিয়ে নেওয়া হয়েছে।
বিবিসির এক প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, ইউরোপজুড়ে তীব্র দাবদাহের মধ্যে এখন প্রচণ্ড বাতাসসহ দাবানলের সঙ্গে লড়াই করছে দ্বীপটি।
তবে দেশটির জলবায়ু সংকট ও নাগরিক সুরক্ষা বিষয়ক মন্ত্রণালয় জানিয়েছে, এখন পর্যন্ত কারও আহত হবার ঘটনা ঘটেনি। তারা বলছে, দ্বীপটির যেসব এলাকা বেশি আক্রান্ত সেখান থেকে পর্যটকদের নিরাপদে অন্য জায়গায় নিয়ে যাওয়া হয়েছে।
পাঁচটি হেলিকপ্টার এবং ১৭৩ জন দমকল কর্মী ওই এলাকায় কাজ করছে। আগুনে তিনটি হোটেল ক্ষতিগ্রস্ত হওয়ার তথ্য পাওয়া গেছে। যেসব এলাকায় ক্ষয়ক্ষতি বেশি তার মধ্যে আছে লায়েরমা, লারডোস ও আস্কলিপিও।
দ্বীপের পূর্বাঞ্চলের সৈকত এলাকা থেকে লোকজনকে তুলে নিরাপদ জায়গায় নিতে কোস্টগার্ডকে সহায়তা করেছে ব্যক্তি মালিকানাধীন নৌকাগুলোও। গ্রিক নৌবাহিনীর জাহাজ ঘটনাস্থলের দিকে রওনা দিয়েছে। এলাকাটি পর্যটকদের কাছে খুবই জনপ্রিয়।
গ্রিক টেলিভিশনে পর্যটকদের লম্বা লাইন করে নিরাপদ জায়গায় যাওয়ার জন্য অপেক্ষমাণ দেখা গেছে, যেখানে পেছন দিকে দেখা যাচ্ছিলে দাবানল।
একজন ব্রিটিশ পর্যটক বলেন, তাকে তার বোন ও কন্যাসহ হোটেল থেকে সরিয়ে নেয়া হয়েছে। কিন্তু এরপর থেকে আরও শতশত লোকের সাথে প্রচণ্ড গরমের মধ্যে সৈকতে আটকা আছেন তারা।
সাইমন হুইটলি নামে আরেকজন বলছিলেন, তিনি পিৎজা খাচ্ছিলেন এবং তাতে এসে ছাই পড়তে শুরু করেছিল।
ট্রাভেল কোম্পানি টিইউআই জানিয়েছে, অল্প সংখ্যক হোটেল ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে এবং তাদের গ্রাহকদের সতর্কতার সঙ্গে অন্যত্র সরিয়ে নেওয়া হয়েছে।
রোডসের ডেপুটি মেয়র বলেন, শনিবার সকালে বাতাসের কারণে আগুন ছড়িয়ে পড়ে এবং পর্যটন এলাকার দিকে চলে আসে।
মঙ্গলবার আগুন ছড়িয়ে পড়ার পর মূলত এটি বনাঞ্চলেই সীমাবদ্ধ ছিল। শনিবার স্লোভাকিয়া থেকে দমকল কর্মীরা এসে উদ্ধার তৎপরতা শুরু করেন।
গ্রিস সাপ্তাহিক ছুটির দিন থেকেই মারাত্মক দাবদাহের মধ্যে ছিল। আবহাওয়াবিদরা সতর্ক করে বলেন, তাপমাত্রা ৪৫ ডিগ্রি সেলসিয়াস ছাড়াতে পারে। আর সেক্ষেত্রে দেশটির ৫০ বছরের গরমের সর্বোচ্চ তাপমাত্রার রেকর্ড হতে পারে।
কর্মকর্তারা বলছেন, দেশজুড়ে দাবানল নিয়ন্ত্রণে দমকল কর্মীরা তাদের লড়াই চালিয়ে যাচ্ছেন। খুবই ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে এমন এলাকার মধ্যে এথেন্সের পশ্চিমাঞ্চলও আছে।
দাবদাহ বাড়তে থাকায় কর্তৃপক্ষ নতুন করে দাবানলের সতর্কবার্তা জারি করেছে। লোকজনকে ঘরে থাকার পরামর্শ দেওয়া হয়েছে।