সিলেট পাসপোর্ট অফিসে এসেছে পরিবর্তন, নেই দালালদের দৌরাত্ম্য
সিলেট পাসপোর্ট অফিসে এসেছে পরিবর্তন, বেড়েছে সেবার মান। নেই আগের মতো দালালদের দৌরাত্ম্য। বিড়ম্বনাও অনেকটা কমে এসেছে। পূর্বের সেই জনবল নিয়ে কর্মকর্তা এবং কর্মচারীরা দিয়ে যাচ্ছেন আন্তরিক সেবা। করিডোরে আবেদনকারীদের বসার জন্য প্রচুর চেয়ার রাখা হয়েছে , এছাড়া ফ্যান লাগানো হয়েছে।
সোমবার (২৪ জুলাই) সরজমিনে গিয়ে দেখা যায় সিলেট বিভাগীয় পাসপোর্ট অফিসের এই পরিবর্তন।
দৈনিকসিলেটডটকমের কথা হয় বেশ কয়েকজন আবেদনকারীর সাথে, তারা সকলেই বর্তমান উপ-পরিচালক মহের উদ্দিন সেখ এর প্রশংসা করেন। গোলাপগঞ্জ থেকে আগত তানভীর রেজা চৌধুরী (২৮) বলেন, পাসপোর্ট অফিসে শৃঙ্খলা ফিরে এসেছে, সেবার মান বেড়েছে। বর্তমান উপ-পরিচালক খুবই আন্তরিক। তিনি দালালদের দৌরাত্ম্য কমিয়ে এনেছেন।
নগরীর মজুমদারী থেকে আগত লায়লা আক্তার পান্না নামের এক গৃহবধু বলেন, মানুষের চাপ বেশি থাকায় সময় লাগছে। তবে ভাল লাগছে এই কারণে, এখন আর রোঁদে দাঁড়াতে হয় না। তিনি আরো বলেন, একটা সময় ছিলো যখন দালাল না ধরে নিজে পাসপোর্টের জন্য আবেদন করলে ‘ঘাটে ঘাটে’ হয়রানির শিকার হতে হত।
২০২২ সালের শেষের দিকে সিলেটে বিভাগীয় পাসপোর্ট অফিসে চরম বিশৃঙ্খলা দেখা দেয়।
প্রতিদিন গড়ে ৮৫০ জন পাসপোর্টের জন্য আবেদন করতেন। এর ৮৫ শতাংশ আবেদনকারীকে দালালের শরণাপন্ন হতে হত। আর এতে নাকি প্রতিদিন গড়ে ১৮ লাখ টাকার অবৈধ লেনদেন হত।
পাসপোর্ট অফিসের এই দুর্নীতি এবং অনিয়ম নিয়ে প্রতি দিন অনলাইন নিউজপোর্টাল এবং টিভি মিডিয়ায় প্রতিবেদন প্রকাশ হতে থাকে।
বিষয়টি সিলেটর দায়িত্বশীল মন্ত্রী পররাষ্ট্রমন্ত্রী ড. এ কে আব্দুল মোমেন এমপি এবং ইমিগ্রেশন ও পাসপোর্ট অধিদপ্তরের কর্মকর্তাদের দৃষ্টি আর্কষণ করে।
সিলেটে ছুটে আসেন ইমিগ্রেশন ও পাসপোর্ট অধিদপ্তরের অতিরিক্ত মহাপরিচালক উম্মে সালমা তানজিয়া। তিনি ১০ নভেম্বর গণমাধ্যম, প্রশাসনের কর্মকর্তা এবং রাজনীতিবিদদের নিয়ে জেলা প্রশাসকের মিলনায়তনে করেন মতবিনিময় সভা।
এসময় তিনি বলেন, দেশের মানুষের কাছে দ্রুত সেবা পৌঁছে দেবার জন্য মাননীয় প্রধানমন্ত্রী কাজ করে যাচ্ছেন। তিনি ডিজিটাল বাংলাদেশ করেছেন এবং ভিশন শব্দের সাথে আমাদের পরিচয় করিয়ে দিয়েছেন। বাংলাদেশকে এগিয়ে নেবার একটা ভিশন নিয়ে আমরা কাজ করছি।
পাসপোর্ট প্রাপ্তিতে নানা বিড়ম্বনার দুর করতে এবং সিলেটে অঞ্চলে পাসপোর্টের চাহিদা বিবেচনায় নিয়ে সিলেটে আরেকটি পাসপোর্ট অফিস এবং পাসপোর্ট সেবার জন্য একটি কল সেন্টারও করার কথা তিনি জানান। তাঁর ঘোষণার পর প্রায় ৮ মাস অতিবাহিত হতে চলেছে অথচ এব্যাপারে কোন অগ্রগতির খবর পাওয়া যাচ্ছে না।
সিলেটে বিভাগীয় পাসপোর্ট অফিসের চাপ কমাতে এবং আবেদনকারীদের ভোগান্তি কমাতে সিলেটে আরেকটি পাসপোর্ট অফিস করা জরুরী বলে অভিজ্ঞ মহল মনে করছেন।