সুদের টাকার জন্য বাড়ি দখল, ফিরিয়ে দিলেন ওসি
সুনামগঞ্জের জগন্নাথপুরে সুদের টাকার জন্য দখলকৃত বাড়িটি উদ্ধার করে দিয়েছেন থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মিজানুর রহমান। গতকাল বুধবার দুপুরে দখলকৃত বাড়িটি উদ্ধার করে ভুক্তভোগী পরিবারের কাছে হস্তান্তর করা হয়।
এরআগে গত ২৪ জুলাই জগন্নাথপুর থানা উপজেলার কলকলিয়া ইউনিয়নের ঘুঙ্গিয়ারগাঁও গ্রামের মৃত নুরুল ইসলামের ছেলে সেলিম মিয়া সুদের টাকার জন্য বসত বাড়ি দখলের অভিযোগ এনে পার্শ্ববর্তী ছাতক উপজেলার ভাতগাঁও ইউনিয়নের গোয়াসপুর গ্রামের রফিক মিয়ার বিরুদ্ধে লিখিত অভিযোগ করেন।
অভিযোগ ও স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে, ২০২১ সালে ঘুঙ্গিয়ারগাঁও গ্রামের নুরুল ইসলাম ছেলেকে বিদেশ পাঠানো জন্য গোয়াসপুর গ্রামের রফিক মিয়ার কাছ থেকে সুদে এক লাখ টাকা আনেন। পরে ধারাবাহিকভাবে নুরুল ইসলাম ওই টাকার সুদ বাবদ ৩ লাখ ৮০ হাজার টাকা রফিক মিয়াকে দেন। একপর্যায়ে গত ১১ মাস আগে সুদের লাভ আর দিতে না পারায় রফিক মিয়া তার দ্বিতীয় স্ত্রীর পরিবার নিয়ে নুরুল ইসলামের বাড়ি দখল করেন। এরপর থেকে রফিক মিয়া ওই বাড়িতে বসবাস আসছিল। এদিকে, গত ৪ জানুয়ারি নুরুল ইসলাম মারা যান।
নুরুল ইসলামের ছেলে সেলিম মিয়া বলেন, বাবা মারার যাওয়ার পর সুদের ৬ লাখ টাকা পাওনা দাবী করেন রফিক মিয়া। সেই সাথে আমার মাকে বাড়ি থেকে বের করে দেন। এরপর থেকে মাকে নিয়ে অনেক কষ্টে আছি। নিরুপায় হয়ে থানায় অভিযোগ করি। গতকাল ওসি স্যার আমাদের বাড়িটি উদ্ধার করেদিয়েছেন।
অভিযুক্ত রফিক মিয়ার স্ত্রী বিলকিছ বেগম বলেন, পাঁচ বছরের জন্য নুরুল ইসলাম আমাদের এই বাড়িতে থাকতে দিয়েছেন। ছেলেকে বিদেশ পাঠানোর জন্য স্ট্যাম্পের মাধ্যমে আমার স্বামী কাছ থেকে তাঁরা টাকা নিয়েছে। তবে কত টাকা দিয়েছিলেন সেই প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, স্ট্যাম্পে লেখা আছে!
কলকলিয়া ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান (ভারপ্রাপ্ত) আব্দুল হাসিম বলেন, রফিক মিয়া এলাকায় একজন সুদখোর ব্যক্তি হিসেবে পরিচিত। নুরুল ইসলাম মারা যাওয়ার পর তাঁর স্ত্রী-সন্তানকে বাড়ি থেকে বের করে দেন রফিক মিয়া। একাধিক বার তাকে সালিশ বৈঠকে বসার কথা বললেও সে সামনে আসেনি।
এ ব্যাপারে জগন্নাথপুর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মিজানুর রহমান বলেন, অভিযোগ পেয়ে বাড়িটি দখলমুক্ত করে সেলিম মিয়াকে বুঝিয়ে দেওয়া হয়েছে। এ ঘটনায় দু’টি স্ট্যাম্প পাওয়া গেছে। একটিতে ৫ শতাংশ সুদের কথাটি উল্লেখ রয়েছে। পুলিশ বিষয়টি তদন্ত করছে।
ওসি মিজানুর বলেন, সুদ হোক কিংবা পাওনা টাকাই হোক। এরজন্য কেউ কারো বাড়ি দখল করতে পারে না। এ ধরনের আর কোনো অভিযোগ পেলে কঠোর আইনি ব্যবস্থা নেওয়া হবে।