পা হারানো কৃষক সামছুদ্দিন পেলেন খাদ্য সামগ্রী ও হুইল চেয়ার
হবিগঞ্জের চুনারুঘাট উপজেলার শানখলা ইউনিয়নের লালচান্দ চা-বাগানে দুই ‘পা’ হারানো সামছুদ্দিনকে হুইল চেয়ার ও খাদ্য সামগ্রী উপহার দিলেন সাবেক জাতীয় দলের ক্রিকেট খেলোয়াড় নাজমুল হোসেনের সহধর্মিণী ও হবিগঞ্জ জেলা মহিলা আওয়ামীলীগের সাংগঠনিক সম্পাদক মাহমুদা জাহান এনি লস্কর।
এসময় সঙ্গে ছিলেন সামাজিক সংগঠন আর্থপেডিয়া গ্লোবালের প্রতিষ্ঠাতা সভাপতি ও জেলা যুবলীগের শিল্প ও বানিজ্য বিষয়ক সম্পাদক আলহাজ্ব জিল্লুল কাদির লস্কর রিমনের সহধর্মিণী সৈয়দা নাজনীন আহমেদ সিলভী, উপজেলা পরিষদের সিএ ওয়াহিদুল ইসলাম সুমন, জুনায়েদ আহমদ, সমাজ সেবক মো: সুমন মিয়া, ছাত্রলীগ নেতা মো: কাউছার আহমেদ, শাহজাহান মিয়া । সোমবার (২১ আগস্ট ) বিকেল সাড়ে ৫ টায় লালচাঁন নিজ বাড়িতে গিয়ে সামছুুদ্দিনকে হুইল চেয়ারটি বুঝিয়ে দিয়েছেন তিনি। সামছুদ্দিন উপজেলার শানখলা ইউনিয়নের লালচান্দ চা-বাগানের তাজপুর এলাকার হতদরিদ্র বাদশা মিয়ার ছেলে।
স্থানীয়রা জানান, হতদরিদ্র সামছুদ্দিন কৃষি জমিতে কাজ করে জীবিকা নির্বাহ করতেন । গত দুই বছর পূর্বে কৃষি জমিতে কাজ করতে গিয়ে পায়ের আঙ্গুলে ব্যথা পান । সেই থেকে পায়ের আঙ্গুলে ইনফেকশন হয়। পরে সে গুরুতর আহত হলে স্থানীয়রা উদ্ধার করে হাসপাতালে নিয়ে গেলে ডাক্তার তাকে উন্নত চিকিৎসার জন্য ঢাকা (পঙ্গু) হাসপাতালে রেফার্ড করে। সামছুদ্দিন পায়ের অবস্থা গুরুতর হওয়ার পরবর্তীতে সিলেট ওসমানী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে চিকিৎসকরা তার পা কেটে ফেলে।
এরপর থেকেই তার পঙ্গুত্ব জীবন শুরু হয়। পরিবারের সামর্থ্য না থাকায় একটি হুইল চেয়ার কিনতে পারছিলেন না। গত শনিবার শেখ ফয়সল নামে এক যুবক সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম সামছুদ্দিনের অবস্থা তুলে ধরে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেসবুকে পোস্ট দেন। পোস্টের ১ ঘন্টার মধ্যেই বিষয়টি নজরে আসে চুনারুঘাট উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান আলহাজ্ব আব্দুল কাদির লস্করের কণ্যা নারীনেত্রী মাহমুদা জাহান এনি লস্করের। বিষয়টি অবগত হওয়ার পর তার পিতা চুনারুঘাট উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান আলহাজ্ব আব্দুল কাদির লস্করের সাথে কথা বলে দ্রুত সময়ের মধ্যে একটি হুইল চেয়ারের ব্যবস্থা করেন এবং নিজ অর্থায়নে খাদ্য সামগ্রী পৌঁছে দেন । খাদ্য সামগ্রীর মধ্যে রয়েছে চাউল, তৈল, পিয়াজ, ডাউল, আলু, লবন, চিনি । সামছুদ্দিন বলেন, পা হারানোর পর আমি আর বাইরে বের হতে পারছিলাম না। আমার পরিবারের পক্ষে আমার ব্যয়ভার বহন করা কষ্টসাধ্য হয়ে পড়েছে। উপজেলা চেয়ারম্যান সাহেবের মেয়ে আমাকে একটি হুইল চেয়ার ও খাদ্য সামগ্রী উপহার দিয়েছেন। এবার চেয়ারে বসে বাইরে বের হয়ে সবার সাথে দেখা করতে পেরে অনেক ভালো লাগছে।
এসময় তিনি সংশ্লিষ্ট সকলকে ধন্যবাদ জানিয়ে দীর্ঘায়ু কামনা করেন।এর আগে মাহমুদা জাহান এনি লস্করকে চাবাগনের নারীরা ফুলেল মালা পড়িয়ে বরণ করে নেন। পরে তিনি বাগানের বিভিন্ন অসহায় নারীদের সাথে কূশল বিনিময় করেন এবং তাদের পাশে থেকে সহযোগীতার আশ্বাস দেন। চাবাগানের নারীরা আগামীতে মহিলা সংরক্ষিত আসনের এমপি প্রার্থী হিসেবে দাবী করে স্লোগান দেন। মাহমুদা জাহান এনি লস্কর বলেন, কৃষক সামছুদ্দিন দু’টি পা হারিয়ে হুইল চেয়ারের জন্য ঘরের বাহিরে বের হতে পারেননি। বিষয়টি সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে দেখে আমার বাবার সাথে কথা বলে হুইল চেয়ারের ব্যবস্থ্যা করি । অবশেষে সামছুদ্দিনের সেই চাওয়াটি আজ পূরণ করতে পেরে ভালো লাগছে।