শাবিতে এম হাবিবুর রহমানের প্রয়াণ দিবস উপলক্ষে স্মরণসভা

শাবি প্রতিনিধি
শাহজালাল বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের সমাজকর্ম বিভাগের উদ্যোগে সমাজকর্ম বিভাগের সাবেক বিভাগীয় প্রধান ও শাবির সাবেক উপাচার্য, লেখক, গবেষক, ও সমাজ বিজ্ঞানী অধ্যাপক এম হাবিবুর রহমানের ১৭তম প্রয়াণ দিবস উপলক্ষে স্মরণ সভা অনুষ্ঠিত হয়েছে। মঙ্গলবার ( ২২ আগস্ট) সকালে বিশ্ববিদ্যালয়ের মিনি অডিটরিয়ামে এ স্মরণ সভার আয়োজন করা হয়।
বিভাগীয় প্রধান অধ্যাপক মিজানুর রহমানের সভাপতিত্বে বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন উপ- উপাচার্য অধ্যাপক ড. কবির হোসেন, কোষাধ্যক্ষ অধ্যাপক ড. আমেনা পারভিন ও এম হাবিবুর রহমানের জেষ্ঠ্য পুত্র অতিরিক্ত সচিব (পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়) এনামুল হাবিব।
বিশেষ অতিথির বক্তব্যে কোষাধ্যক্ষ আমিনা পারভীন বলেন, আমি রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ে পড়াকালীন স্যারের সরাসরি শিক্ষার্থী ছিলাম। পরবর্তীতে সহকর্মী হয়েছি। তবে আমি কেন জানি সহকর্মী ভাবতে পারিনি। আমি সবসময় মনে করতাম আমি স্যারের আজীবন শিক্ষার্থী। যারা প্রথম থেকে জয়েন করেছে তারা জানে এম হাবিবুর রহমান স্যার কেমন ছিলেন। তিনি প্রতিটি কাজে আমাকে সাহায্য করেছেন। একজন শিক্ষক কেমন হতে হয়, কিভাবে শিক্ষকতা করতে হয়, কিভাবে ক্লাস নিতে হয়, কিভাবে মূল্যায়ন করতে হয় সবকিছু তিনি ভালোভাবে জানতেন। তিনি আপাদমস্তক একজন শিক্ষক ছিলেন। এম হাবিবুর রহমানের জীবনীর উপর প্রবন্ধ উপস্থাপন অধ্যাপক ড. তাহমিনা ইসলাম। প্রবন্ধ উপস্থাপনের এক পর্যায়ে তিনি বলেন, অত্যন্ত মুক্ত মনের মানুষ ছিলেন অধ্যাপক এম. হাবিবুর রহমান। নীতিতে অটল কিন্তু আচরণে অমায়িক। সবাইকে আপন করে নিতেন অনায়াসে, কিন্তু ছোটখাটো এই মানুষটি অত মানবিক শক্তি ধারণ করতেন। অধ্যাপক হিসেবে ছিলেন সফল।
বিশ্ববিদ্যালয় নানা পদ অলংকৃত করে সর্বোচ্চ পদ উপাচার্যের আসন আসীন হন। অধ্যাপক এম হাবিবুর রহমান স্মরণে শিক্ষকদের পক্ষ থেকে স্মৃতিচারণ বক্তব্য দেন অধ্যাপক ড. আ ক ম মাহবুবুজ্জামান, অধ্যাপক ড. তুলসী কুমার দাস, অধ্যাপক ড. ফয়সাল আহমেদ, অধ্যাপক ড. ইসমাইল হোসাইন, অধ্যাপক শফিকুর রহমান চৌধুরীসহ আরো অনেকে। ছাত্রছাত্রীদের পক্ষ থেকে বক্তব্য দেন হিমেল, কথা, মরিয়ম, অর্পা ও আলভী। এসময় সমাজকর্ম বিভাগের কৃতি শিক্ষার্থীদের মাঝে এম হাবিবুর রহমান স্মৃতি ট্রাস্ট কর্তৃক শিক্ষা বৃত্তি প্রদান করেন তার জেষ্ঠ্য পুত্র এনামুল হাবিব। উল্লেখ্য, এম হাবিবুর রহমান রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ে ১৯৬৪ সালে প্রভাষক পদে যোগদান করেন। ১৯৭৭ থেকে ১৯৮১ পর্যন্ত বাংলাদেশ সরকারের পরিকল্পনা কমিশনের উপ-পরিচালক পদে দায়িত্ব পালন করেছেন। ১৯৮৯ সালে রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক হিসেবে পদোন্নতি লাভ করেন। এরপর ১৯৯২ সালে শাহজালাল বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ে যোগদান করে প্রথমে রেজিস্ট্রার ও সমাজকর্ম বিভাগের বিভাগীয় প্রধান ও সামাজিক বিজ্ঞান অনুষদের ডিন ও পরবর্তীতে উপ-উপচার্য পদে পদোন্নতি লাভ করে।
এরপর ১৯৯৭ সালের ২০ জুলাই বিশ্ববিদ্যালয়ের তৃতীয় উপচার্য হিসেবে যোগদান করেন। ২০০১ সালের ১৯ জুলাই ভাইস চ্যান্সেলরের দায়িত্ব শেষ করে একই বিশ্ববিদ্যালয়ে আবারো অধ্যাপনা শুরু করেন। এরপর ২০০৩ সালে সিলেটের মেট্রোপলিটন ইউনিভার্সিটির প্রভেসর ডিন ও ২০০৫ সালে উপাচার্য পদে দায়িত্ব পালন করেন। মৃত্যুর পূর্ব পর্যন্ত এম হাবিবুর রহমান উপাচার্য হিসেবেই দায়িত্ব পালন করেন।