ভরা মৌসুমেও হাওরে মাছ নেই, বিপাকে স্বল্প আয়ের মানুষ

দৈনিকসিলেট ডেস্ক :
মাছের জেলা সুনামগঞ্জে ভরা মৌসুমেও মাছের দেখা মিলছে না। হাওরের নদ-নদীতে এ সময় প্রচুর মাছ পাওয়ার কথা থাকলেও মাছের আকাল চলছে। বাজারে সামান্য চাষের মাছ দেখা দিলেও দাম আকাশচুম্বি। ফলে স্বাভাবিক সরবরাহ না থাকায় বিপাকে পড়েছেন স্বল্প আয়ের মানুষ।
চলমান বর্ষাকালের নানা পদের ছোট মাছ নেই বললেই চলে। নদী-হাওর চষেও জেলেরা মাছ ধরতে পারছেন না। বাধ্য হয়ে অনেকেই পরিবর্তন করছেন বাপ-দাদার পেশা।
সুনামগঞ্জের দোয়ারাবাজার উপজেলার কাংলার হাওর ছিলো এক সময় সুস্বাদু মাছের সরোবর। কিন্তু যেন সেটি এখন রূপকথার গল্প। নাইন্দার হাওর, মরা সুরমা, চেলা, মরা চেলা, চিলাই, চলতি, কালিউরি, খাসিয়ামারা ও ধুমখালীসহ উপজেলার সবকটি নদী-নালা, হাওর, খাল-বিলের মাছ এখন অতীত স্মৃতি।
উপজেলার বড়বন্দ, মাইছখলা, তেঙাংগ, মাছিমপুর, ভোজনা, শরীফপুর, সোনাপুর, নুরপুরসহ অধিকাংশ গ্রামের মানুষ জীবিকা নির্বাহ করে আসছে মাছ ধরে। এসব এলাকার জেলেরা এখন দুর্দিনে পড়েছেন।
বড়বন্দ গ্রামের খেলুমিয়া বলেন, আমরা হাওর অঞ্চলের মানুষ বাপ-দাদার আমল থেকে মাছ ধরে পরিবারে আর্থিক চাহিদা পূরণ করতাম, হাওরে মাছ সংকট থাকায় আমি এখন পেশা পাল্টিয়ে অটোরিকশা চালাই।
উপজেলা মৎস্য কর্মকর্তা তুসার কান্দি বর্মন জানান, নানা কারণেই দেশি প্রজাতির মাছ হারিয়ে যাচ্ছে। বৈশাখ থেকে শ্রাবণ মাস পর্যন্ত চার মাস দেশীয় প্রজাতির ছোটমাছ না ধরে প্রজনন ক্ষেত্র সংরক্ষণের কথা থাকলে মানছে কেউ। ভেলজাল, চায়না রিং জাল দিয়ে পোনামাছ ধরার ফলে কমছে মাছের প্রজন্ম। মোবাইল কোর্ট পরিচালনা করা হবে ভেরজাল ও চায়না রিং জালের ওপর।
তিনি আরও বলেন, এ ছাড়া প্রাকৃতিক বিপর্যয়ের সঙ্গে মানুষের সচেতনতার অভাবও রয়েছে। হারিয়ে যাওয়া দেশি মাছ রক্ষায় এখন ব্যাপক গবেষণা হচ্ছে। ইতিমধ্যে পাবদা, টেংরা, বোয়াল, আইড়, পাঙ্গাস ও কৈ মাছের চাষ হচ্ছে।