ভোটারদের আগ্রহ কম! সমালোচনায় যাতায়াত সড়ক
সিলেট-৬, বিয়ানীবাজার-গোলাপগঞ্জ প্রচারে ব্যাস্ত প্রার্থীরা

মিসবাহ উদ্দিন, বিয়ানীবাজার :
সবকিছু টিকটাক থাকলে আগামী জানুয়ারী অনুষ্ঠিত হবে আসন্ন দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন। তবে সমালোচনায় ব্যপকতা পাচ্ছে বিয়ানীবাজারের প্রধান সড়ক যা একেবারে চলার অনুপোযোগী । সড়ক দিয়ে চলাচল করা হয়েগেছে দায় এ নিয়ে নেই কারো মাথা ব্যথ্যা সড়ক উন্নয়ন এখন নির্বাচনের আগে গুরুত্বপূর্ণ হয়েগেছে মনে করেন সাধারন জনগণ। তবে নির্বাচন কে ঘিরে ক্ষমতাসীন দলের সম্ভাব্য প্রার্থীদের ব্যাপক প্রস্তুতি চলছে। নিজ নিজ উদ্যোগে চলছে মাঠ সাজানোর কাজ। ব্যানার, ফেষ্টুন লাগিয়ে প্রার্থীরা জানান দিচ্ছেন নির্বাচনী আগমনের। গ্রামে-গ্রামে সরকার দলীয় সম্ভাব্য প্রার্থীরা ছুটছেন সামাজিক-রাজনৈতিক কর্মসূচিতে। নিরব ভুমিকায় রাজনৈতিক কর্মসূচি নির্বাচনী কাজ করছে নিবন্ধন বাতিলকৃত দল জামায়াতে ইসলামী ও তাদের ছাত্র সংগঠন বাংলাদেশ ইসলামী ছাত্রশিবির তারা কর্মীদের সাথে ঘনিষ্ট যোগাযোগ রাখছেন, দিচ্ছেন আন্দোলনী বার্তা। ঘরোয়া সামাজিক কর্মকান্ডেও সক্রিয়ভাবে অংশ নিচ্ছেন বিএনপি থেকে নির্বাচন করতে আগ্রহী প্রার্থীরাও নির্বাচনী এই আবহে এখনো প্রকাশ্যে গা ভাসাননি বিরোধী রাজনৈতিক দলের সম্ভাব্য প্রার্থীরা।
সামনে নির্বাচন সেই আমেজ নিয়ে কথা হয় বিয়ানীবাজার প্রেসক্লাবের সাধারণ সম্পাদক মিলাদ মুহাম্মদ জয়নুল ইসলাম এর সাথে তিনি বলেন ২০১৮ সালের সংসদ নির্বাচনে ভোট দিয়েছেন তিনি। কিš‘ ২০১৪ সালে বিনা প্রতিদ্বন্ধিতায় এই আসন থেকে এমপি নির্বাচিত হওয়ায় ভোট দেয়া হয়নি তার। তিনি বলেন, আমার এলাকায় ২০১৪ সালে ভোট হয়নি। নির্বাচন কমিশনের ব্যবস্থাপনার প্রতি মানুষের আস্থা কমে এসেছে। ভোট নিয়ে সাধারণ মানুষ আগ্রহ হারিয়ে ফেলছে। একজন নারী ভোটার সুহানা আক্তার সুমি বলেন, ২০১৪ সালে ভোট দিতে পারিনি। ভোট না দিয়েই এমপি পেয়েছি। সব নির্বাচনেই আমার নিজের ভোটটি শান্তিপূর্ণ পরিবেশে দিতে চাই। কিš‘ এখন ভোট দেওয়ার পরিবেশ নেই, শক্ত কোনো প্রার্থীও থাকে না। অবশ্য বিয়ানীবাজার উপজেলার সাধারণ ভোটাররা বলছেন, যোগ্য প্রার্থী নির্বাচনে ভোটার উপস্থিতি ও ভোটাধিকার প্রয়োগের পরিবেশ নিশ্চিত করতে হবে। রাজনৈতিক সহিংসতা, নির্বাচন বর্জনের প্রবণতা আর বিনা প্রতিদ্বন্দ্বিতায় জয়ী জনপ্রতিনিধিতে বেশির ভাগ ভোটার খুশি নন।
নির্বাচন কে ঘিরে কথা হয় স্থানীয় সাংবাদিক আবুল হাসান তিনি বলেন , গত এক দশক ধরে ভোট দেওয়ার ব্যাপারে মানুষের মধ্যে অনীহা লক্ষ্য করা যাচ্ছে। নির্বাচনী ব্যবস্থা নিয়ে মানুষের মাঝে চরম আস্থার সংকট তৈরি হয়েগেছে। উপজেলা আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক ও ভাইস চেয়ারম্যান জামাল হোসেন বলেন, অতীতে বিএনপি-জামায়াতের রাজনৈতিক সন্ত্রাসের কারণে সাধারণ মানুষের মধ্যে একটা ভীতি কাজ করেছে। এ কারণে কোনো কোনো জায়গায় আশানুরূপ ভোট পড়েনি। সহিংস ঘটনাগুলোতে ভোটাররা ভয়ে কেন্দ্র্রে যাননি।
নির্বাচন ঘিরে রাজনৈতিক সহিষ্ণুতার অভাব, পাল্টাপাল্টি দোষারোপের প্রবণতা, রাজনীতিতে ব্যবসানীতি, সহিংসতা, ভোট বর্জনরীতি, লেভেল প্লেয়িং ফিল্ড নিশ্চিত করতে ইসির দুর্বলতা এবং বড় দুই দল ঐক্যমতে পৌঁছাতে না পারায় ভোটারদের আস্থায় চিড় ধরেছে। প্রতিদ্বন্দ্বিতাপূর্ণ নির্বাচনের পরিবেশ নিশ্চিত না হওয়ায় কমছে ভোট পড়ার হার, সঙ্গে নির্বাচন নিয়ে বাড়ছে অনীহা। গত এক দশক ধরে বিভিন্ন নির্বাচনে ভোট কম পড়ার নেপথ্যে এমন একাধিক কারণ রয়েছে বলে মনে করেন সুশাসনের জন্য নাগরিক (সুজন) বিয়ানীবাজার শাখার সভাপতি এডভোকেট মো: আমান উদ্দিন।
সিলেট জেলা আওয়ামীলীগের সদস্য মো: জাকির হোসেন বলেন, কোনো দল যদি নির্বাচন বর্জন করে তাদের কর্মী-সমর্থকরা তো ভোট দিতে যায় না, সেটাও ভোট কম পড়ার একটি কারণ হতে পারে। তবে আগের যে কোনো সময়ের চেয়ে এখন পরিস্থিতির উন্নতি হয়েছে। এখন মানুষ কেন্দ্রমুখী বলে দাবি তার। বিয়ানীবাজার পৌরসভার সর্বশেষ নির্বাচনেও বিপুল সংখ্যক ভোটার বৈরী আবহাওয়া উপেক্ষা করে ভোট দিয়ে তাদের জনপ্রতিনিধি নির্বাচন করেছিল বলে উল্লেখ করেন তিনি।
উপজেলা বিএনপির সাধারণ সম্পাদক সরওয়ার হোসেন বলেন, ক্ষমতাসীন দল জনগণের ভোটাধিকার নিয়ে খেলছে। যদি জনগণের ভোটের অধিকার না থাকে, ভোট দেওয়ার নিশ্চয়তা না থাকে সেই নির্বাচনে বিএনপি কেন অংশ নেবে? ভোটবিহীন, ভোটারবিহীন গণতন্ত্রে আওয়ামী লীগ বিশ্বাস করে। এজন্য তারা নির্দলীয় নিরপেক্ষ সরকারের অধীনে নির্বাচন দিতে ভয় পায়। জনগণের দাবি মেনে নির্বাচন দিলেই দেশে ভোট উৎসব হবে। তিনি আরও বলেন, ভোটাররা যদি তাদের পছন্দের প্রার্থী বা দলকে ভোটই দিতে না পারে, তাহলে কি নির্বাচন বলা যায়? যেখানে ভোটারের ভোট দেওয়ার সুযোগ নেই, সেখানে বিএনপি থাকা না থাকা কোনো বিষয় নয়।
তিনি বলেন, নিরপেক্ষতার বড় কোনো নজির না থাকায় নির্বাচন কমিশন, সিভিল প্রশাসন ও আইন-শৃঙ্খলা বাহিনীকে নিয়ে এক ধরনের বিতর্ক রয়েছে। আর অল্প সময়ের মধ্যে বর্তমান কমিশন আস্থা ও নিরপেক্ষতার পরিচয় দিতে পারবে না।
সরেজমিন কথা বলে জানা যায়, ভোটের মাঠে এখনো রাজপথের বিরোধী দল নামেনি। তারা আন্দোলনে আছে। ফলে বিরোধীমতের রাজনৈতিক নেতাকর্মীরা ভোটের মাঠে কোনরুপ প্রচারণায়ও নেই। বিরোধী দলের প্রার্থী ও কর্মী-সমর্থকরা বিয়ানীবাজারের ভোটের মাঠে না থাকায় স্থানীয় ভোটারদের মধ্যে আসন্ন নির্বাচন নিয়ে তেমন আলোচনা নেই। এখনো চায়ের টেবিলে অথবা পাড়া-মহল্লার ছোট ছোট দোকানে নির্বাচনী কথাবার্তাও জমেনি। তবে ক্ষমতাসীন দলের নির্বাচনে আগ্রহী সম্ভাব্য প্রার্থীদের কাদাঁ ছোড়াছুড়ি খুব উপভোগ করছেন বিয়ানীবাজারের ভোটাররা। গত এক সপ্তাহ থেকে বিয়ানীবাজার – গোলাপগঞ্জ এর বিভিন্ন এলাকায় গিয়ে উন্নয়ন মুলক কাজের উদ্বোধনের পাশাপাশি দলীয় নেতাকর্মীদের বাড়িতে বাড়িতে গিয়ে খোঁজ নিচ্ছেন
এই এলাকার সংসদ সদস্য ও সাবেক শিক্ষামন্ত্রী নুরুল ইসলাম নাহিদ এমপি। আগামী নির্বাচনে অংশ নিতে দলীয় নেতা-কর্মীদের ঐক্যবদ্ধ করার চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছেন। এদিকে আগামী নির্বাচন করার ঘোষণা দিয়ে ইতিমধ্যে মাঠে কাজ করছেন বিয়ানীবাজার উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান ও উপজেলা আওয়ামী লীগের যুগ্ম সম্পাদক আবুল কাশেম পল্লব, কানাডা আওয়ামী লীগের প্রতিষ্ঠাতা সভাপতি ও দৈনিক শুভপ্রতিদিনের সম্পাদক ও প্রকাশক সরোওয়ার হোসেন। এদিকে সরাসরি নির্বাচনে অংশ নেয়ার কথা না বললেও প্রায় প্রতি সপ্তাহে সিলেট ৬ আসনে নেতা-কর্মীদের সঙ্গে নিয়ে বিভিন্ন এলাকায় মিটিং করছেন বিগত নির্বাচনে বিএনপি মনোনীত সংসদ সদস্য প্রার্থী ফয়সল আহমদ চৌধুরী। জাতীয় পার্টির প্রেসিডিয়াম সদস্য সেলিম উদ্দিন এই আসনে নির্বাচন করার ঘোষণা দিয়ে পাড়া-মহল্লায় গিয়ে মিটিং করছেন নিয়মিত। তবে নিরব ভূমিকায় স্থানীয় জামায়াতের নেতাকর্মীরা
তবে ক্ষমতাসীন দলের নির্বাচনে আগ্রহী সম্ভাব্য প্রার্থীদের কাদাঁ ছোড়াছুড়ি খুব উপভোগ করছেন বিয়ানীবাজারের ভোটাররা।