সিলেটে মাত্র ৬ ঘণ্টার ব্যবধানে দুর্ঘটনায় ৬ জনের প্রাণ গেল
দৈনিকসিলেট ডটকম :
সিলেটে মাত্র ৬ ঘণ্টার ব্যবধানে সড়কে গেল ছয়জনের প্রাণ। এরই মধ্যে সিলেট জেলার বিভিন্ন সড়কে মা-ছেলেসহ ৪ জন, সুনামগঞ্জ ও হবিগঞ্জে একজন করে মোট ছয়জন নিহত হয়েছেন। পুলিশ ও প্রত্যক্ষদর্শী সূত্রে এ তথ্য নিশ্চিত হওয়া গেছে।
গতকাল রোববার (১০ সেপ্টেম্বর) রাত ৮টার দিকে সিলেটের ওসমানীনগর উপজেলার তাজপুরে রাস্তা পারাপারকালে প্রাইভেটকার চাপায় মা ও ছেলের মৃত্যু হয়।
নিহতরা হলেন-দক্ষিণ সুরমা উপজেলার কামালবাজার এলাকার শুক্কুর আলীর স্ত্রী সালাম বেগম (৫২) ও তার ছেলে আব্দুল কাইয়ুম (৩২)। তারা তাজপুর বার্ড চক্ষু হাসপাতালের পাশে একটি বাসায় ভাড়া থাকতেন।
খবর পেয়ে তাজপুর ফায়ার সার্ভিসের লোকজন মা-ছেলের মরদেহ উদ্ধার করে সিলেট এম এ জি ওসমানী মেডিকেল হাসপাতালে পাঠিয়েছে।
এছাড়া রোববার রাতে সিলেট-জকিগঞ্জ সড়কের চারখাই এলাকায় ট্রাক ও সিএনজিচালিত অটোরিকশার সংঘর্ষে ফখরুল ইসলাম (৪৫) নামে ব্যক্তি নিহত হয়েছেন।
নিহত ফখরুল সিলেটের কানাইঘাট উপজেলার রাজাগঞ্জ ইউনিয়নের পারকুল বড়বাড়ির মৃত রইছ মিয়ার ছেলে। তিনি রাজাগঞ্জ ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিষয়ক সম্পাদক ছিলেন।
জানা গেছে, ফখরুল ইসলাম কানাইঘাট থেকে সিএনজি অটোরিকশাযোগে সিলেট শহরে আসছিলেন। রাত ৮টার দিকে অটোরিকশাটি সিলেট-জকিগঞ্জ সড়কের চারখাই বাজার এলাকায় আসলে বিপরীত দিক থেকে আসা একটি ট্রাকের সঙ্গে সংঘর্ষ হয়। এতে গুরুতর আহত হন ফখরুলসহ তিনজন।
আহতদের উদ্ধার করে সিলেট এম এ জি ওসমানী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নিয়ে আসার পথে ফখরুল ইসলাম মারা যান। আহত অন্য দুইজন ওসমানী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে চিকিৎসাধীন।
একই দিন বিকেল ৪টার দিকে সুনামগঞ্জের দোয়ারাবাজারের বোগলাবাজার মোল্লাপাড়া পয়েন্ট মোটরসাইকেলের ধাক্কায় নয়ন মিয়া নামে অবসরপ্রাপ্ত বিজিবি এক সদস্য মারা গেছেন। তিনি উপজেলার সুরমা ইউনিয়নের মামনপুর (মোহাম্মদপুর) গ্রামের মৃত নুরুল আমিনের ছেলে।
পুলিশ ও স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, নয়ন মিয়া স্থানীয় বোগলাবাজার থেকে বাড়ি ফেরার পথে পেছন থেকে মোটরসাইকেলের ধাক্কায় গুরুতর আহত হন। এ সময় স্থানীয়রা তাকে উদ্ধার করে প্রথমে দোয়ারাবাজার উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে পাঠান। গুরুতর অবস্থায় সেখান থেকে সিলেট এমএজি ওসমানী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নেওয়ার পথেই তিনি মারা যান। দুর্ঘটনার জন্য দায়ী মোটরসাইকেল চালক ফজলুল করিমকে (২৩) আটক করেছে পুলিশ। তিনি উপজেলার লক্ষ্মীপুর ইউনিয়নের ভাঙাপাড়া গ্রামের আব্দুস শহিদের ছেলে।
দোয়ারাবাজার থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) বদরুল হাসান ঘটনার সত্যতা নিশ্চিত করেছেন।
একইদিন বিকেল ৫টার দিকে সিলেট মহানগরের এয়ারপোর্ট থানাধীন ফাজিল চিশত এলাকায় সড়কের পাশ থেকে এক ব্যক্তির মরদেহ উদ্ধার করেছে পুলিশ। নিহত উত্তম সিলেটের জালালবাদ থানাধীন করেরপাড়া এলাকার বাসিন্দা ছিলেন।
স্থানীয়দের কাছ থেকে খবর পেয়ে এয়ারপোর্ট থানাপুলিশ ঘটনাস্থলে পৌঁছে মরদেহ উদ্ধার করে ময়নাতদন্তের জন্য সিলেট এম এ জি ওসমানী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নিয়ে যায়।
এয়ারপোর্ট থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মইন উদ্দিন শিপন মরদেহ উদ্ধারের বিষয়টি নিশ্চিত করে বলেন, মৃত্যুর বিষয়ে নিশ্চিত হতে মরদেহ ময়নাতদন্তের জন্য ওসমানী মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল মর্গে পাঠানো হয়েছে।
এছাড়া রোববার রাত ১০টার দিকে হবিগঞ্জের ইকরাম আঞ্চলিক সড়কে যাত্রীবাহি টমটম উল্টে চান মিয়া (৫৫) নামে এক যাত্রী নিহত হয়েছেন। এ ঘটনায় আহত হয়েছেন ৪ জন। আহতদের উদ্ধার করে হবিগঞ্জ সদর আধুনিক হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে।
নিহত চান মিয়া জেলার বানিয়াচং উপজেলার উত্তর সাঙ্গর গ্রামের সুরুজ মিয়ার ছেলে। হবিগঞ্জ সদর মডেল থানার পরিদর্শক (তদন্ত) বদিউজ্জামান বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন।