মাদকাসক্তি নিরাময় কেন্দ্র থেকে যুবকের মরদেহ উদ্ধার

দৈনিকসিলেট প্রতিবেদক :
সিলেট মহানগরীর পাঠানটুলার পল্লবী মাদকাসক্তি নিরাময় কেন্দ্র থেকে এক যুবকের মরদেহ উদ্ধার করেছে পুলিশ। রোববার দিবাগত রাত ৩টার দিকে মরদেহটি উদ্ধার করা হয়।
নিহত আদিল আহমদ (২৯) ওসমানীনগর উপজেলার মান্দারুকা গ্রামের আব্দুল মসব্বিরের ছেলে। তিনি পল্লবী মাদকাসক্তি নিরাময় কেন্দ্রে ভর্তি ছিলেন। তার মৃত্যু নিয়ে সচেতন মহলে আলোচনা-সমালোচনা চলছে।
পুলিশ জানায়, ওই নিরাময় কেন্দ্র কর্তৃপক্ষের দেওয়া খবরের ভিত্তিতে জালালাবাদ থানাপুলিশ ঝুলন্ত লাশ উদ্ধার করে। মাদকাসক্তের পাশাপাশি তিনি কিছুটা মানসিক ভারসাম্যহীন ছিলেন।
জালালাবাদ থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) সাইফুল আলম বলেন, প্রাথমিকভাবে ধারনা করা হচ্ছে- এটি আত্মহত্যা। লাশ ময়না তদন্তের জন্য পাঠানো হয়েছে।
সচেতন মহল মনে করছেন, রিহ্যাব সেন্টার বা মাদকাসক্ত নিরাময় কেন্দ্রে গলায় ফাঁস দিয়ে আত্মহত্যা করার মতো সুযোগ থাকেনা। আর অতোটা সুযোগ যদি কেনো সেন্টারে থাকে, তাহলে বুঝতে হবে ওই সেন্টার কর্তৃপক্ষ ভর্তিকৃতদের নিরাপত্তার ব্যাপারে চরম উদাসীন। তারা যথাযতভাবে নিজেদের দায়িত্ব পালন করেন নি।
রিহ্যাব সেন্টারে ৪ মাসের বেশি ভর্তি ছিলেন এমন একাধিক মাদকাসক্তের সাথে আলাপকালে জানা গেছে, মাদকাসক্তি নিরাময়ের নামে সিলেটের প্রায় সবগুলো রিহ্যাব সেন্টারে ভর্তিকৃত মাদকাসক্তদের মারাত্মক শারীরিক ও মানসিক নির্যাতিন করা হয়। মাদকাসক্তি নিরাময়ের কোনো ওষুধ এখনো আবিষ্কার হয়নি।
রিহ্যাব সেন্টারগুলোতে ওষুধ এবং বড়বড় চিকিৎসকদের সাইনবোর্ড ঝুলিয়ে মাদকাসক্তদের অভিভাবকদের মিথ্যা আশ্বাস দিয়ে সেখানে মোটা অংকের টাকার বিনিময়ে ভর্তি করা হয়।
তারপর শুরু হয় অসহনীয় শারীরিক ও মানসিক নির্যাতন। সেই নির্যাতন সহ্য করতে না পেরে অনেকেই সেন্টার ছেড়ে পালানোর চেষ্টা করে। আবার কেউ কেউ মুখবুজে পড়ে থাকে। কেউ সামান্য প্রতিবাদ করলেই তাকে উল্টো করে ঝুলিয়ে অসহনীয় শারীরিক নির্যাতন করা হয়। সিলেটসহ দেশের বিভিন্ন রিহ্যাব সেন্টার বা মাদকাসক্তি নিরাময় কেন্দ্রে ইতিপূর্বে এরকম অনাকাংখিত মৃত্যুর ঘটনা ঘটেছে।
আদিলের মৃত্যুি হত্যা না আত্মহত্যা- তা কেবল সঠিক এবং নিরপেক্ষ তদন্তের মাধ্যমে বেরিয়ে আসতে পারে। তবে সেই নিরপেক্ষ এবং সুষ্ঠ তদন্ত আদৌ হবে কি না, তা নিয়ে সন্দিহান সচেতন মহল।
তাদের দাবি, বিষয়টির সুষ্ঠ তদন্ত হোক এবং কেউ দোষী হলে তাকে আইনের আওতায় নিয়ে আসা হোক।