বঙ্গবন্ধুর স্মৃতি বিজড়িত ঐতিহাসিক বটগাছ কর্তনে উপজেলাবাসীর ক্ষোভ
জামালগঞ্জ প্রতিনিধি
সুনামগঞ্জের জামালগঞ্জ উপজেলার সাচনা বাজারের বঙ্গবন্ধুর স্মৃতি বিজড়িত ঐতিহাসিক প্রায় দুইশত বর্ষী বটগাছের একাংশ কেটে ফেলা হয়েছে। যা নিয়ে পুরো বাজার জুড়ে নানা গুঞ্জন চলছে। সরেজমিনে গিয়ে দেখা যায়, সাচনা গ্রামের মৃত পরিমল কান্তি ঘোষ চৌধুরীর ছেলে সৈকত ঘোষ চৌধুরী তার সাচনা বাজারস্থ দোকান ভিটের সৌন্দর্য বর্ধনে জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের স্মৃতি বিজড়িত গাছটির বিরাট একটি অংশ কেটে ফেলেছে।
জানা যায়, ১৯৭০ সালে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান এই ঐতিহ্যবাহী শতবর্ষী বটগাছের নিচেই ভাষন দিয়ে নৌকা এবং স্বাধীনতাকামী মানুষকে দেশ স্বাধীনের জন্য ঐক্যবদ্ব করতে উদ্বুদ্ধ করেছিলেন। তারপর থেকে এই এলাকার জনগন বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের স্মৃতি বিজড়িত গাছটিকে স্বযত্নে শ্রদ্ধাভরে লালন করে আসছিলেন। যার বয়স হবে প্রায় ২ শত বছর। হঠাৎ করে এই গাছটির বড় একটি অংশ কর্তন করায় পুরো বাজার জুড়ে এবং আওয়ামীপ্রেমী মানুষেরা ক্ষোভে ফেটে পড়েন।
এব্যাপারে উপজেলা প্রশাসনের সহকারী কমিশনার (ভূমি) তনুকা ভৌমিক সরেজমিনে এসে ঘটনার সত্যতা পেয়েছেন। এব্যাপারে সাচনা বাজার বণিক কল্যাণ সমিতির সাধারণ সম্পাদক আসাদ আল আজাদ জানান, বঙ্গবন্ধুর স্মৃতি বিজড়িত ঐতিহাসিক বটগাছ কেটে ফেলা অত্যন্ত দুঃখজনক। এই ব্যাপারে আমি কিছুই জানিনা। এব্যাপারে অভিযুক্ত সৈকত ঘোষ চৌধুরীর সাথে মুঠো ফোনে যোগাযোগ করা হলে তিনি জানান, ফোনে কথা না বলে সামনাসামনি কথা বলবো।
উপজেলা পরিষদ চেয়ারম্যান ইকবাল আল আজাদ বলেন, গাছটি কাটা অত্যন্ত দুঃখজনক ও নিন্দনীয়। ১৯৭০ সাল থেকে বঙ্গবন্ধুর স্মৃতি বিজড়িত ঐতিহাসিক গাছটিকে মানুষ লালন করে আসছে। তাই বঙ্গবন্ধুর স্মৃতি বিজড়িত স্থানটিকে রক্ষায় ও গাছটির সৌন্দর্য বর্ধনে উপজেলা পরিষদের পক্ষ থেকে বঙ্গবন্ধু স্মৃতি ম্যুরাল তৈরি করার সিদ্ধান্ত গৃহীত হয়। যা চলতি বছরের ১৬ই ডিসেম্বরের আগেই বাস্তবায়ন হওয়ার কথা রয়েছে।
সুনামগঞ্জ জেলা আওয়ামী লীগের সহ-সভাপতি রেজাউল করিম শামীম বলেন, এই গাছ তলায় জাতীর জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান ১৯৭০ সালে ভাষণ দিয়ে হাওরাঞ্চলের মানুষকে স্বাধীনতার পক্ষে ঐক্যবদ্ধ করেছিলেন। সেই থেকে বাংলাদেশ আওয়ামীলীগ ও অন্যান্য সংগঠনের নেতৃবৃন্দের কাছে ঐতিহাসিক বটতলা হিসেবে পরিচিত। এবং যেকোনো সভা সমাবেশ এই বটতলায় অনুষ্ঠিত হয়। বঙ্গবন্ধুর স্মৃতি বিজড়িত গাছটি কর্তণ করায় আমি বাংলাদেশ আওয়ামীলীগ সুনামগঞ্জ জেলা শাখার পক্ষ থেকে তীব্র নিন্দা ও দৃষ্টান্তমূলক বিচার দাবি করছি।
উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মো. মাসুদ রানা বলেন, বিষয়টি আমি শুনেছি এবং সাথে সাথে সহকারী কমিশনার (ভূমি)কে ঘটনাস্থলে পাঠিয়েছি। রিপোর্টের উপর ভিত্তি করে আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহন করা হবে।