নবীগঞ্জে বিবিয়ানা হাই স্কুলের শিক্ষক ও সভাপতির বিরুদ্ধে দূর্নীতির অভিযোগ

নূরুজ্জামান ফারুকী নবীগঞ্জ প্রতিনিধি
নবীগঞ্জে পল্লী এলাকা হলিমপুর, মেঘেরকান্দি, হরিনাকান্দি, চরগাঁও, বাগাউড়া গ্রামসহ আশ পাশের কয়েকটি গ্রামের শিক্ষা ব্যবস্থার আমূল পরিবর্তন হয়েছে হলিমপুর গ্রামে অবস্থিত বিবিয়ানা আদর্শ উচ্চ বিদ্যালয় প্রতিষ্টার ফলে। ঐ এলাকার ছেলে মেয়েরা শিক্ষা অর্জনের জন্য এখন আর দূর-দূরান্তে পাড়ি দিতে হয় না। যার ফলে এলাকায় শিক্ষার হারও বৃদ্ধি পেয়েছে উল্লেখযোগ্য হারে।
জানা যায়, হলিমপুর গ্রামের মৃত্যু সুরেশ দাশ তালুকদারের পুত্র সুষেন দাশ তালুকদারসহ ঐ গ্রামের আরও কয়েকজনের উদ্যোগে আশপাশের গ্রামবাসীর সার্বিক সহযোগিতায় বিবিয়ানা আদর্শ উচ্চ বিদ্যালয়ের প্রতিষ্ঠা হয়। বিদ্যালয় প্রতিষ্টার জন্য মৃত্যু সুরেশ দাশ তালুকদারের পুত্র সুষেন দাশ তালুকদারের দানকৃত ৭১ শতক ভুমির উপরে বিদ্যালয় প্রতিষ্টা হওয়ার পর হলিমপুর গ্রামের মৃত সনদ দাশ তালুকদারের পুত্র সুষেন দাশ তালুকদার বিদ্যালয়ে একটি ভবন নির্মাণ করে দেন। পরবর্তীতে গিরিজা দাশ তালুকদার একটি ভবন নির্মাণ করে দেন এবং হলিমপুর গ্রামবাসীর উদ্যোগে তালুকদার ভবন নামে আরও একটি ভবন নির্মাণ করা হয়। প্রথম দিকে দুয়েকজন ব্যক্তি বিদ্যালয়ের ব্যয়ভার বহন করলেও পরবর্তীতে গ্রামবাসী ও পঞ্চায়েতি জমি ও জলমহালের আয় দিয়ে ঐ বিদ্যালয়ের যাবতীয় ব্যয় মেটানো হতো। পরবর্তীতে হলিমপুর গ্রামের নারায়ণ চন্দ্র দাশ ৭১ শতক, টকন চৌধুরী ৭১ ভুমি ও ঐ বিদ্যালয়ের অপর দাতা সদস্য গোরাঙ্গ চন্দ্র দাশ ১ লক্ষ ২০ হাজার টাকা দান করেন। বিগত ২০১৮ সালে বিদ্যালয়টি এমপিও ভুক্ত হলে এলাকাবাসী খুবই আনন্দিত হন। কিন্তু বর্তমানে অনেকের অভিযোগ রয়েছে, অনিয়ম, দূর্নীতি ও স্বজনপ্রীতির কারনে নষ্ট হচ্ছে পাঠদানের পরিবেশ, যার ফলে হুমকির সম্মুখীন বিদ্যালয়ের ভবিষ্যত। এসব অনিয়-দূর্নীতির কারণে অতিষ্ঠ হয়ে ইতোপূর্বে উপজেলা নির্বাহী অফিসার বরাবরে কয়েকবার লিখিত অভিযোগও দিয়েছেন ভুক্তভোগী ও ম্যানেজিং কমিটির সদস্যরা।
সরে জমিনে গিয়ে ২০১১ সাল থেকে দীর্ঘদিন যাবত বিবিয়ানা আদর্শ উচ্চ বিদ্যালয়ের ম্যানেজিং কমিটির সভাপতির দায়িত্ব পালন করে আসছেন ঐ বিদ্যালয়ের দাতা সদস্য নারায়ণ চন্দ্র দাশ। তিনি অদ্যাবধি বিদ্যালয়ের আয়-ব্যয়ের কোন প্রকার হিসাব না দিয়ে স্বেচ্ছাচারীতা করে আসছেন। বিভিন্ন সময় তার কাছে হিসেব চাওয়া হলে তিনি বিভিন্ন অজুহাত দেখিয়ে কাল ক্ষেপণ করে বিষয়টিকে ধামাচাপা দেয়ার চেষ্টা করে চলেছেন। বিদ্যালয়ের বিভিন্ন নিয়োগের ক্ষেত্রও স্বেচ্ছাচারীতার অভিযোগ রয়েছে নারায়ণ দাশের বিরুদ্ধে। এব্যাপারে নারায়ণ চন্দ্র দাশের সাথে কথা হলে তিনি এসব অভিযোগ অস্বীকার করেন এবং এসকল অভিযোগ মিথ্যা বলে দাবী করেন।
এছাড়াও অত্র বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক কানু মনি সরকারের বিরুদ্ধেও রয়েছে নানান অভিযোগ। কৌশলে নিজ আত্মীয়কে নিয়োগ পাইয়ে দেয়া, হিসাব নিকাশ দিতে গড়িমসি করা সহ আরও অনেক অভিযোগ রয়েছে তার বিরুদ্ধে। এসব অভিযোগ মিথ্যা দাবী করে কানু মনি সরকার বলেন, সমস্ত হিসাবে তার কাছে লিপিবদ্ধ করা আছে। ম্যানেজিং কমিটি চাইলে তিনি যেকোনো সময় হিসাব প্রস্তুত আছেন।
বিগত ২ অক্টোবর অত্র বিদ্যালয়ের দুইজন প্রতিষ্ঠা সদস্য সুষেন দাশ তালুকদার ও গৌরাঙ্গ চন্দ্র দাশ বাদী হয়ে নবীগঞ্জ উপজেলা নির্বাহী অফিসার বরাবরে একটি লিখিত অভিযোগ দায়ের করেন। অভিযোগের অগ্রগতি সম্পর্কে জানতে চাইলে উপজেলা নির্বাহী অফিসার অনুপম দাস অনুপ জানান অভিযোগটি তদন্তের জন্য একাডেমিক অফিসারকে দায়িত্ব দেয়া হয়েছে।