অবাধে বালু উত্তোলনে ক্ষতিগ্রস্ত রাবার ড্যাম
নাহিদ মিয়া,মাধবপুর প্রতিনিধি
হবিগঞ্জের মাধবপুরে সোনাই নদীর রাবার ড্যাম এলাকা থেকে চোরাই পথে বালু উত্তোলন ও পাচার চলছে অবাধে। প্রশাসনিক চোখে ফাঁকি দিয়ে স্থানীয় একটি মহল চালাচ্ছে এই অবৈধভাবে বালু উত্তোলন ও পাচার সিন্ডিকেট।
বালু তুলতে গিয়ে পাচারকারীরা ক্ষতিগ্রস্ত করছে সোনাই নদীর মঙ্গলপুর ও বহরা রাবার ড্যাম দুটি। রাবার ড্যামের কাছাকাছি এলাকা ড্রেজার মেশিন বসিয়ে বালু উত্তোলনের কারণে ড্যামে অনেক স্থানে ভাঙন ধরেছে। সোনাই নদীর পানি ব্যবস্থাপনা কমিটির নেতারা জানান, গত এপ্রিল মাসে সোনাই নদীর অলিপুর, তুলসীপুর, ভবানীপুর, কালী কৃষ্ণনগর এলাকায় পানি উন্নয়ন বোর্ড কর্তৃক কিছু বালু জব্দ করা হয়।
জব্দ করা বালু মাধবপুর উপজেলা প্রকৌশলী নিলামে বিক্রি করেন। নিলাম ডাককারীরা দুই মাস সময়ের মধ্যে এসব বালু অপসারণ করে নেন। বালু অপসারণের সময়সীমা পার হয়ে গেলেও, স্থানীয় প্রভাবশালী চক্র অবৈধ পথে সোনাই নদী থেকে বালু উত্তোলন করে নদী পাড়ে জমা করছে। পরে এক্সক্যাভেটরের মাধ্যমে ট্রাক ও ট্রাক্টরে করে এসব বালু পাচার করা হচ্ছে বিভিন্ন স্থানে। বালুবাহী এসব ভারী যান চলাচলের কারণে স্থানীয় রাস্তাঘাটও ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে।
সোনাই নদীর পানি ব্যবস্থাপনা সমবায় সমিতির সভাপতি আবুল মোবারক জানান, মঙ্গলপুর ও বহরা এলাকার দুটি রাবার ড্যাম থাকার কারণে সোনাই নদীর পানি দিয়ে খরা মৌসুমে স্থানীয় কৃষকরা শত শত একর জমির বোরো ও রবিশস্য চাষে সেচের ব্যবস্থা করেন। তবে রাবার ড্যাম এলাকা থেকে অবৈধভাবে বালু উত্তোলনের কারণে নদী গভীর হয়ে নদীর তল দেশে রাবার ড্যামের স্থাপনা ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে। এ ছাড়া বেপরোয়া বালু বহনের কারণে ক্ষতি হচ্ছে ড্যামের।
স্থানীয়রা জানান, বোরো মৌসুমে রাবার ড্যাম দুটি ঠিকভাবে কাজে লাগানো যাচ্ছে না পানি সংরক্ষণে। বালু উত্তোলনের কারণে চৌমুহনী ও মঙ্গলপুর রাবার ড্যাম পুরোপুরি নষ্ট হয়ে গেছে। এ ছাড়া বহরা রাবার ড্যামে ছিদ্র হয়ে গেছে। দ্রুত মেরামত করা না হলে আগামী বোরো মৌসুমি সেচের পানি নিয়ে চরম সংকটে পড়তে হবে।
মাধবপুর মনতলা ভূমি অফিসের উপসহকারী ভূমি কর্মকর্তা কুতুব উদ্দিন আহমেদ জানান, অবৈধভাবে বালু পাচার কারণে এরইমধ্যে বালু পাচারকারী চক্রের বিরুদ্ধে ১৫টি ফৌজদারি মামলা দায়ের করা হয়েছে। এ ছাড়া কালী কৃষ্ণনগর থেকে বালু পাচার সময় চোরাই বালু জব্দ করা হয়েছে। মাধবপুর এলজিডি কর্মকর্তা ও জব্দকৃত বালু নিলাম কমিটি সদস্য সচিব শাহ আলম জানান, দুই মাসের জন্য নির্দিষ্ট পরিমাণ বালু নিলাম দেওয়া হয়েছিল। সরকারি কোষাগারে টাকা জমা দিয়ে নিলামকারীরা নির্দিষ্ট সময়ের মধ্যে বালু অপসারণ করে নিয়েছেন।
এখন কেউ বালু নেওয়ার চেষ্টা করলে প্রশাসন তাদের বিরুদ্ধে আইন প্রয়োগ করছে। রাবার ড্যাম সংস্কারের জন্য সরকারি বরাদ্দের প্রস্তাব দেওয়া হয়েছে। টাকা পেলে দ্রুত মেরামত করা হবে।