বিএনপির সহিংসতার মূল উদ্দেশ্য হচ্ছে নির্বাচন বানচাল করা : পররাষ্ট্রমন্ত্রী

দৈনিকসিলেটডেস্ক
বিদেশি কূটনীতিকদের ব্রিফ শেষে পররাষ্ট্রমন্ত্রী ড. এ কে আব্দুল মোমেন ও অন্যরা। ছবি: সংগৃহীত
গত ২৮ অক্টোবর অনুষ্ঠিত বিএনপির মহাসমাবেশের দিন পুলিশের সঙ্গে দলটির নেতাকর্মীদের সংঘর্ষের বিষয়ে বিদেশি কূটনৈতিকদের ব্রিফ করেছে সরকার। ব্রিফিংয়ে কোনো প্রশ্ন করেননি বিদেশিরা।
আজ সোমবার রাষ্ট্রীয় অতিথি ভবন যমুনায় ঢাকায় অবস্থিত বিদেশি কূটনৈতিক মিশন, জাতিসংঘের বিভিন্ন সংস্থা ও আন্তর্জাতিক সংস্থার প্রতিনিধিদের ব্রিফ করেন করেন পররাষ্ট্রমন্ত্রী ড. এ কে আব্দুল মোমেন। পরে তিনি সাংবাদিকদের কাছে বিস্তারিত তুলে ধরেন।
পররাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, ‘বিএনপির সমাবেশ ঘিরে শনিবার ঢাকায় যে রাজনৈতিক সহিংসতা সংঘটিত হয়েছে, তা বিদেশি কূটনীতিকদের জানিয়েছে সরকার। পাশাপাশি বিএনপির সংশ্লিষ্টতায় মার্কিন প্রেসিডেন্টের উপদেষ্টা হিসেবে পরিচয় দেওয়া মিয়া জাহিদুল ইসলাম আরেফীর কর্মকাণ্ডের কথাও কূটনীতিকদের কাছে তুলে ধরা হয়েছে।’
ড. মোমেন বলেন, ‘শান্তিপূর্ণ শোভাযাত্রার নাম নিয়ে অপজিশন পার্টি বিএনপি যেসব সংঘাত-সহিংসতা করেছে আমরা তার তীব্র নিন্দা জানাই এবং তাদের অবশ্যই বিচারের আওতায় আনা দরকার। গত কয়েকদিনে তারা যা করেছে, তার মূল উদ্দেশ্য আসছে নির্বাচন যেন অবাধ ও সুষ্ঠু না হয়। নির্বাচনকে বানচাল করার জন্য তারা এ ধরনের অপকর্ম করেছে।’
তিনি বলেন, ‘আমরা সেজন্য বিদেশি রাষ্ট্রদূতদের ডেকেছি। তাদের বলেছি, ২৮ তারিখে এখানে কি হয়েছে। প্রেসিডেন্ট বাইডেনের মিথ্যা উপদেষ্টা হিসেবে একজন নিয়ে কি কি করা হয়েছে,
তিনি বলেন, ‘আমরা তাদের (বিএনপি) অনুরোধ করব, আপনারা নির্বাচনে আসেন। নির্বাচনের মাধ্যমে সরকার পরিবর্তন হয়। আমরা আমাদের শাসনতন্ত্র অনুযায়ী নির্বাচন করব। রাজনৈতিক সহিংসতা করে সরকার পতনের যে চেষ্টা, এটা অলীক। আপনারা নির্বাচনে আসেন।’
পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের আয়োজিত ব্রিফিংয়ে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র, ভারত, চীন, যুক্তরাজ্য, পাকিস্তান, দক্ষিণ কোরিয়া, তুরস্ক, স্পেন, সিঙ্গাপুর, কানাডা, জার্মান, ইতালি, ফ্রান্স, রাশিয়া, জাপান, নেদারল্যান্ডস, সুইডেন, সুইজারল্যান্ড, ব্রাজিল, অস্ট্রেলিয়া, মালয়েশিয়া, ইইউ, জাতিসংঘ, ওয়াইসি, বিমসটেকসহ ঢাকায় বিদেশি কূটনৈতিক মিশনসহ জাতিসংঘের বিভিন্ন সংস্থা ও আন্তর্জাতিক সংস্থার প্রতিনিধিরা অংশ নেয়।
কূটনীতিকদের ব্রিফিংয়ে বাংলাদেশ সরকারের পক্ষে আইনমন্ত্রী আনিসুল হক, প্রধানমন্ত্রীর বেসরকারি শিল্প ও বিনিয়োগ বিষয়ক উপদেষ্টা সালমান এফ রহমান, পররাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী মো. শাহরিয়ার আলম, পররাষ্ট্রসচিব মাসুদ বিন মোমেন উপস্থিত ছিলেন।
ব্রিফিং শেষে আইনমন্ত্রী সাংবাদিকদের বলেন, ‘প্রধানমন্ত্রী অবাধ, সুষ্ঠু ও নিরপেক্ষ নির্বাচনের বিষয়ে যে প্রতিশ্রুতি দিয়েছেন সে ব্যাপারে আমরা কূটনীতিকদের পুনর্ব্যক্ত করেছি। নির্বাচন অবাধ ও সুষ্ঠু হবে। কূটনীতিকদের কোনো প্রশ্ন আছে কি না জানতে চাওয়া হয়েছে, তবে তারা ব্রিফিংয়ে কোনো প্রশ্ন করেননি।’
এ সময় পররাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী বলেন, ‘আমরা ২৮ তারিখে যেসব ঘটনা ঘটেছে, ওইদিন তাৎক্ষণিক যেসব ফুটেজ পাওয়া গেছে; সেগুলো বিদেশি মিশনগুলোতে পাঠিয়েছি। আজকের আবার তাদের সহিংসতার ভিডিও ফুটেজ ছবিসহ তাদের নানা ডকুমেন্ট দেখানো হয়েছে।’
এসব দেখে ও শুনে বিদেশি কূটনীতিকদের বক্তব্য কি ছিল— এমন প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, ‘তাদের অভিব্যক্তি দেখে বোঝা গেছে- তারা এসব দেখে খুব অবাক হয়েছেন।’
মার্কিন প্রেসিডেন্ট জো বাইডেনের তথাকথিত উপদেষ্টার বিষয়ে করা এক প্রশ্নের জবাবে শাহরিয়ার আলম বলেন, ‘কথিত মার্কিন উপদেষ্টার জন্য কনস্যুলার অ্যাক্সেস চেয়েছে ঢাকার মার্কিন দূতাবাস।’