গাজায় সেবা দিতে প্রস্তুত হাজারের অধিক পাকিস্তানি চিকিৎসক
![](https://dainiksylhet.com/images/icon.jpg)
দৈনিকসিলেটডেস্ক
ইসরায়েলি বাহিনীর লাগাতার হামলায় ফিলিস্তিনের প্রতিরোধ আন্দোলন হামাস শাসিত গাজার পরিস্থিতি ক্রমেই খারাপ হচ্ছে। চিকিৎসাব্যবস্থা ভেঙে পড়ছে। এ অবস্থায় সাইলানি ওয়েলফেয়ার, বাইতুস সালাম ট্রাস্ট ও আল খিদমত ফাউন্ডেশনসহ বেশ কিছু বেসরকারি সংস্থা ফিলিস্তিনে ক্ষতিগ্রস্তদের সহায়তার জন্য চিকিৎসা সামগ্রীর যোগান দিয়ে যাচ্ছে। এছাড়া বিপুল সংখ্যক চিকিৎসা স্বেচ্ছাসেবকও গাজায় কাজ করতে নিজেদের নাম লিপিবদ্ধ করেছে। খবর দ্য নিউজ।
গাজার চিকিৎসা পরিষেবা প্রায় ধ্বংস হয়ে গেছে
জানা গেছে, এরই মধ্যে গাজায় চিকিৎসা সেবা গিতে আগ্রহ প্রকাশ করেছেন হাজারের অধিক পাকিস্তানি চিকিৎসক, যাদের মধ্যে চার শতাধিক নারী চিকিৎসকও রয়েছেন।
আল খিদমত হেলথ ফাউন্ডেশনের কর্মকর্তারা জানান, গত শনিবার আমরা গাজা উপত্যকায় আহত ও অসুস্থ লোকজনের জন্য স্বাস্থ্যসেবা স্বেচ্ছাসেবকদের একটি অনলাইন আবেদনের প্রক্রিয়া শুরু করি। সেখানে অর্থোপেডিক, ভাস্কুলার, জেনারেল সার্জন, অ্যানেস্থেটিস্ট, পেডিয়াট্রিক সার্জন, স্ত্রীরোগ বিশেষজ্ঞসহ এক হাজারের বেশি ১,০০০ টিরও বেশি চিকিৎসা বিশেষজ্ঞ তাদের সাহায্য করার জন্য আমাদের সঙ্গে নিবন্ধন করেছেন।
গাজার হাসপাতালগুলোতে ঠাঁই নেই
গাজার স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় বুধবার জানায়, বিমান ও ক্ষেপণাস্ত্র হামলায় হাসপাতাল ধ্বংস, চিকিৎসক ও প্যারামেডিকদের হত্যা, বিদ্যুৎ, পানি ও জেনারেটরের জ্বালানি বন্ধের কারণে অবরুদ্ধ গাজায় স্বাস্থ্যসেবা ব্যবস্থা প্রায় পুরোপুরিভাবে ভেঙে পড়েছে। সেখানে ১৮ হাজারের বেশি রোগী ছিল, যাদের বেশিরভাগই ওষুধ, চিকিৎসা সরবরাহ এবং ক্ষতিগ্রস্ত অবকাঠামোর অভাবে চিকিৎসা নিতে পারেনি।
আল খিদমত হেলথ ফাউন্ডেশনের চেয়ারপারসন ডা. জাহিদ লতিফ বলেন, যেসব চিকিৎসক স্বেচ্ছায় গাজায় যেতে ইচ্ছা প্রকাশ করেছেন, তাদের মধ্যে ৪০ শতাংশ নারী, যারা স্ত্রীরোগ বিশেষজ্ঞ, শিশু বিশেষজ্ঞ, সার্জন ও ক্রিটিক্যাল কেয়ার বিশেষজ্ঞ। তাদের সঙ্গে কিছু নার্স ও সহযোগী স্বাস্থ্য পেশাদাররাও গাজায় যাওয়ার ইচ্ছা প্রকাশ করেছেন।
ডা. জাহিদ লতিফ জানান, আমরা খুব ভালো করেই জানি, চলমান যুদ্ধের কারণে এই মুহূর্তে গাজায় যাওয়া প্রায় অসম্ভব। আর ডাব্লিউএইচওসহ অন্য কোনো সংস্থা গাজায় পরিষেবা দিতে গাজা বা ইসরায়েলের প্রতিবেশী কোনো দেশে চিকিৎসাকর্মীদের পাঠানোর ব্যাপারে আমাদের কোনও সবুজ সংকেত দেয়নি। তবে আমরা এ পাকিস্তানি জনগণের পক্ষ থেকে বেশ চাপে রয়েছি।
তিনি বলেন, আল খিদমত ইসলামাবাদে বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার (ডাব্লিউএইচও) কান্ট্রি অফিসের পাশাপাশি মিশরের কায়রোতে ডাব্লিউএইচও এমরো হেড অফিসের সঙ্গে যোগাযোগ করেছে। যাতে যখনই এ ব্যাপারে কোনো সবুজ সংকেত পাওয়া যায়, তখনই যেন এসব পাকিস্তানি চিকিৎসক টিম সেখানে যেতে পারে।
এক প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, আল-খিদমত ফাউন্ডেশন এরই মধ্যে যারা গাজায় কাজ করছেন, তাদের মাধ্যমে ওষুধসহ বিভিন্ন ধরনের চিকিৎসাসামগ্রী, কিট এবং নিরাপদ ডেলিভারি কিট, খাদ্য ও অন্যান্য প্রয়োজনীয় জিনিস পাঠাচ্ছে।।
ডা. জাহিদ লতিফ জানান, অতীতে এ রকম পরিস্থিতিতে পাকিস্তানের চিকিৎসকরা দুইবার গাজায় তাদের পরিষেবা দিয়েছিলেন। কিন্তু এবার পরিস্থিতি সামগ্রিকভাবেই খুব কঠিন। ফলে গাজাবাসীদের আরও বেশি সেবা দরকার হয়ে পড়েছে, অথচ সেখানে যাওয়ার উপায় প্রায় বন্ধই বলা চলে।