জামালগঞ্জে হাওরের পানি নিস্কাশনে বাঁধা: শঙ্কিত কৃষক
মো. বায়েজীদ বিন ওয়াহিদ, জামালগঞ্জ প্রতিনিধি:
সুনামগঞ্জের জামালগঞ্জে হাওর থেকে পানি নিস্কাশন না হওয়ায় উদ্বেগ আর শঙ্কায় রয়েছেন হাজার হাজার কৃষক।
উপজেলার ফেনারবাঁক ইউনিয়নের পাগনার হাওরের পাঠামারা খাল থেকে সঠিক সময়ে পানি নিস্কাশন না হওয়ায় প্রায় ৯ হাজার হেক্টর বোরো জমি আবাদে দেখা দিয়েছে চরম ভোগান্তি। এতে শঙ্কিত রয়েছে প্রায় ১৫ হাজার কৃষক।
এলাকাবাসী ও স্থানীয় জনপ্রতিনিধিদের দাবীতে শনিবার বিকেলে সরেজমিনে ঘুরে দেখা যায়, ফেনারবাঁক ইউনিয়নের পাগনার হাওরের পাঠামারা খালের বিরাট একটা অংশ জুড়ে পলি মাটিতে ভরাট হয়ে গেছে। যার দরুন হাওরের পানি নদীতে নিস্কাশনে বাঁধা হয়ে দাঁড়িয়েছে। প্রতিবছরই এরকম হলেও এবছর বিগত বছরগুলোর চেয়ে বেশি পলিমাটি পড়েছে। যার কারণে পানি নিস্কাশন প্রায় একেবারেই বন্ধ হওয়ার পথে। এলাকাবাসী বলছে এবার সুরমা নদীর গজারিয়া সুইচ গেট পানি উন্নয়ন বোর্ড কর্তৃক খুলে দেওয়ার কারনে নদী থেকে পলি মাটি হাওরের খালে প্রবেশ করেছে এবং পানি নিস্কাশনে বড় বাঁধা হয়ে দাঁড়িয়েছে।
এব্যাপারে পাগনার হাওরের কৃষক তোরাব আলী বলেন, বছরে আমাদের একটা মাত্র ফসল, এটার উপর নির্ভর করে আমাদের সারা বছরের জীবিকা, ছেলে মেয়ের পড়াশোনা, চিকিৎসা ও বিবাহসহ নানা অনুষ্ঠান। তাই সঠিক সময়ে যদি আমরা ক্ষেত না লাগাতে পারি তাহলে আমাদের পরিবার ও এই এলাকার কৃষক আর্থিকভাবে হুমকির মধ্যে পড়ে যাবে।
রামপুর গ্রামের কৃষক মো. আশুক মিয়া বলেন, প্রতি বছর এই সময়ে পাঠামারা খাল দিয়ে পানি নিস্কাশনে পলি মাটি বাঁধা হয়ে দাঁড়ালেও এবছর সুরমা নদীর গজারিয়া সুইচ গেট খুলে দেওয়ার কারনে নদী থেকে পলিমাটি এসে ভরাট হয়ে গেছে। ধানের বীজতলার চারা বড় হয়ে গেছে। কিন্তু জমি থেকে পানি না নামার কারনে এখনো জমিতে চারা রোপন করতে পারছিনা। আমরা এই খাল স্থায়ী খননের দাবি জানাই।
সংশ্লিষ্ট ইউপি সদস্য একলিমুর রেজা চৌধুরী মানিক বলেন, এই মুহুর্তে জরুরিভাবে পাঠামারা খাল যদি খনন করে দেয়া হয় তাহলে হয়তো এই হাওরের কৃষক আপাতত বেঁচে যাবে। পরবর্তীতে বড় ধরনের প্রজেক্টের মাধ্যমে স্থায়ী খনন করার জন্য প্রশাসনের কাছে জোড় দাবি জানাই।
এব্যাপারে ফেনারবাঁক ইউনিয়ন পরিষদ চেয়ারম্যান কাজল চন্দ্র তালুকদার বলেন, গত বছর গজারিয়া সুইচ গেট খুলাতে পাঠামারা খালে পলিমাটি পড়ে ভরে গেছে। আমি ইউনিয়ন পরিষদ থেকে একটি বরাদ্দ দিয়েছি। তবে এই বরাদ্দ দিয়ে খাল খনন করা সম্ভব নয়। আমি উপজেলার উর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের সাথে কথা বলেছি। তাঁরা আমাকে আশ্বস্ত করেছেন খুব শীগ্রই সরেজমিনে গিয়ে পানি নিস্কাশনে পদক্ষেপ গ্রহন করবেন।
পানি উন্নয়ন বোর্ডের উপসহকারী প্রকৌশলী জাহিদুল ইসলাম জনি জানান, আমি সরেজমিনে গিয়ে দেখে ১ কিলোমিটার খননের জন্য জেলা কর্মকর্তার কাছে প্রস্তাবনা পাঠিয়েছি। অনুমোদন হলে কাজ শুরু হবে।