সিলেট ১ আসনে যে কারণে ড. মোমেন চষে বেড়াচ্ছেন
দৈনিকসিলেটডটকম
নির্বাচনের আনন্দে ভাসছে আধ্যাতিক রাজধানী সিলেট। একদিকে হরেক প্রতীক আর প্রার্থীর পোস্টার; অন্যদিকে ভোটরের কাছে প্রার্থীদের দৌড়ঝাপ। সব মিলিয়ে সময় যতো গড়াচ্ছে, ততোই যেন বাড়ছে নির্বাচনের আমেজ। কর্মী-সমর্থক ও সাধারণ ভোটারদের উচ্ছ্বাস-আগ্রহ ক্রমেই বাড়ছে।
ড. এ কে আব্দুল মোমেন সিলেট ১ আসনের আওয়ামীলীগ মনোনিত প্রার্থী। তাঁর ব্যক্তিগত যোগ্যতা সামাজিক এবং দলীয় অবস্থান এমনকি আর্ন্তজাতিক পরিচিতি প্রতিদ্বন্দ্বী অন্যান্য প্রার্থী থেকে তিনি শত ভাগ এগিয়ে। ৭ জানুয়ারির নির্বাচনে সিলেট ১ আসনে সর্বাধিক ভোট পেয়ে বিজয়ী হবেন এটা অনেকটা নিশ্চিত বলে অনেকেই মনে করছেন। তারপরও তিনি ভোটারের ধারে ধারে যাচ্ছেন, কথা বলছেন, সিলেটকে নিয়ে তার স্বপ্নের কথা বলছেন, চষে বেড়াচ্ছেন পুরো নির্বাচনী এলাকা।
সিলেটের ছয়টি নির্বাচনী আসনের মধ্যে সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ আসন সিলেট-১ । ভোটের মাঠে আওয়ামী লীগের মনোনীত প্রার্থী বর্তমান সংসদ সদস্য ড. একে আব্দুল মোমেন ছাড়া বাকিদের দেখা যায় নি আজ পর্যন্ত। এখনো পোস্টার-ব্যানারের প্রচারণা দেখা যাচ্ছেনা। নির্বাচন আসলেই যেখানে মাইকের শব্দে কান ঝালাপালা হয়ে যাবার কথা সেখানে সিলেট মহানগরী এখনো নিরব। নৌকা মার্কার প্রচারণায় কয়েকটি মাইক বেজে উঠলেও প্রতিদ্বন্দী প্রার্থীদের নামও জানেন না সাধারণ ভোটাররা। নগরীর কোথাও নেই পোস্টার, নেই ব্যানার।
সিলেট-১ আসনে নৌকার প্রার্থী ছাড়াও ৪ জন প্রার্থী রয়েছেন । এর মধ্যে সম্মিলিত মুক্তিজোটের প্রার্থী আব্দুল বাসিত রয়েছেন ছড়ি প্রতীকে। ন্যাশনাল পিপলস পার্টি (এনপিপি) প্রার্থী ইউসুফ আহমদ। তার প্রতীক আম। ইসলামী ঐক্যজোটের প্রার্থী ফয়জুল হক দলীয় প্রতীক মিনার নিয়ে আছেন নির্বাচনে এবং বাংলাদেশ কংগ্রেসের প্রার্থী মো. সোহেল আহমদ চৌধুরী ডাব প্রতীক নিয়ে নির্বাচন করছেন।
গণতন্ত্রের প্রতি আস্থাশীল ড. মোমেন তাঁর প্রতিদ্বন্দ্বী প্রার্থীদের কখনও ছোট করে দেখেন না।
এ প্রসঙ্গে ড. মোমেন বলেন, যেকোন নির্বাচনই সহজ না। আর নির্বাচনে কোনো প্রার্থীকেই ছোট করে দেখার অবকাশ নেই। তবে আমাদের প্রচেষ্টার কোন ঘাটতি নেই। আমরা গণতন্ত্র ও প্রতিদ্বন্দ্বিতায় বিশ্বাসী।
শনিবার (২৩ ডিসেম্বর) সিলেট নগরীতে নির্বাচনী প্রচারের সময় সাংবাদিকদের সঙ্গে আলাপকালে তিনি এ কথা বলেন।
কেন্দ্রে ভোটার উপস্থিতি বাড়াতে তৃণমূল নেতাকর্মীরা কাজ করছে জানিয়ে তিনি বলেন, এখন সবখানে নির্বাচনি জোয়ার উঠেছে। উৎসবমুখর পরিবেশে মানুষ ভোট দিতে যাবে। সিলেটের অধিকাংশ আসনেই আওয়ামী লীগ মনোনীত প্রার্থীর বিজয় আমরা দেখতে চাই।
সিলেট -১ আসনের আওয়ামী লীগের প্রার্থী ড. এ কে আব্দুল মোমেন সুবাহনিঘাট- মেন্দিবাগ এলাকায় সকালে লিফলেট বিতরণের মাধ্যমে নির্বাচনি কার্যক্রম শুরু করেন।
শনিবার সকাল সাড়ে ১০ টায় নগরীর সুবাহনিঘাট কাঁচা বাজার, ছালিম ম্যানশনের ব্যবসায়ী-ক্রেতাদের সাথে কুশল বিনিময় করে নৌকার পক্ষে তিনি ভোট চান।
এ সময় উপস্থিত ছিলেন মহানগর আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক অধ্যাপক জাকির হোসেন, কৃষি ও সমবায় বিষয়ক সম্পাদক তপন মিত্র, স্পেশাল পিপি সরওয়ার আহমদ চৌধুরি আবদাল, জাতীয় পার্টি জেপি-এর সভাপতি ইফতেখার আহমদ লিমন, মহানগর যুবলীগের সভাপতি আলম খান মুক্তি, এডভোকেট আফসার আহমেদ, ২৩ নং ওয়ার্ড কাউন্সিলর মোস্তাক আহমদ, ওয়ার্ড আওয়ামী লীগ নেতা শোয়েব আহমদ শামীম, রুহুল মানিক ছুটন, আকিব হাসান, কবির আহমদ সোহেল প্রমুখ।
এরপর সকাল সাড়ে ১১ টায় সিলেট নগরীর একটি কমিউনিটি সেন্টারে জেলা ও মহানগর মহিলা আওয়ামী লীগের নির্বাচনি বৈঠকে যোগদান করেন।
সভায় তিনি বলেন,‘জননেত্রী শেখ হাসিনার নেতৃত্বে বাংলাদেশের নারীরা এগিয়ে চলছে। বাংলাদেশের অর্থনৈতিক-সামাজিক ক্ষেত্রে নারীরা বিশেষ অবদান রেখে চলছে। নারীবান্ধব আওয়ামী লীগ সরকারকে বিজয়ী করতে মহিলা আওয়ামী লীগকে গুরুদায়িত্ব নিতে হবে।’
তিনি আরো বলেন, ঐতিহ্যগতভাবে বাংলাদেশের মহিলারা স্বত:স্ফুর্তভাবে নির্বাচনে অংশ নিয়ে ভোট দেয় । তাই তাদের ভোটাধিকার নিশ্চিত করার জন্য কাজ করতে হবে। একটি গ্রহণযোগ্য, সুষ্ঠু নির্বাচন নিশ্চিত করতে একসাথে কাজ করতে হবে।
সভায় বক্তারা বলেন, জনগণের কাছে আওয়ামী লীগের উন্নয়ন কর্মকান্ড তুলে ধরতে হবে। নির্বাচনবিরোধীরা বিভিন্ন গুজব ছড়াচ্ছে ভোট না দেবার জন্য। তাই সবাইকে দ্বায়িত্বশীলতার সাথে কাজ করে নৌকার বিজয় ছিনিয়ে আনতে হবে।
জেলা মহিলা আওয়ামী লীগের সভাপতি এডভোকেট সালমা সুলতানার সভাপতিত্বে ও সিলেট মহানগর মহিলা আওয়ামী লীগের সিনিয়র সহসভাপতি আছমা কামরানের সঞ্চালনায় বক্তব্য রাখেন মহানগর আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক অধ্যাপক জাকির হোসেন পররাষ্ট্রমন্ত্রীর সহধর্মিনী সেলিনা মোমেন, সিনিয়র সহ-সভাপতি মারিয়ান চৌধুরী মাম্মি, জেলা মহিলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক হেলেন আহমদ, সিনিয়র নেত্রী নাজনিন হোসেন, সালমা বাসিত, হাসিনা বেগম চৌধুরী, কেন্দ্রীয় নেত্র্রী সাবিনা সুলতানা, যুগ্ম সম্পাদক সালমা বেগম, মহিলা সম্পাদিকা আসমা বেগম, সিসিকের মহিলা কাউন্সিলর হাজেরা বেগম, নার্গিস সুলতানা রুমি, সিলেট জেলা পরিষদের মেম্বার সুষমা সুলতানা রুমি, সাজেদা পরভিন প্রমুখ।
সন্ধ্যায় ড. এ কে আব্দুল মোমেন কুমারগাঁও-এ সিলেট সদর উপজেলার নির্বাচনী কার্যালয় উদ্বোধন করেন। এ সময় আয়োজিত সভায় তিনি বলেন, যারা নির্বাচন বানচাল করতে চায় তারা সন্ত্রাসী। আগামী ৭ জানুয়ারি সুষ্ঠু শান্তিপূর্ণ নির্বাচনের মাধ্যমে তাদেরকে জবাব দিতে হবে। এজন্য ভোটরদেরকে দলে দলে উৎসবমুখর পরিবেশে ভোট দেবার আহবান জানান।
সদর উপজেলা আওয়ামী সভাপতি নিজাম উদ্দিনের সভাপতিত্বে ও সাধারণ সম্পাদক হিরণ মিয়ার সঞ্চালনায় বক্তব্য ও উপস্থিত ছিলেন জেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক এডভোকেট নাসির উদ্দিন খান, সাবেক সাংগঠনিক সস্পাদক মিসবাহ উদ্দিন সিরাজ, জেলা আওয়ামী লীগের সহসভাপতি আশফাক আহমদ, অধ্যক্ষ সুজাত আলী রফিক, উপ-দফতর সম্পাদক মো. মজির উদ্দিন, মহানগর আওয়ামী লীগের সহসভাপতি জগদীশ চন্দ্র দাশ, এডভোকেট আফছর আহমদ, সদর উপজেলা ভাইস চেয়ারম্যান মিল্লাত চৌধুরী, জেলা পরিষদের সাবেক সদস্য মোহম্মদ শাহানুর , মোগলগাও ইউপি আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক আশিক মিয়া, খাদিমনগর আওয়ামী লীগের সভাপতি তেরা মিয়া, খাদিমপাড়া আওয়ামী লীগের সভাপতি আজম আলী, হাটখোলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক আব্দুর রহমান, টুকের বাজার আওয়ামী লীগের তোফায়েল আহমদ, সদর মহিলা আওয়ামী লীগের সভাপতি হাসিনা আক্তার, সদর স্বেচ্ছাসেবক লীগের আহবায়ক মো. শাহজাহান, সদর তাঁতী লীগের সাধারণ সম্পাদক কামাল হোসেন সুমন, জিএস ফারুক আহমদ প্রমুখ।
সভায় বক্তারা বলেন বঙ্গবন্ধু আমাদেরকে স্বাধীনতা এনে দিয়েছেন আর তার তাঁর কন্যা শেখ হাসিনা বাংলাদেশকে সোনার বাংলা গড়ে চলেছেন। দেশের শান্তি ও উন্নয়নে আওয়ামী লীগের বিকল্প নেই।
পররাষ্ট্রমন্ত্রী সর্বশেষ আখালিয়াঘাটে জালালাবাদ থানা আওয়ামী যুবলীগ আয়োজিত বিজয় দিবসের আলোচনা সভা ও পুরস্কার বিতরনীতে অংশ নেন। এপিপি এডভোকেট ছয়ফুল হোসেনের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথি ছিলেন মহানগর যুবলীগের সভাপতি আলম খান মুক্তি ও সাধারণ সম্পাদক মুশফিক জায়গিরদার। এর আগে বিকালে ড. মোমেন কালাগুলে হাফিইয়া দাখিল মাদ্রাসায় ওয়াজ মাহফিলে অংশ নেন।