কেন এমন পরিণতি হলো শমসের ও মোকাব্বিরের
দৈনিকসিলেট ডেস্ক :
তৃণমূল বিএনপির চেয়ারপারসন শমসের মবিন চৌধুরী ও গণফোরামের নির্বাহী সভাপতি মোকাব্বির খানের দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে আশাভঙ্গ হয়েছে। বুকভরা আশা নিয়ে দুই নেতা নির্বাচনে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করেছিলেন। কিন্তু বিজয়ের স্বাদ তো পান-ই নি। বরং সারাজীবনের অর্জন ধুলিস্যাৎ হয়ে গেছে।
ভোটের মাঠে গুঞ্জন ছিল– এই দুই নেতা সরকারের ঘনিষ্ঠ মহলের আশীর্বাদ নিয়ে ভোটযুদ্ধে নেমেছেন। নির্বাচন বর্জনকারী বিএনপি নেতাকর্মীদের সমর্থন-সহযোগিতাও তাদের পক্ষে যাওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে। এসব সামনে রেখে ভোটারদের কাছে তারা ‘হেভিওয়েট প্রার্থী’ হিসেবে আলোচনার কেন্দ্রে ছিলেন। শেষ পর্যন্ত পরাজয়ের গ্লানি থেকে রক্ষা পাননি তারা। জামানত হারাতে হয়েছে দুই দলের দুই শীর্ষ নেতাকে।
স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে, বিএনপির সাবেক নেতাদের নিয়ে গঠিত তৃণমূল বিএনপি পরিচিতি পায় ‘কিংস পার্টি’ হিসেবে। দলের চেয়ারপারসন শমসের মবিন চৌধুরী ছিলেন বিএনপির ভাইস চেয়ারম্যান।
দ্বাদশ সংসদ নির্বাচনে সিলেট-৬ (বিয়ানীবাজার ও গোলাপগঞ্জ) আসন থেকে সোনালি আঁশ প্রতীক নিয়ে লড়েন শমসের মবিন চৌধুরী। তার প্রতিদ্বন্দ্বী ছিলেন আওয়ামী লীগ মনোনীত নুরুল ইসলাম নাহিদ, ঈগল প্রতীকের স্বতন্ত্র প্রার্থী সরওয়ার হোসেনসহ ছয়জন। ভোটারদের আলোচনার কেন্দ্রে ছিলেন নাহিদ, সারোয়ার ও শমসের।
গত রোববার অনুষ্ঠিত এবারের নির্বাচনের ভোটের ফলে নুরুল ইসলাম নাহিদ ৫৭ হাজার ৭৭৮ ভোট পেয়ে বিজয়ী হন। তার নিকটতম প্রতিদ্বন্দ্বী সরওয়ার হোসেন পেয়েছেন ৩৯ হাজার ৪৮৮ ভোট। ১০ হাজার ৯৩৬ ভোট পেয়ে জামানত বাজেয়াপ্ত হয়েছে তৃণমূল বিএনপির চেয়ারপারসন শমসের মবিন চৌধুরীর।
পরাজয়ের কারণ সম্পর্কে জানতে চাইলে শমসের মবিন চৌধুরী বলেন, নির্বাচন নিয়ে ব্যক্তিগত কোনো বক্তব্য এখন দিচ্ছি না। আগামী সপ্তাহে দলীয়ভাবে আমরা বক্তব্য দেব।
একাদশ সংসদ নির্বাচনে সিলেট-২ (বিশ্বনাথ ও ওসমানীনগর) আসন থেকে সংসদ সদস্য নির্বাচিত হন গণফোরামের নির্বাহী সভাপতি মোকব্বির খান। এবারও তিনি এই আসন থেকে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করেছেন। উদীয়মান সূর্য প্রতীক নিয়ে ১ হাজার ৯২২ ভোট পেয়ে জামানত হারিয়েছেন তিনি। জয়ী প্রার্থী আওয়ামী লীগ মনোনীত শফিকুর রহমান চৌধুরী পেয়েছেন ৭৮ হাজার ৩৮৮ ভোট। তার নিকটতম প্রতিদ্বন্দ্বী স্বতন্ত্র প্রার্থী মুহিবুর রহমান পেয়েছেন ১৬ হাজার ৬৬১ ভোট।
অনুসন্ধানে জানা গেছে, গতবার সিলেট-২ আসনে আওয়ামী লীগ প্রার্থী দেয়নি। মোকাব্বিরের বিপরীতে শক্ত প্রতিদ্বন্দ্বী ছিলেন বিএনপি নেতা এম ইলিয়াস আলীর স্ত্রী তাহসিনা রুশদীর লুনা ও মহাজোটের একসময়ের শরিক জাতীয় পার্টির (জাপা) ইয়াহইয়া চৌধুরী। লুনার প্রার্থিতা না টেকার কারণে কপাল খুলে মোকাব্বির খানের। বিএনপির ভোট মোকাব্বিরের পক্ষে চলে যায়।
তিনি সহজেই জয়ের মালা পরেন। এবারও সেই আশায় ভোটের মাঠে ছিলেন। এই আসনে মোকাব্বির ছাড়াও জামানত হারিয়েছেন জাতীয় পার্টির ইয়াহইয়া চৌধুরী, তৃণমূল বিএনপির মো. আবদুর রব, ন্যাশনাল পিপলস পার্টির (এনপিপি) মো. মনোয়ার হোসাইন, বাংলাদেশ কংগ্রেসের মো. জহির। তারা বিএনপি সমর্থক ভোটারদের বিপুল সমর্থনের প্রত্যাশা করেছিলেন। পাশাপাশি সরকারের ঘনিষ্ঠ মহল জিতিয়ে আনার জন্য কাজ করবে– এমন ভাবনায় বিভোর ছিলেন। কিন্তু বাস্তবে তার কোনোটিই ঘটেনি।
পরাজয়ের কারণ হিসেবে গণফোরামের নির্বাহী সভাপতি মোকাব্বির খান বলেন, সরকার ও নির্বাচন কমিশনের কথায়-কাজে মিল পাওয়া যায়নি। আমরা প্রতারিত হয়েছি