শেখ রাসেলকে নিয়ে সিনেমা, যে নামটি পছন্দ পরিচালকের
দৈনিকসিলেটডেস্ক
১৯৬৪ সালের ১৮ অক্টোবর। ধানমন্ডির ৩২ নম্বর সড়কে বঙ্গবন্ধুর ঐতিহাসিক বাড়ি আলোকিত করে জন্ম নেয় এক ফুটফুটে শিশু। জন্মের সময় শিশুটি কাছে পায়নি বাবাকে। তবে জন্মের সময় বাবাকে কাছে না পেলেও ’৭৫ সালের ১৫ আগস্ট পিতা-পুত্রের চিরপ্রস্থান ঘটেছিল একসঙ্গেই।
বলা হচ্ছে, বঙ্গবন্ধুর পরিবারের সর্বকনিষ্ঠ সদস্যের কথা। বিখ্যাত ব্রিটিশ দার্শনিক ও নোবেলজয়ী বাট্রান্ড রাসেলের নাম অনুসারে পরিবারের সর্বকনিষ্ঠ সদস্যের নাম রাসেল রেখেছিলেন বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান। এই নাম ঘিরে নিশ্চয়ই বঙ্গবন্ধুর কোনো স্বপ্ন বা আকাঙ্ক্ষা ছিল। ছেলেও বড় হয়ে এদনি জগৎখ্যাত হয়ে উঠবে। কিন্তু সব থেমে যায় পচাত্তরের কালরাতে।
রাসেল তখন ঢাকার ইউনিভার্সিটি ল্যাবরেটরি স্কুলের চতুর্থ শ্রেণির ছাত্র। তাকে নিয়ে চলচ্চিত্র নির্মাণের ঘোষণা দিলেন সালমান হায়দার। যেখানে উঠে আসবে শেখ রাসেলের শৈশব ও আর্তনাদ। থাকবে শেখ পরিবারের আর্তনাদও।
ইতোমধ্যে এই সিনেমার পারিশ্রমিক নিয়ে তোলপাড় সিনেপাড়ায়। ১০০ টাকা পারিশ্রমিকে এই সিনেমায় শেখ হাসিনার চরিত্রে অভিনয় করবেন অপু বিশ্বাস। আর শেখ হাসিনার স্বামীর চরিত্রে অর্থাৎ এম এ ওয়াজেদ মিয়ার চরিত্রে অভিনয় করবেন অভিনেতা ও আইনজীবী আমান রেজা।
সিনেমার পরিচালক সালমান হায়দারের জানান সিনেমা সম্পর্কিত তথ্য।
কবে থেকে এই সিনেমা নির্মাণে কাজ শুরু করেন?
সালমান হায়দার: এই চলচ্চিত্র নির্মাণে ২০১৭ সালে প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ে চিঠি দিয়েছিলাম। কিন্তু পরে আমার দুইবার স্ট্রোক হয়। করোনা মহামারিতে কোভিড-১৯-এ আক্রান্ত হই। তাই সিনেমাটি তৈরি করতে দেরি। আশা করছি, এবার কাজটি সম্পন্ন হবে।
সিনেমার বিষয়ে প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ে থেকে অনাপত্তিপত্র দেয়া হয়েছে। সেই সঙ্গে কিছু দিক-নির্দেশনা ও সংশোধনীও দেয়া হয়।
গল্প এগিয়েছে কীভাবে?
সালমান হায়দার: সিনমায় গল্পটা ’৭২ থেকে ’৭৫-এর মধ্যে শেষ হবে। দর্শকরা পর্দায় ছোট্ট রাসেলকে খুঁজে পাবেন। থাকবে রাসেলের বেড়ে ওঠা থেকে প্রস্থান। ইমরান, আদিল, জিতুরা ছিল তার বন্ধু; তাদের সঙ্গেই রাসেলের বেড়ে ওঠা।
কবে শ্যুটিং শুরু করছেন?
সালমান হায়দার: ১৫ আগস্ট বাংলাদেশের জন্য কালরাত। আর ২১ আগস্ট গ্রেনেড হামলা ঘটে। তাই ২২ আগস্ট থেকেই শ্যুটিং শুরুর সিদ্ধান্ত নিয়েছি।
এখন পর্যন্ত এ সিনেমার চূড়ান্ত নাম জানা যায়নি। দুইটি নাম শোনা যাচ্ছে। নামের বিষয়ে কী সিদ্ধান্ত নিলেন?
সালমান হায়দার: শেখ রাসেলের আর্তনাদ কিংবা আমি মায়ের কাছে যাব— এই দুই নামের মধ্যে আমি মায়ের কাছে যাব বেশি পছন্দ আমার। কারণ, ১৫ আগস্টে মূলত পুরো শেখ পরিবারেরই আর্তনাদ। সেদিনের ঘটনায় বঙ্গবন্ধুর আর্তনাদ রয়েছে, শেখ কামাল, শেখ জামাল, সুলতানা কামালসহ সকল শহীদেরই আর্তনাদ আছে। তবে শেখ রাসেল যে বারবার বলেছিলেন, ‘আমাকে ছেড়ে দাও, আমি মায়ের কাছে যাব’। তার এই আকুতিকেই আমি সিনেমাটির নামের মধ্যে ধারণ করতে চাচ্ছি। যদিও নামের বিষয়ে এখনও চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত হয়নি।
শ্যুটিং হতে পারে কোথায় কোথায়?
সালমান হায়দার: শুরুতেই টুঙ্গিপাড়ায় বঙ্গবন্ধুর বাড়িতে শ্যুটিং করার পরিকল্পনা রয়েছে। ছোটবেলায় রাসেল সেখানে যেত। তার বন্ধুদেরকে চকলেট দিত, এক টাকা করে দিত।
এছাড়া, শেখ রাসেলের চাচা আবু নাসের তাকে অনেক আদর করতেন। তার চরিত্রের কিছু কাজ রয়েছে। গ্রামের বাচ্চাদের সাথেও রাসেলের কিছু কাজ আছে। সেগুলো মূলত টুঙ্গিপাড়াতেই শ্যুটিং হবে।
রাসেলের চরিত্রে থাকছেন কে?
সালমান হায়দার: এখন ঠিক হয়নি। খোঁজা হচ্ছে। সিনেমাটি নির্মাণের সিদ্ধান্তের পরে একজনকে পছন্দ হয়েছিল। তবে সে এখন অনেক বড় হয়ে গেছে।
শেখ হাসিনার চরিত্রে অভিনয় করতে যাওয়া অপু বিশ্বাস ১০০ টাকা পারিশ্রমিক নিচ্ছেন। অন্য যারা আছে তারা কেমন পারিশ্রমিক নিচ্ছেন?
সালমান হায়দার: আসলে স্ক্রিপ্ট দেখে কেউ পারিশ্রমিক নিতে চাননি। তবুও নামমাত্র ১০০ টাকা পারিশ্রমিক দিয়েছি অপু বিশ্বাসকে।
অপুর বিপরীতে আমান রেজাই তো থাকছেন?
সালমান হায়দার: হ্যাঁ। ওয়াজেদ মিয়ার চরিত্রে তাকে নেয়া হয়েছে। তিনিই মূলত এই সিনেমার নায়ক।
শেখ মুজিব ও শেখ ফজিলাতুন্নেছার চরিত্রে কারা অভিনয় করবেন?
সালমান হায়দার: এখনও চূড়ান্ত হয়নি। কয়েকজনকে ভেবেছি। তাদের সাথে কথা বলে সিদ্ধান্ত নেবো।
এই সিনেমা ছাড়া এখন আর কোনো কাজে জড়িত কি?
সালমান হায়দার: আরও কয়েকটি কাজ হাতে রয়েছে। এরমধ্যে একটি সিনেমা আছে। যেটির নাম ‘দেহ’। এই সিনেমারও সেখানেও মূল চরিত্রে থাকছেন অপু বিশ্বাস।