‘কেন্দ্রীয় মুসলিম সাহিত্য সংসদ এ অঞ্চলের ঐতিহ্য ও গৌরবের প্রতীক’
দৈনিকসিলেটডটকম
দেশের প্রাচীন সাহিত্য প্রতিষ্ঠান কে›ন্দ্রীয় মুসলিম সাহিত্য সংসদের (কেমুসাস) ৮৭ বর্ষের বার্ষিক সাধারণ সভা অনুষ্ঠিত হয়েছে। বৃহস্পতিবার রাতে নগরীর দরগাহ গেইটের শহীদ সোলেমান হলে প্রতিষ্ঠানের পৃষ্ঠপোষক ও জীবন সদস্যদের অংশগ্রহণের মধ্য দিয়ে এই সাধারণ সভা অনুষ্ঠিত হয়।
অনুষ্ঠানে বক্তারা বলেন, কেন্দ্রীয় মুসলিম সাহিত্য সংসদ এই অঞ্চলের ঐতিহ্য ও গৌরবের প্রতীক। প্রতিষ্ঠার ৮৭ বছরে এ প্রতিষ্ঠান দেশের সাহিত্য-সাংস্কৃতিক আন্দোলনের পাশাপাশি ভাষা আন্দোলন ও মহান মুক্তিযুদ্ধে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রেখেছে। বর্তমান কমিটি পূর্বপুরুষদের রেখে যাওয়া এই প্রতিষ্ঠানকে আমানত হিসেবে সংরক্ষণ ও রক্ষণাবেক্ষণ করছে। নতুন লেখক ও পাঠক সৃষ্টির লক্ষ্যে বিশাল পাঠাগার পরিচালনা, নিয়মিত সাপ্তহিক সাহিত্য আসর, সভা-সেমিনারের আয়োজন ও সমৃদ্ধ জাদুঘর উন্মোক্ত করার মাধ্যমে সমাজে সাহিত্যবোধ সৃষ্টি করছে। সকলের অব্যাহত সহযোগিতা থাকলে এ প্রতিষ্ঠানের কার্যক্রম আরও গতিময় ও প্রাণবন্ত হয়ে উঠবে।
কেন্দ্রীয় মুসলিম সাহিত্য সংসদের সভাপতি এম এ করিম চৌধুরীর সভাপতিত্বে সভায় বার্ষিক প্রতিবেদন পেশ করেন কেন্দ্রীয় মুসলিম সাহিত্য সংসদের সাধারণ সম্পাদক সৈয়দ মবনু।
কেমুসাসের কার্যকরী পরিষদ সদস্য গল্পকার সেলিম আউয়াল ও ফায়যুর রাহমানের সঞ্চালনায় সভায় স্বাগত বক্তব্য দেন বার্ষিক সাধারণ সভা বাস্তবায়ন কমিটির আহবায়ক দেওয়ান মাহমুদ রাজা চৌধুরী। সভার শুরুতে পবিত্র কুরআন তেলাওয়াত করেন শামসীর হারুনুর রশীদ। শোকপ্রস্তাাব পাঠ করেন কেমুসাসের পাঠাগার সম্পাদক সৈয়দ মোহাম্মদ তাহের। বিগত বছরের বার্ষিক সাধারণ সভার কার্যবিবরণী পাঠ করেন কার্যকরী পরিষদ সদস্য এডভোকেট কামাল তৈয়ব। ২০২৩ সালের আয়-ব্যয় ও ২০২৪ সালের বাজেট উপস্থাপন করেন কেমুসাসের কোষাধ্যক্ষ ছয়ফুল করিম চৌধুরী হায়াত।
সাধারণ সম্পাদকের বার্ষিক প্রতিবেদনের উপর উন্মোক্ত আলোচনায় অংশ নেন জীবন সদস্য এডভোকেট মোহাম্মদ রুহেল, নূর আহমদ, কামাল আহমদ, রুহুল ফারুক, হুসনে আরা কলি, এম এ মালেক চৌধুরী, মো. আবদুল বাসিত বাসন, শামসীর হারুনুর রশীদ, এডভোকেট আবদুল মালিক, দেওয়ান গাজী আব্দুল কুদ্দুছ শামশাদ, সৈয়দ বদরুল আলম, আবদুল কাদের তাপাদার, মাসহুদুল হুদা খান, ইশরাক জাহান জেলি, পৃষ্ঠপোষক সদস্য সালেহ আহমদ খসরু, জীবন সদস্য তাসলিমা খানম বীথি, জালাল আহমদ খালিছদার, আব্দুল মঈদ চৌধুরী, অধ্যক্ষ মো. ফয়জুল হক, লোকমান হাকিম, আব্দুর রকিব ও মো. আব্দুল্লাহ।
পৃষ্ঠপোষক ও জীবন সদস্যদের বক্তব্যের প্রেক্ষিতে সাধারণ সম্পাদকের জবাবী বক্তব্য প্রদান করেন কেমুসাসের সাধারণ সম্পাদক সৈয়দ মবনু।
সভাপতির বক্তব্যে কেন্দ্রীয় মুসলিম সাহিত্য সংসদের সভাপতি এম এ করিম চৌধুরী বলেন, জ্ঞানচর্চার মাধ্যমে আলোকিত সমাজ বিণির্মাণে কেমুসাস কাজ করে যাচ্ছে। ২০২৩-২০২৪ সালের কার্যকরী পরিষদ দায়িত্ব গ্রহণের পর থেকে সকলের সহযোগিতায় কেমুসাসকে এগিয়ে ন্ওেয়ার লক্ষ্যে আন্তরিকভাবে কাজ করে যাচ্ছে। এ প্রতিষ্ঠানের কার্যক্রম আরও গতিময় ও প্রাণবন্ত করতে তিনি সকলের সহযোগিতা কামনা করেন।
বার্ষিক প্রতিবেদনে সাধারণ সম্পাদক সৈয়দ মবনু বলেন, বিগত বছরে এই প্রতিষ্ঠানে বিভিন্ন সাহিত্য-সাংস্কৃতিক প্রোগ্রামের পাশাপাশি ডিজিটাল লাইব্রেরি কার্যক্রমকে এগিয়ে নিতে ইতোমধ্যে ডাটা এন্ট্রির কাজ সম্পন্ন হয়েছে। প্রতিষ্ঠানের ওয়েবসাইট তৈরি হয়েছে। মহিলাদের নামাজের জায়গার ব্যবস্থা করা হয়েছে। পাঠাগারে নতুন বই কেনার পাশাপাশি পুরনো ও দুর্লভ বইগুলো সংরক্ষণের উদ্যোগ ন্ওেয়া হয়েছে। নিয়মিত আল ইসলাহ প্রকাশিত হচ্ছে। সাহিত্য আসর পরিচালিত হচ্ছে। সকলের সহযোগিতা পেলে এই কার্যক্রম আরও গতিময় হয়ে উঠবে।
অনুষ্ঠানের প্রথম পর্বে দেওয়ান আহবাব পরিবারের পক্ষ থেকে বিশিষ্ট গবেষক প্রফেসর নন্দলাল শর্মাকে কেমুসাস দেওয়ান আহবাব স্বর্ণপদক তুলে দেওয়া হয়। এ সময় বক্তব্য দেন দেওয়ান আহবাব স্বর্ণপদক বাস্তবায়ন কমিটির সভাপতি হারুনুজ্জামান চৌধুরী ও সদস্য দেওয়ান মাহদি।
কেমুসাস দেওয়ান আহবাব স্বর্ণপদকপ্রাপ্ত গবেষক প্রফেসর নন্দলাল শর্মা বলেন, এ সম্মান আমার জন্য সৌভাগ্য ও গৌরবের। আমাকে এই পুরস্কারের জন্য বিবেচনা করায় আমি কৃতজ্ঞ।