সিলেটে আন্তর্জাতিক কাস্টমস দিবস- ২০২৪ উদযাপন

দৈনিকসিলেটডটকম
কাস্টমস, এক্সাইজ ও ভ্যাট কমিশনারেট সিলেট কর্তৃক নানা আয়োজনে আন্তর্জাতিক কাস্টমস দিবস-২০২৪ উদযাপন করা হয়েছে। দিবসটি উপলক্ষে শুক্রবার সন্ধ্যায় মেন্দিবাগস্থ অফিসে একটি সেমিনার অনুষ্ঠিত হয়েছে। এছাড়াও তামাবিল স্থল শুল্ক স্টেশন, শেওলা স্থল শুল্ক স্টেশন, জকিগঞ্জ স্থল শুল্ক স্টেশন এবং বড়ছড়া স্থল শুল্ক স্টেশন-এ আলোচনা সভাসহ নানা আয়োজনে দিবসটিকে উদযাপন করা হয়।
সিলেটস্থ সদর দপ্তরে কমিশনার মোহাম্মদ এনামুল হক এর সভাপতিত্বে সেমিনারটি অনুষ্ঠিত হয়। সেমিনারে প্রধান অতিথির বক্তব্যে সৈয়দ মোহাম্মদ আবু দাউদ, সদস্য(কর প্রশাসন ও মানব সম্পদ ব্যবস্থাপনা), জাতীয় রাজস্ব বোর্ড বলেন, বাংলাদেশ কাস্টমস রাজস্ব আদায়ের পাশাপাশি রাষ্ট্রীয় নিরাপত্তায় ঝুঁকি ও চোরাচালান প্রতিরোধ, জনস্বাস্থ্য সুরক্ষা, জীব ও বৈচিত্র্যে পরিবেশ ভারসাম্য রক্ষা, বাণিজ্য সহজীকরণ ও বিনিয়োগ বৃদ্ধি, দেশীয় শিল্পের বিকাশ ও রপ্তানি উন্নয়ন সর্বোপরি আন্তর্জাতিক বাণিজ্যে দেশীয় অবস্থান সুসংহতকরণ ও স্বার্থ রক্ষায় কাজ করে যাচ্ছে।
বিশেষ অতিথি কর্ণেল এএইচএম ইয়াসীন চৌধুরী, পিএইচডি; সেক্টর কমান্ডার, বর্ডারগার্ড বাংলাদেশ, সেক্টর সদর দপ্তর, শ্রীমঙ্গল ; কর অঞ্চল, সিলেটের কর কমিশনার সৈয়দ জাকির হোসেন; সিলেট মেট্রোপলিটন পুলিশের অতিরিক্ত পুলিশ কমিশনার মুঃ মাসুদ রানা; দি সিলেট চেম্বার অব কমার্স এন্ড ইন্ডাস্ট্রির সিনিয়ন সহ সভাপতি ফালাহ উদ্দিন আলী আহমদ এবং সিলেট উইমেন্স চেম্বার অব কমার্স এন্ড ইন্ডাস্ট্রির সভাপতি জনাব স্বর্ণলতা রায়ও উপস্থিত ছিলেন। সেমিনারে স্বাগত বক্তব্য উপস্থাপন করেন কাস্টমস, এক্সাইজ ও ভ্যাট কমিশনারেট সিলেটের অতিরিক্ত কমিশনার মুহাম্মদ রাশেদুল আলম ।
মূল প্রবন্ধ উপস্থাপনে কাস্টমস, এক্সাইজ ও ভ্যাট কমিশনারেট সিলেটের যুগ্ম কমিশনার মোঃ জাহাঙ্গীর আলম উল্লেখ করেন, ২০২৪ সালের আন্তর্জাতিক কাস্টমস দিবসের প্রতিপাদ্য নির্ধারণ করেছে Customs Engaging Traditional and New Partners with Purpose অর্থাৎ “মিলে নবীন-পুরনো অংশীজন/কাস্টমস করবে লক্ষ্য অর্জন”। বাংলাদেশ কাস্টমস নবীন-পুরনো অংশীজনদের মধ্যে মেলবন্ধন স্থাপনের বিষয়টির গুরুত্বারোপ করে বিশ্বের অন্যান্য দেশের ন্যায় আন্তর্জাতিক কাস্টমস দিবস, ২০২৪ উদযাপন করছে। বিশ্ব বাণিজ্যের উন্নয়ন সহজীকরণ, সরলীকরণ, উদারীকরণ এবং কার্যকর সীমান্ত ব্যবস্থাপনার লক্ষ্য ও উদ্দেশ্যকে সামনে রেখে এই দিবস পালন করা হয় এবং General Agreement on Tariffs and Trade (GATT) সংক্রান্ত নীতিমালা বিশ্লেষণের লক্ষ্যে ১৯৪৭ সালে ১৩টি ইউরোপিয়ান দেশ কর্তৃক একটি স্টাডি গ্রুপ তৈরির সিদ্ধান্ত গৃহীত হয়। এই সিদ্ধান্তের আলোকে Customs Co-operation Council (CCC) গঠিত হয়। এর প্রথম আন্তর্জাতিক সভা ১৯৫৩ সালের ২৬ জানুয়ারি ব্রাসেলসে অনুষ্ঠিত হয়। এই সংস্থাটি ১৯৯৪ সালে World Customs Organization (WCO) নামে আত্মপ্রকাশ করে। Customs Co-operation Council এর প্রথম সভার দিনটিকে স্মরণীয় করে রাখার অভিপ্রায়ে ২০০৯ সাল হতে প্রতি বছর ২৬ জানুয়ারি বিশ্বব্যাপী আন্তর্জাতিক কাস্টমস দিবস উদযাপিত হচ্ছে। উল্লেখ্য ১৯৯৪ সাল হতে বাংলাদেশ WCO এর সক্রিয় সদস্য।
সেমিনারে বিশেষ অতিথি হিসেবে বক্তারা উল্লেখ করেন যে, কাস্টমস ব্যবস্থাপনায় তথ্যপ্রযুক্তির সফল প্রয়োগ, আধুনিক ও স্বয়ংক্রিয় ব্যবস্থাপনা, উদ্ভাবনী পদ্ধতির প্রয়োগ এবং আন্তর্জাতিক ও অভ্যন্তরীণ অংশীজনের পারস্পরিক মিথষ্ক্রিয়ায় বৈশ্বিক করোনার প্রভাবকে মোকাবেলা করে শক্তিশালী অর্থনৈতিক কাঠামো গঠনে কাস্টমস গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করছে। কাস্টমস তথা রাজস্ব বিভাগ তার সামগ্রিক প্রচেষ্টায় অর্থনীতির ক্ষতি পুষিয়ে নতুনভাবে ব্যবসা-বাণিজ্যের প্রসার ও বৃদ্ধি এবং টিকে থাকার লড়াইয়ের মাধ্যমে টেকসই সাপ্লাই চেইন ব্যবস্থা নিশ্চিত করবে। এছাড়া বিশেষভাবে কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তার উপর গুরুত্ব আরোপ করে বলেন ভবিষ্যৎ কাস্টমস আধুনিকায়নে এবং বাণিজ্য সহজীকরণে কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করবে।
সভাপতি তার বক্তব্যে- ডিজিটাল বাংলাদেশ হতে স্মার্ট বাংলাদেশে উত্তরণে ও দেশের জনগণকে সেবা প্রদানের ক্ষেত্রে বাংলাদেশ কাস্টমস-এর কতিপয় উল্লেখযোগ্য কার্যক্রম উল্লেখ করেন। এ সকল কার্যক্রমের মধ্যে দেশীয় শিল্পের বিকাশ , বৈদেশিক বিনিয়োগে উৎসাহিতকরণ , রপ্তানি উন্নয়ন ও নির্বিঘ্নকরণ , বাণিজ্য সহজীকরণ: বাণিজ্য সহজীকরণের জন্য – ASYCUDA World , Time Release Study (TRS) পরিচালনা , Authorized Economic Operator (AEO) , পণ্যচালানের Pre-Arrival Processing ইত্যাদি উল্লেখযোগ্য। পরিশেষে সভার সভাপতি সেমিনারে উপস্থিত প্রধান অতিথি, বিশেষ অতিথিবৃন্দ, আমন্ত্রিত অন্যান্য অতিথিবৃন্দসহ উপস্থিত সকলকে ধন্যবাদ জ্ঞাপনের মধ্য দিয়ে সেমিনারে সমাপ্তি ঘোষণা করেন।