ওসমানী হাসপাতালকে দুর্নীতিমুক্ত করার দাবিতে সিকস’র স্মারকলিপি
দৈনিকসিলেট ডটকম
বৃহত্তর সিলেটের অরাজনৈতিক কল্যাণমূলক স্বেচ্ছািেসবী সামাজিক সংগঠন সিলেট কল্যাণ সংস্থা (সিকস), সিকস’র অঙ্গ সংগঠন সিলেট বিভাগ যুব কল্যাণ সংস্থা (সিবিযুকস) ও বাংলাদেশী প্রবাসীদের সবধরনের দাবি উপস্থাপনের বলিষ্ঠ সংগঠন সিলেট প্রবাসী কল্যাণ সংস্থা (সিপ্রকস) এর যৌথ উদ্যোগে রোববার (২৮ জানুয়ারী) বেলা ১২টায় সিলেট এম.এ.জি ওসমানী মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল থেকে জনদূর্ভোগ লাঘব ও দুর্নীতিমুক্ত করার দাবীতে ওসমানী হাসপাতালের পরিচালক বরাবরে সিলেট স্মারকলিপি প্রদান করা হয়। পরিচালকের পক্ষে স্মারকলিপি গ্রহন করেন ওসমানী হাসপাতালের উপ-পরিচালক ডাঃ সৌমিত্র চক্রবর্ত্তী।
সংস্থাগুলোর প্রতিষ্ঠাতা সভাপতি ও সিলেট কল্যাণ সংস্থার কার্যকরী কমিটির সভাপতি মোহাম্মদ এহছানুল হক তাহেরের নেতৃত্বে স্মারকলিপি প্রদানকালে উপস্থিত ছিলেন সিকস’র কার্যকরী কমিটির সহ-সাধারণ সম্পাদক ও সিবিযুকস’র মহানগর কমিটির সভাপতি হুমায়ুন রশিদ চৌধুরী, ও সিবিযুকস’র বিভাগীয় কমিটির সভাপতি আলহাজ্জ মুখতার আহমেদ তালুকদার, সিকস’র কার্যকরী কমিটির সদস্য ও সিবিযুকস’র বিভাগীয় কমিটির সিনিয়র সহ-সভাপতি মোঃ নাজমুল হুসাইন, সহ-সাধারণ সম্পাদক মোহাম্মদ সাজ্জাদ খান, সহ-সাংগঠনিক সম্পাদক মোঃ মকবুল চৌধুরী, প্রচার সম্পাদক মোঃ ফুজায়েল আহমদ, সিবিযুকস’র জেলা কমিটির সভাপতি হাজী মোঃ আশরাফ উদ্দিন, সাংগঠনিক সম্পাদক মাহফুজ আল গালিব, সহ-সাংগঠনিক সম্পাদক মোঃ উজ্জল আহমদ, প্রচার সম্পাদক মোহাম্মদ আলী, সিবিযুকস’র মহানগর কমিটির সাংগঠনিক সম্পাদক সৈয়দ রাসেল, প্রচার সম্পাদক দিপক কুমার মোদক বিলু, সাংগঠনিক নেতৃবৃন্দদের মধ্য থেকে উপস্থিত ছিলেন মানবাধিকার কর্মী তোফায়েল আহমদ, রফিকুল ইসলাম সিতাব, মকছুদুল মোমিন, মোহাম্মদ সাজ্জাদুজ্জামান বাবলু, ডাঃ মোঃ টুনু মিয়া আনছার, নাহিদুল ইসলাম পারভেজ ও শাহীন আহমেদ।
স্মারকলিপির বিষয়বস্তুঃ সিলেট বিভাগে চিকিৎসাক্ষেত্রে একমাত্র ভরসার নাম সিলেট এম.এ.জি ওসমানী মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল। পুরো দেশজুড়ে সিলেট অঞ্চলের ঐতিহ্যবাহী এই চিকিৎসা কেন্দ্রটির সুনাম ছড়িয়ে-ছিটিয়ে আছে। কিন্তু দুঃখজনক হলেও সত্য যে, এখন পুরো ভিন্ন পথে চলছে দেশের অন্যতম ও সিলেট বিভাগের সর্বসাধারণের একমাত্র ভরসার চিকিৎসাকেন্দ্র সিলেট এম.এ.জি ওসমানী মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল। সর্বস্তরের নাগরিকদের প্রধান চিকিৎসা কেন্দ্র ওসমানী হাসপাতালে চিকিৎসার নামে চলছে রমরমা ব্যবসা। অসহায় ও সর্বসাধারণ রোগীদের সরকারীভাবে চিকিৎসাসেবা সহ ফ্রি ঔষধ পাওয়ার কথা থাকলেও বর্তমানে তা পাচ্ছেন না রোগীরা। ওসমানী হাসপাতালের পুরো চিকিৎসা ব্যবস্থাকে ব্যবসায় পরিণত করা হয়েছে। সর্বাবস্থায় সর্বস্তরের প্রভাবশালী ব্যক্তিবর্গ ছাড়া আর কেউই চিকিৎসা সেবা গ্রহণ করতে পারছেন না। বিভিন্ন ওয়ার্ড ও কেবিনে পর্যাপ্ত সিট খালি থাকার পরও চিকিৎসা সেবা নিতে আসা রোগীদেরকে ওয়ার্ডের ফ্লোর, বারান্দা ও বাথরুমের পাশের খালি জায়গায় রাখা হচ্ছে। রোগীদের প্রতি চিকিৎসকদের মারাত্মক অবহেলা, অসহায় রোগীদের পরীক্ষা-নিরীক্ষা ওসমানী হাসপাতালের ল্যাবে না করিয়ে ডাক্তারদের কর্ন্টাককৃত ডায়গনষ্টিক সেন্টারের ¯িøপ দিয়ে তাদের নির্দেশমত বাহির থেকে পরীক্ষা-নিরীক্ষা করে আনার জন্য পাঠানো হয়, যা অত্যন্ত ব্যয়বহুল ও দুঃখজনক। পাশাপাশি গেইটে আনসার-দারোয়ানদের অনাকাঙ্খিত চাঁদা আদায় বাণিজ্য। হাসপাতালে আসা অস্বচ্ছল রোগীদেরকে হাসপাতালে থাকা সরকারী ঔষধ না দিয়ে বাহিরের ফার্মেসী থেকে ঔষধ ক্রয় করতে বাধ্য করা হয়। রোগীর স্বজনরা অসহায় ও নিরুপায় হয়ে ডাক্তার, নার্স, ব্রাদার, আয়া, বোয়া ও ওয়ার্ডের গেইটম্যান এর নির্দেশ এবং হুমকি দামকিতে বাহির থেকে আনতে বাধ্য হয়। এমনকি রোগীর কোন স্বজন সামান্য অভিযোগ করলে হাসপাতালের ওয়ার্ডে চিকিৎসা সেবায় কর্তব্যরতরা অকথ্য ভাষায় গালিগালাজ ও দুর্ব্যবহার করে। যথাসময়ে কর্তব্যরত চিকিৎসক না পাওয়ায় দূর-দূরান্ত থেকে আগত রোগীদের মারাত্মক ভোগান্তিতে পড়তে হয়। ওসমানী হাসপাতালে দুর্নীতি চরম পর্যায়ে পৌঁছে গেছে। অপারেশন থিয়েটারে রোগীকে ঢুকানোর পরপরই ভেতর থেকে শুধু অপারেশন সম্পৃক্ত ঔষধের একের পর এক স্লিপ ও প্রয়োজনীয়-অপ্রয়োজনীয় সার্জারী সামগ্রীর নাম লিখে দেওয়া হয়, যা রোগীর স্বজনরা বাধ্য হয়ে আনতে হয়। অপারেশন থিয়েটারের আশেপাশে ফার্মেসীর দালালরা সাধারণ রোগীদের স্বজনদের অসহায়ত্বের সুযোগ নিয়ে সর্বশান্ত করে ছাড়ে। আমরা সিলেটবাসী বড় অসহায় হয়ে চিকিৎসাসেবার কাছে জিম্মি হয়ে আছি। সিলেট বিভাগের প্রায় ২ কোটি মানুষের চিকিৎসার প্রধান ভরসাস্থল ওসমানী হাসপাতাল। চিকিৎসা সেবার মান উন্নত করতে হাসপাতাল থেকে জনদুর্ভোগ লাঘব ও দুর্নীতিমুক্ত করতে আপনার সুপরিকল্পিত পদক্ষেপ নিতে আমরা সিলেটবাসী আশা করি। ওসমানী হাসপাতালের চিকিৎসা সেবার মান উন্নত করতে সুষ্ঠু তদন্ত সাপেক্ষে হাসপাতাল থেকে জনদুর্ভোগ লাঘব ও দুর্নীতিমুক্ত করতে আপনার সুপরিকল্পিত পদক্ষেপ নিতে মর্জি হয়।