আল্লাহ ও রাসুল (সা.)-এর নির্দেশনা অনুসরণের প্রতিদান
দৈনিকসিলেট ডেস্ক :
মানবজাতির সাফল্য লাভের অন্যতম উপায় হচ্ছে আল্লাহ ও তাঁর রাসুল (সা.)-এর আনুগত্য করা এবং জীবনের সব ক্ষেত্রে কোরআন-হাদিসকে মেনে নেওয়া। মহান আল্লাহ বলেন, ‘বলে দাও! তোমরা আল্লাহর আনুগত্য করো এবং রাসুলের আনুগত্য করো। অতঃপর যদি তোমরা মুখ ফিরিয়ে নাও, তাহলে তার ওপর অর্পিত দায়িত্বের জন্য সে দায়ী এবং তোমাদের ওপর অর্পিত দায়িত্বের জন্য তোমরা দায়ী। আর তোমরা তার আনুগত্য করলে সৎপথ পাবে, রাসুলের কর্তব্য হচ্ছে শুধু স্পষ্টভাবে পৌঁছে দেওয়া।’ (সুরা : নূর, আয়াত : ৫৪)
রাসুলুল্লাহ (সা.)-এর আনুগত্য করলে আল্লাহরই আনুগত্য করা হয়। যেমন মহান আল্লাহ বলেন, ‘যে কেউ রাসুলের আনুগত্য করে থাকে, নিশ্চয়ই সে আল্লাহরই আনুগত্য করে থাকে।’ (সুরা : নিসা, আয়াত : ৮০)
জীবনের সব ধরনের আমল কোরআন-হাদিস মোতাবেক হতে হবে। এর মধ্যেই মানবতার সার্বিক সফলতা নিহিত আছে।
আর আমল কোরআন-সুন্নাহ অনুসরণে না হলে তা নিঃসন্দেহে বাতিল বলে গণ্য হবে। মহান আল্লাহ বলেন, ‘হে মুমিনরা! তোমরা আল্লাহর আনুগত্য করো এবং রাসুলুল্লাহ (সা.)-এর আনুগত্য করো, আর (তা না করে) তোমাদের আমলসমূহ বিনষ্ট কোরো না।’ (সুরা : মুহাম্মাদ, আয়াত : ৩৩)
রাসুলুল্লাহ (সা.) যা করতে আদেশ দিয়েছেন তা গ্রহণ করা এবং যা নিষেধ করেছেন তা বর্জন করা আবশ্যক। মহান আল্লাহ বলেন, ‘রাসুলুল্লাহ তোমাদের যা দেন, তা গ্রহণ করো এবং যা থেকে তোমাদের নিষেধ করেন তা থেকে বিরত থাকো।’ (সুরা : হাশর, আয়াত : ৭)
সব ক্ষেত্রে আল্লাহ ও তাঁর রাসুলের ফায়সালা মেনে নিতে হবে। এটাই মুসলমানদের সফলতার পথ। আর আল্লাহ ও তাঁর রাসুল (সা.)-এর বিরোধিতা ভ্রষ্টতার পথ। পবিত্র কোরআনে এসেছে, ‘আল্লাহ ও তাঁর রাসুল কোনো বিষয়ে ফায়সালা করলে কোনো মুমিন পুরুষ কিংবা মুমিন নারীর নিজেদের ব্যাপারে অন্য কোনো সিদ্ধান্তের ইখতিয়ার থাকবে না। কেউ আল্লাহ ও তাঁর রাসুলকে অমান্য করলে সে তো স্পষ্টই পথভ্রষ্ট হবে।’ (সুরা : আহজাব, আয়াত : ৩৬)
জীবনের প্রতিটি ক্ষেত্রে রাসুলুল্লাহ (সা.)-এর অমিয় বাণী গ্রহণ করলে বিশ্বের পথহারা মানুষ সঠিক পথ পাবে। মহান আল্লাহ বলেন, ‘অতএব, তোমার রবের শপথ! তারা কখনো মুমিন হতে পারবে না, যে পর্যন্ত তোমাকে তাদের অভ্যন্তরীণ বিরোধের বিচারক হিসেবে মেনে না নেবে, তৎপর তুমি যে বিচার করবে তা দ্বিধাহীন অন্তরে গ্রহণ না করবে এবং ওটা শান্তভাবে পরিগ্রহণ না করবে।’ (সুরা : নিসা, আয়াত : ৬৫)
আল্লাহ ও রাসুল (সা.)-কে অনুসরণের মাধ্যমেই মানবজাতি সর্বোত্তম মর্যাদা পাবে। পবিত্র কোরআনে এসেছে, ‘আর যে কেউ আল্লাহ ও রাসুলের অনুগত হয়, তবে তারা ওই ব্যক্তিদের সঙ্গী হবে, যাদের প্রতি আল্লাহ অনুগ্রহ করেছেন; অর্থাৎ নবীরা, সত্য সাধকরা, শহীদরা ও সৎকর্মশীলরা। আর এরাই সর্বোত্তম সঙ্গী।’ (সুরা : নিসা, আয়াত : ৬৯)
পক্ষান্তরে যে ব্যক্তি কোরআন-সুন্নাহর বিরুদ্ধাচরণ করবে সে জাহান্নামে যাবে। মহান আল্লাহ বলেন, ‘আর সুপথ প্রকাশিত হওয়ার পর যে রাসুলের বিরুদ্ধাচরণ করে এবং বিশ্বাসীদের বিপরীত পথের অনুগামী হয়, তবে সে যাতে অভিনিবিষ্ট আমি তাকে তাতেই প্রত্যাবর্তিত করব ও তাকে জাহান্নামে নিক্ষেপ করব। আর এটা নিকৃষ্টতর প্রত্যাবর্তন স্থল।’ (সুরা : নিসা, আয়াত : ১১৫)
কোরআন ও সুন্নাহর অনুসরণ করলে মানুষ সঠিক পথ পাবে, বিরোধিতা করলে পথভ্রষ্ট হবে। হুজায়ফা (রা.) বলেন, হে কোরআন পাঠকারীরা! তোমরা (কোরআন ও সুন্নাহর ওপর) সুদৃঢ় থেকো। নিশ্চয়ই তোমরা অনেক পশ্চাতে পড়ে আছ। আর যদি তোমরা ডান দিকের কিংবা বাঁ দিকের পথ অনুসরণ করো, তাহলে তোমরা সঠিক পথ থেকে বহু দূরে সরে পড়বে। (বুখারি, হাদিস : ৭২৮২)
কোরআন-সুন্নাহ আঁকড়ে ধরলেই মানবজাতি ধ্বংসের পথ থেকে বেঁচে যাবে। আর কোরআন-সুন্নাহ মজবুতভাবে আঁকড়ে না ধরলে এবং নিজের খেয়ালখুশিমতো চললে মানুষ অবশ্যই পথভ্রষ্ট হবে। মহান আল্লাহ বলেন, ‘অতঃপর যদি তারা তোমার আহ্বানে সাড়া না দেয়, তাহলে জানবে যে তারা তো শুধু নিজেদের খেয়ালখুশির অনুসরণ করে। আল্লাহর পথনির্দেশ অগ্রাহ্য করে যে ব্যক্তি নিজ খেয়ালখুশির অনুসরণ করে, সে ব্যক্তি অপেক্ষা বেশি পথভ্রষ্ট আর কে? আল্লাহ জালিম সম্প্রদায়কে পথনির্দেশ করেন না।’ (সুরা : কাসাস, আয়াত : ৫০)
কোরআন-সুন্নাহ জানার পরও যদি কোনো ব্যক্তি নিজের খেয়ালখুশিমতো চলে এবং সত্য বিষয় জানার পরও যদি বেশির ভাগ মানুষ যেদিকে চলছে সেদিকে চলে, তাহলে সে পথভ্রষ্ট হবে। মহান আল্লাহ তাআলা বলেন, ‘তুমি যদি দুনিয়ার বেশির ভাগ লোকের কথার অনুসরণ করো, তবে তারা তোমাকে আল্লাহর পথ থেকে বিভ্রান্ত করে ফেলবে, তারা তো নিছক ধারণা ও অনুমানেরই অনুসরণ করে। আর তারা ধারণা ও অনুমান ছাড়া কিছুই করছে না।’ (সুরা : আনআম, আয়াত : ১১৬)
মহান আল্লাহ আমাদের কোরআন-সুন্নাহ মোতাবেক জীবন পরিচালনা করার তাওফিক দান করুন।