চুনারুঘাটে কৃষিতে উৎপাদন বৃদ্ধি করতে রাইস ট্রান্সপ্লান্টার দিয়ে চারা রোপণ
নুর উদ্দিন সুমন
হবিগঞ্জের চুনারুঘাট উপজেলার সাটিয়াজুরী ইউনিয়নের দেউলগাঁও গ্রামে ২০২৩-২৪ অর্থবছরে কৃষি প্রণোদনা কর্মসূচির আওতায় রবি মৌসুমে ৫০ একর ব্লক প্রদর্শনীতে রাইস ট্রান্সপ্লান্টার যন্ত্রের মাধ্যমে চারা রোপণের উদ্বোধন করা হয়েছে। চুনারুঘাট উপজেলা উপজেলা কৃষি অধিদপ্তরের আয়োজনে মঙ্গলবার (৩০জানুয়ারি) দুপুরে সাটিয়াজুরী ইউনিয়নে রাইস ট্রান্সপ্লান্টার মেশিনে বোরো ধানের চারা রোপণ কার্যক্রম শুরু করা হয়। এ সময়ে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন, হবিগঞ্জ কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের জেলা প্রশিক্ষণ অফিসার মো: আশেক পারভেজ। উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা নীলিমা রায়হানার সভাপতিত্বে এতে বক্তব্য রাখেন উপজেলা কৃষি অফিসার মো: মাহিদুল ইসলাম। সাটিয়াজুরী ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান আব্দালুর রহমান। এসময় প্রধান অতিথি বলেন, মাননীয় প্রধানমন্ত্রী জননেত্রী শেখ হাসিনা সরকার কৃষিবান্ধব সরকার। কৃষিতে উৎপাদন বাড়াতে ব্যাপক প্রণোদনা ও সহায়তা প্রদান করছেন। বর্তমান রবি মৌসুমে হবিগঞ্জ জেলার চুনারুঘাট ও বানিয়াচং উপজেলায় বোরো হাইব্রিড সমলয়ের ৫০ একর ব্লক প্রদর্শনী বাস্তবায়ন হচ্ছে। কৃষিকে আধুনিককরণ করতে অনেক উন্নতমানের কৃষি যন্ত্রপাতি ৫০-৭০% ভর্তুকিতে কৃকৃষক পর্যায়ে বিতরণ হচ্ছে। অনুষ্ঠানের সভাপতি ইউএনও নীলিমা রায়হানা বলেন, স্মার্ট বাংলাদেশ গড়তে হলে কৃষিতে উৎপাদন বৃদ্ধি করতে হলে যন্ত্রের ব্যবহার বাড়াতে হবে। বর্তমান সরকার কৃষকদের জন্য সকল ধরনের সুযোগ -সুবিধা দিয়ে আসছে। স্বাগত বক্তব্য রাখেন, উপজেলা কৃষি অফিসার কৃষিবিদ মাহিদুল ইসলাম তিনি বলেন, বর্তমানে কৃষিকে বাণিজ্যিক বা ব্যাবসা হিসেবে গ্রহণ করতে হবে। কৃষিতে উৎপাদন বৃদ্ধি করতে, সঠিক সময়ে চারা রোপন, উৎপাদন খরচ কমানো, ফসলের নিবিড়তা বাড়ানো এবং শ্রমিক সংকট দুর করতে সমলয় পদ্ধতিতে চাষাবাদ করতে হবে, ফসল উৎপাদনের প্রতিটি ধাপেই যন্ত্র ব্যবহার করতে হবে। চুনারুঘাটে সমলয় কার্যক্রমের আওতায় এবার ৬০ জন কৃষক মোট ১৫০ বিঘা জমিতে উচ্চ ফলনশীল হাইব্রিড রুপালি ৭ জাতের চিকন জাতের বোরো চাষ করছে। সনাতন পদ্ধতির চেয়ে সমলয় প্রযুক্তি ব্যবহারে উৎপাদন খরচ তুলনামূলক অনেক কম হওয়ায় এ পদ্ধতি অনুসরণ করে চাষাবাদে আগ্রহী হচ্ছেন এখানকার কৃষকেরা। সমলয় চাষাবাদ পদ্ধতি হলো একটি নির্দিষ্ট মাঠে একই সময়ে একই জাতের ফসল চাষাবাদের মাধ্যমে ফসলের রোপণ ও কাটার সময় একই রাখা এবং উৎপাদন খরচ কমানো। একই সঙ্গে কৃষকদের সংগঠিত করে নতুন নতুন প্রযুক্তির সঙ্গে পরিচিত করা। সাধারণত এ পদ্ধতিতে ট্রেতে করে পলিথিনে মোড়ানো হাউজে বীজতলা তৈরি এবং যতেœর সঙ্গে মাত্র ২০-২২ দিনেই দিনেই রোপণের উপযোগী চারা প্রস্তুত করা যায়। সেইসব চারা রাইস ট্রান্সপ্লান্টারে লাইন লোগো পদ্ধতি ব্যবহার করে রোপণ করা হয় জমিতে। যাতে পর্যাপ্ত আলো-বাতাসে বেড়ে ওঠে ধানের চারা, সুবিধা হয় পরিচর্যায়। পোকা মাকড়ের প্রকোপ থেকে রক্ষা পেতে ব্যবহার করা হবে পার্চিং পদ্ধতি, খরচ কমাতে ব্যবহার করা হবে আধুনিক সেচের এডব্লিউডি (পর্যায়ক্রমিক শুষ্ক ও ভেজা) পদ্ধতি। রাইস ট্রান্সপ্লান্টারে ধানের চারা রোপণ কার্যক্রম দেখতে বিপুল সংখ্যক কৃষক-কৃষাণীরা উপস্থিত ছিলেন।