মানব কল্যাণে মহান পুরুষ প্রমথ নাথ দাসের ৪৬তম প্রয়াণ দিবস
![](https://dainiksylhet.com/images/icon.jpg)
বিয়ানীবাজার প্রতিনিধি
প্রমথ নাথ দাস। মানব কল্যাণে নিবেদিত এক মহান পুরুষ। মহাত্মা গান্ধীর অসহযোগের ডাকে অনুপ্রাণিত হয়েছিলেন। ভারত ছাড় আন্দোলনের পতাকা আকড়ে বরণ করেছিলেন কারাভোগ। দেশ ভাগের পর বিভিন্ন প্রতিক‚লতা সত্ত্বেও মাতৃভূমি ত্যাগের কথা ভাবেননি। ঘূর্ণিঝড়ে বিধ্বস্থ চট্টগ্রামের দূর্গতদের পাশেও দাঁড়িয়েছিলেন।
বর্তমান পঞ্চখন্ড হরগোবিন্দ সরকারি উচ্চ বিদ্যালয়ের সার্বিক উন্নয়ণে তাঁর অবদান চিরস্মরণীয়। এছাড়াও বিয়ানীবাজার সরকারি কলেজ, বিয়ানীবাজার বালিকা উচ্চ বিদ্যালয়ের ভূমিদাতা ও প্রতিষ্ঠাতা। মুড়িয়া হাওরে বাঁধ দিয়ে বোরো ধানের চাষ তিনিই প্রথম শুরু করেছিলেন।
বিয়ানীবাজারের দাসগ্রামে অবস্থিত কালাচাঁদ মিলন মন্দির তাঁরই হাতে গড়া ধর্মীয় প্রতিষ্ঠান। এখানের বানপ্রস্থ আশ্রমেই তিনি শেষ নিঃশ্বাস ত্যাগ করেন। এছাড়াও পঞ্চখন্ড রামকৃষ্ণ সেবাশ্রম, বাসুদেব মন্দির সহ অন্যান্য মন্দিরের উন্নয়নে তিনি গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করেন। শিক্ষা, সংস্কৃতি, ধর্ম, কৃষি ক্ষেত্রসহ বিচিত্রমুখী কর্মের এক মহান কর্মবীর ছিলেন। ১৯১৭ থেকে ১৯৭৮ সাল জুড়ে নিষ্ঠা ও পরোপকারিতার অনুপম উদাহরণ রচনা করে সেবা ধর্মের বৈভবে যেভাবে সমৃদ্ধ করেছেন সমাজকে। দুঃখজনক হলেও সত্য ১২ ফেব্রুয়ারি তাঁর প্রয়াণ দিবসে তার প্রতিষ্ঠিত শিক্ষা কিংবা ধর্মীয় প্রতিষ্ঠান গুলো স্মরণ করে না।
প্রসঙ্গত, ২০০৩ সালে তাঁর জীবন ও কর্ম কে স্মরণ করে অরুণাভ পাল চৌধুরী মোহনের সম্পাদনায় ‘প্রমথ নাথ দাস স্মারকগ্রন্থ’ প্রকাশিত হয়। নাট্য সংগঠন বিয়ানীবাজার সাংস্কৃতিক কমান্ড সাংস্কৃতিক কর্মকান্ডে অবদানের জন্য মরণোত্তর বিসাক নাট্যজন পদক প্রদান করেন। এছাড়াও, বিয়ানীবাজার পৌরসভার সাবেক মেয়র আব্দুস শুকুর তাঁর কর্মময় জীবনকে স্মরণ করে কলেজ রোডকে ‘প্রমথ নাথ দাস রোড’ এ নামকরণ করেন। এছাড়াও বিয়ানীবাজারের কিছু সংগঠন তাঁর প্রয়াণ দিবস দু’একবার পালন করলেও প্রতিবছর তা পালন করার উদ্যোগ কেউই এখন পর্যন্ত নেন নি। তাঁর প্রতিষ্ঠিত শিক্ষা প্রতিষ্ঠানগুলোতে তাঁর কোন ভাস্কর্যও নেই। শিক্ষক ও নাট্যকর্মী তন্ময় পাল চৌধুরী বলেন, বর্তমান প্রজন্ম তাঁর নাম ভুলে যাচ্ছে। যদি তাঁর প্রয়াণ দিবসটি প্রতিবছর পালন করা হত তাহলে এই প্রজন্ম জানতো আধুনিক বিয়ানীবাজারের রূপকারের কথা।এছাড়াও, স্মারক গ্রন্থটি পুনরায় প্রকাশ করে সবার মাঝে বিতরণ করলে তাঁর মহৎ কর্মের কথা সবাই জানতে পারতো।