তারকাদের বিয়ে এবং বিচ্ছেদ
দৈনিকসিলেটডেস্ক
বিয়ে সংসার সন্তান। সাধারণ মানুষের কাছে পরিপূর্ণ একজীবন। জীবনে হয়তো এরপর আর কিছুই চাওয়ার থাকে না অনেকের। কিন্তু এই পূর্ণতার মধ্যেও থাকে শূন্যতা! যার বেশির ভাগই থেকে যায় অজানা। জানা যায় শুধু তারকাদের ঘটনাগুলো। কারণ তাদের আছে ভক্তকুল। যারা মুখিয়ে থাকেন প্রিয় তারকার প্রতিদিনের খবর জানতে। ফলে তাকরাদের পরিপূর্ণ জীবনের শূন্যতাগুলো সাধারণ মানুষের কাছে ধরা দেয় হাহাকার হয়ে। যার একটি অংশ বিচ্ছেদ। অর্থকষ্ট নেই। নেই পরিচিতির অভাব। তবুও তারকাদের বিচ্ছেদ হয়। বিচ্ছেদটা আবার হয় সন্তানসহ! লিখেছেন ফয়সাল আহমেদ
মাহিয়া মাহি
২০২১ সালের ১৩ সেপ্টেম্বর রকিবকে বিয়ে করেন মাহি। তাদের ঘরে পুত্রসন্তান ফারিশ রয়েছে। সেই সংসারেও ভাঙনের গুঞ্জন শোনা যাচ্ছিল বেশ অনেক দিন ধরেই। অবশেষে তা নিশ্চিত হলো। শুক্রবার রাতে একটি ভিডিওবার্তা দিয়ে বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন মাহি। এরই মধ্যে তারা আলাদা থাকা শুরু করেছেন। নিজের ফেসবুকে ভিডিওবার্তায় মাহি বলেন, ‘আমরা দুজন মিলেই এমন সিদ্ধান্ত নিয়েছি। আমাদের মধ্যে কিছু বিষয় নিয়ে সমস্যা রয়েছে। তবে রকিব খুব ভালো মানুষ। তাকে আমি সম্মান করি। অনেক কেয়ারিং সে।’ কেঁদে মাহি বলেন, ‘খুব দ্রুতই আমরা আনুষ্ঠানিকভাবে বিচ্ছেদে যাচ্ছি। কবে আর কীভাবে হবে, সেটিও দুজন মিলেই ঠিক করব।’ ভিডিওর একপর্যায়ে মাহি তার সন্তানকে নিয়ে নেতিবাচক মন্তব্য না করার অনুরোধ জানান নেটিজেনদের প্রতি। কান্নাজড়িত কণ্ঠে তিনি বলেন, ‘ও হয়তো এখন এসব বুঝতে পারে না; কিন্তু একসময় এসব বুঝবে, তখন নিশ্চয়ই কষ্ট পাবে। দয়া করে এসব করবেন না। আপনারা আমার ছেলে ফারিশের জন্য দোয়া করবেন, যেন ওকে ভালো মানুষ হিসেবে গড়ে তুলতে পারি।’ ভিডিওর শেষে তিনি বলেন, ‘আমি নতুন করে কাজ শুরু করব। জীবনে আমার অনেক যুদ্ধ। বাচ্চাটা বড় হবে। ওর জন্য অনেক কিছু করার আছে। সবাই দোয়া করবেন, যেন ফারিশকে নিয়ে আমার পথচলা মসৃণ হয়।’
বুবলী
শাকিব খান-বুবলির বিয়ের তারিখ ছিল ২০১৮ সালের ২০ জুলাই। আর ২০২০ সালের ২১ মার্চ সন্তান শেহজাদের জন্ম হয়েছে। এটি বুবলী তার ফেসবুক পোস্টের মাধ্যমে জানিয়েছেন। তাদের ঘনিষ্ঠ সূত্রের বরাতে জানা গেছে, ২০২১ সাল থেকেই শাকিব খান ও বুবলীর মধ্যে বিবাদ শুরু। সে বছর ১৮ ফেব্রুয়ারি ‘লিডার, আমিই বাংলাদেশ’ সিনেমার সাইনিং অনুষ্ঠানে দুজন মুখোমুখি হলেও কেউ কারও সঙ্গে কথা পর্যন্ত বলেননি। তারপরেও সিনেমার শুটিং করেছেন। শাকিব খান যুক্তরাষ্ট্রে থাকা অবস্থায় বুবলী ২০২১ সালের ডিসেম্বরে যুক্তরাষ্ট্রে গেলে দুজনের মধ্যে সম্পর্কের বরফ গলতে শুরু করে। কিন্তু বুবলী বাংলাদেশে ফিরে আসার পর তাদের মধ্যে বিভিন্ন বিষয় নিয়ে দূরত্ব বাড়তেই থাকে। এই দূরত্ব-বিবাদের কারণেই তাদের বিচ্ছেদ হয়েছে বলে সূত্রগুলো জানায়।
পরীমনি
২০২২ সালের ১০ জানুয়ারি প্রকাশ্যে আসে রাজ-পরীর সম্পর্কের খবর। ২২ জানুয়ারি দুই পরিবারের সদস্যদের উপস্থিতিতে ১০১ টাকার দেনমোহরে ঘরোয়া আয়োজনে তাদের বিবাহ সম্পন্ন হয়। ২১ জানুয়ারি হয় তাদের গায়েহলুদের অনুষ্ঠান। কিন্তু গেল বছরের শুরু থেকেই ভালো যাচ্ছিল না পরীমনি-শরিফুল রাজের সংসার। এর মধ্যে রাজের ফেসবুক থেকে অভিনেত্রী তানজিন তিশা, নাজিফা তুষি ও সুনেরাহ বিনতে কামালের কিছু ছবি ও ভিডিও প্রকাশ্যে আসার পর রাজের সঙ্গে পরীমনির সম্পর্কের আরও অবনতি হয়। তখন পরীমনি বলেন, সংসার জীবনের এ অশান্তি এবং এই ব্লেম গেম থেকে পরিত্রাণ চান তিনি। তিনি এও বলেন, আমি আর রাজের স্ত্রী নই। এই সম্পর্ক টেনে নিতে চাই না। একই সুরে কথা বলেছিলেন রাজও। ১৮ সেপ্টেম্বর পরীমনি রাজের উদ্দেশ্যে বিচ্ছেদের নোটিশ পাঠান। আর এর মাধ্যমে দুই তারকার সংসারে বিচ্ছেদের ঘণ্টাটাও বেজে যায়। এখন নিজের ছেলে রাজ্য ও ক্যারিয়ারের দিকেই ফোকাস করতে চান পরী।
অপু বিশ্বাস
অপু বিশ্বাস ২০০৪ সালে আমজাদ হোসেনের ‘কাল সকালে’ ছবির মাধ্যমে চলচ্চিত্রে পা রাখেন। এরপর ২০০৬ সালে পরিচালক এফ আই মানিক পরিচালিত ‘কোটি টাকার কাবিন’ ছবিতে নায়িকা হিসেবে শাকিব খানের বিপরীতে অভিনয় করেন তিনি। ২০০৬ থেকে ২০১৭ সাল পর্যন্ত টানা এই জুটি একাধারে ৭০টির মতো ছবিতে জুটি বাঁধেন। একসঙ্গে কাজ করতে গিয়ে একসময় পরস্পর প্রেমের বাঁধনে জড়িয়ে যান। এরপর ২০০৮ সালের ১৮ এপ্রিল বিয়ের পিঁড়িতে বসেছিলেন শাকিব-অপু। কলকাতার একটি ক্লিনিকে ২০১৬ সালের ২৭ সেপ্টেম্বর জন্ম হয় শাকিব-অপুর ছেলে আব্রাহাম খান জয়ের। ২০১৮ সালের ১২ মার্চ শাকিব খান ও অপু বিশ্বাসের বিবাহবিচ্ছেদ কার্যকর হয়। সেদিন থেকেই শাকিব ও অপুকে স্বামী-স্ত্রী হিসেবে গণ্য করা হবে না। এমনটাই জানান ঢাকা সিটি করপোরেশনের (অঞ্চল-৩) প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা হেমায়েত হোসেন।
শাবনূর
২০১১ সালের ৬ ডিসেম্বর অনিক মাহমুদ হৃদয়ের সঙ্গে আংটি বদল করেন শাবনূর। এরপর ২০১২ সালের ২৮ ডিসেম্বর বিয়ে করেন তারা। ২০১৩ সালের ২৯ ডিসেম্বর আইজান নিহান নামে এক পুত্রসন্তানের মা হন শাবনূর। পুত্রকে নিয়ে তিনি এখন অস্ট্রেলিয়ায় বসবাস করছেন। ‘বনিবনা হচ্ছে না’- এমন কারণ দেখিয়ে অবসান হলো চিত্রনায়িকা শাবনূর ও স্বামী অনিকের প্রায় আট বছরের যৌথ জীবন! শাবনূরের স্বাক্ষরিত নোটিশটি তার অ্যাডভোকেট কাওসার আহমেদের মাধ্যমে স্বামীকে পাঠিয়েছেন। নোটিশে অনিকের সঙ্গে ‘বনিবনা হয় না’ বলে উল্লেখ করা হয়েছে। শাবনূরের তালাকের নোটিশ এবং হলফনামা প্রস্তুতকারী অ্যাডভোকেট কাওসার আহমেদ বলেন, ‘২০২০ সালের ২৬ জানুয়ারি অনিকের সঙ্গে বিবাহবন্ধন ছিন্ন করেছেন শাবনূর। ৪ ফেব্রুয়ারি অনিকের উত্তরা এবং গাজীপুরের বাসার ঠিকানায় সেই নোটিশ পাঠানো হয়।