নবীগঞ্জে ভালোবেসে বিয়ে, যৌতুকের বলি নববধূ তৃষা
নূরুজ্জামান ফারুকী নবীগঞ্জ প্রতিনিধি
হবিগঞ্জের নবীগঞ্জ উপজেলার কালিয়ারভাঙ্গা ইউনিয়নের খড়িয়া গ্রামে ভালোবেসে ঘর বাঁধা হলো না তৃষার।এক মাসের মাথায় যৌতুকের বলি হলো এই নববধূ।
জানা যায়, ওই গ্রামের অভিমন্ন্যু সরকারের কন্যা ইমামবাড়ি রাজারানী সুভাষিণী স্কুলের ১০ম শ্রেণির ছাত্রী তৃষা রাণী সরকার (১৮) এর সাথে একই গ্রামের খরেন্দ্র সরকারের পুত্র টিটু সরকার (২২) এর প্রেমের সম্পর্ক গড়ে উঠে। বিষয়টি তৃষার পিতা মেনে নেয়নি। এক পর্যায়ে তারা গত ডিসেম্বর মাসে পালিয়ে গিয়ে কালীবাড়িতে মালা বদল করে এফিডেভিট করে বিয়ে করে। এরপর তৃষার পরিবার তা মেনে নেয়। কিন্তু কিছুদিন যেতে না যেতেই টিটু ও তার পরিবার যৌতুকের জন্য তৃষার ওপর নির্যাতন চালায়। বিষয়টি তৃষা তার পিতা ও পরিবারকে জানায়।
গত ২১ জানুয়ারি সন্ধ্যায় তৃষার পিতাকে শশুর বাড়ির লোকজনের নির্যাতনের কথা জানায়। কিন্তু এরপর থেকেই তার মোবাইল ফোন বন্ধ পাওয়া যায়। তৃষার শশুর বাড়িতে খোঁজ করেও তাকে পাওয়া যায়নি। পরের দিন ২২ জানুয়ারি বেলা ১১টার দিকে টিটু তার পিতা খরেন্দ সরকার, কাকা প্রকেন্দ্র সরকার, তপনসরকারসহ বেশ কয়েকজন লুকিয়ে তৃষার দেহ স্থানীয় শ্মশানে দাহ করার প্রস্তুতি নেয়। খবর পেয়ে তৃষার পিতা ও নবীগঞ্জ থানার এসআই তরিকুল ইসলাম ঘটনাস্থলে গেলে তৃষার শশুর বাড়ির লোকজন লাশ রেখে পালিয়ে যায়। তার পরে সদর হাসপাতালে নিয়ে এলে ডাক্তার তাকে মৃত ঘোষণা করে। লাশের সুরতহাল করে পিতার জিম্মায় দেয়া হয়। লাশের গলা ও শরীরে আঘাতের চিহ্ন পাওয়া যায়।
তৃষার পিতা জানান, বিয়ের এক মাসের মাথায় হাতের মেহেদির দাগ মুছতে না মুছতেই তার মেয়েকে যৌতুকের জন্য টিটু ও তার পরিবারের লোকজন হত্যা করে আলামত নষ্টের জন্য লাশটি দাহ করতে চেয়েছিলো। কিন্তু পুলিশের হস্তক্ষেপে লাশটি উদ্ধার হয়। তার ধারণা তার মেয়েকে ওইদিন রাতে কোনো সময় হত্যা করে লাশ গুম করার চেষ্টা করছিলো। তিনি এ বিষয়ে প্রতিকার পেতে থানায় গেলে পুলিশ মামলা না নিয়ে সময় ক্ষেপন করে।এ বিষয়ে এসআই তরিকুল ইসলাম জানান, সময়মতো গিয়ে শশ্মানঘাট থেকে লাশ উদ্ধার করে ময়নাতদন্ত শেষে পিতার জিম্মায় দেই এবং অভিযুক্তদের গ্রেফতারে অভিযান চলছে। ময়নাতদন্ত রিপোর্ট এলে মৃত্যুর আসল কারণ জানা যাবে।