শ্রীমঙ্গল সাব-রেজিস্টারের অনিয়ম ও দুর্নীতি দলিল লেখকদের কর্মবিরতি
![](https://dainiksylhet.com/images/icon.jpg)
শ্রীমঙ্গল প্রতিনিধি
মৌলভীবাজারের শ্রীমঙ্গল সাব-রেজিস্টারের অনিয়ম,দুর্নীতি,দুর্ব্যবহার ও হয়রানির কারণে দলিল লেখকরা কর্মবিরতি পালন করেছেন। সোমবার সকাল থেকে সারাদিন ব্যাপি তারা এ কর্ম বিরতি পালন করেন। এ সময় অফিসের সামনে দলিল লেখকরা সবাই জড়ো হয়ে সাব-রেজিস্টারের বিভিন্ন অনিয়ম ও দুর্নীতির অভিযোগ তুলে ধরে বক্তব্য প্রদান করেন।
সাব-রেজিস্টার অফিসের দলিল লেখক সমিতির সদস্য মো.মছদ্দর আলী জানান, গত ২২ ফেব্রুয়ারী শংকর কুমার ধর সাব-রেজিস্টার হিসেবে এই অফিসে যোগদান করেন।তিনি অফিসে যোগদান করেই বিভিন্ন দলিলে সরকার নির্ধারিত রেজিস্টেশন ফি এর বাহিরে অতিরিক্ত টাকা আদায়,হয়রানি ও দুর্নীতি করে যাচ্ছেন।
উত্তরাধীকারী দলিলের ক্ষেত্রে রেজিস্টশন করতে হলে ছেলে বাবদ ৫ হাজার,নাতি ২০ হাজার টাকা ধার্য করে দিয়েছেন।এরকম দলিল রেজিস্টেশন করতে যেয়ে উপজেলার মির্জাপুর ইউনিয়নের চেয়ারম্যান মিছলু আহমেদের নিকট থেকে অতিরিক্ত ২৫ হাজার টাকা আদায় করেছেন।বাটোয়ারা দলিলে রাস্তার কথা উল্লেখ থাকলে সরকারি ফি এর কথা বলে তিমির বনিকের নিকট থেকে রশিদ ছাড়া ১ লাখ টাকা ঘুস নিয়েছেন, এভাবে সাংবাদিক ইসমাইল মাহমুদের এক আত্মীয়ের দলিল রেজিস্টেশনে অতিরিক্ত ১০ হাজার টাকা নিয়েছেন বলে বক্তব্যে মছদ্দর আলী জানান।
এসময় সমিতির সভাপতি সায়েদ আলী বলেন,তিনি যোগদান করে অফিসে বসার জন্য শ্রীমঙ্গল পৌর মেয়রের দানকৃত সব চেয়ার বিক্রি করে দিয়েছেন এবং খাস কামড়াকে পার্টিশন দিয়ে আলাদা দুটি রুম করেছেন কর্তৃপক্ষের অনুমতি ছাড়া। সমিতির যুগ্ম সম্পাদক খুরশেদ আলী বলেন,সাব-রেজিস্টারের অনৈতিক দাবী রক্ষা করতে হলে তারা জনগনের হাতে পিটুনি খেতে হবে। শ্রীমঙ্গল গরীব এলাকা,গাঁজাখোর এরকম শব্দ বোমায় ও তার দুর্ব্যবহারে তারা অতিষ্ট হয়ে গেছেন বলে তিনি জানান।
সমিতির সাধারণ সম্পাদক ফজলুর রহমান বলেন,সরকার নির্ধারিত ফি এর বাহিরে তারা সাব-বেজিস্টারের দলিল প্রতি অতিরিক্ত ৫% টাকা দিতে পারবেন না বলে জানালে সাব-রেজিস্টার তাদের বিভিন্নভাবে হয়রানি করে যাচ্ছেন বলে জানান। এই সাব-রেজিস্টারকে দ্রুত এখান থেকে বদলি না করা হলে তারা তাদের কর্মবিরতি অব্যাহত রাখবেন বলে জানান।
এসব অনিয়ম ও দুর্নীতির বিষয়ে সাব-রেজিস্টার শংকর কুমার ধরকে সাংবাদিকরা প্রশ্ন রাখলে তিনি জানান,তিনি কর্ম বিরতির বিষয়ে সাংবাদিকদের মাধ্যমে জেনেছেন। অনিয়ম ও দুর্নীতির বিষয়ে তিনি জানান,প্রতিনিয়ত সরকার সার্কুলার পরিবর্তন করছে,তাই রেভিনিউ আদায়ে আমাকে ভূমিকা রাখতে হবে।
পরে চেয়ারম্যান মিছলু আহমেদ,সাংবাদিক ইসমাইল মাহমুদের আত্মীয়ের নিকট ১০ হাজার টাকা ও তিমিরি বনিকের ১ লাখ টাকা কোন রেভিনিউ খাতে জমা দিয়েছেন বলে প্রশ্ন রাখলে তিনি কোন সদুত্তর দিতে পারেন নি।
খাস কামড়াকে পার্টিশন করার বিষয়ে তিনি কর্তৃপক্ষের অনুমতি নেননি বলে জানান।
এ ব্যাপারে মৌলভীবাজার জেলা রেজিস্টার সোহেল রানা মিলন এর মুঠোফোনে বার বার যোগাযোগের চেষ্টা করা হলেও তার ফোনের সুইচ বন্ধ পাওয়া যায়।
এবিষয়ে জানতে চাইলে শ্রীমঙ্গল উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) মো. আবু তালেব জানান, কর্মবিরতির বিষয়টি শুনেছি। দলিল লেখকদের বক্তব্য কি তারা আমাকে আগে লিখিতভাবে জানান, যদি সাব-রেজিস্ট্রারের বিরুদ্ধে দুর্নীতি-অনিয়মের কোনো অভিযোগ থাকে, তারা আমাকে লিখিতভাবে জানালে আমি তদন্ত করে অভিযোগের প্রমাণ পেলে ব্যবস্থা নেবো।