আমাকে উৎখাত করে তারা কাকে ক্ষমতায় আনতে চায়: প্রধানমন্ত্রী
![](https://dainiksylhet.com/images/icon.jpg)
দৈনিকসিলেটডেস্ক
প্রধানমন্ত্রী ও আওয়ামী লীগের সভাপতি শেখ হাসিনা বলেছেন, আমাকে উৎখাত করলে পরবর্তী সময়ে কে আসবে? কে ক্ষমতায় গিয়ে দেশের জন্য কাজ করবে? কাকে তারা আনতে চায়—সেটা কিন্তু স্পষ্ট নয়। এ কারণে তারা জনগণের সাড়া পাচ্ছে না। গতকাল বৃহস্পতিবার গণভবনে সংবাদ সম্মেলনে তিনি এ কথা বলেন। সম্প্রতি থাইল্যান্ড সফরের অর্জন ও সফলতা তুলে ধরতে এই সংবাদ সম্মেলনের আয়োজন করা হয়। প্রথমে লিখিত বক্তব্য রাখেন প্রধানমন্ত্রী। পরে সাংবাদিকদের বিভিন্ন প্রশ্নের জবাব দেন তিনি।
দেশের রাজনীতি নিয়ে সাংবাদিকদের এক প্রশ্নের জবাবে প্রধানমন্ত্রী বলেন, বাম চলে গেছে ৯০ ডিগ্রি ঘুরে। আমার একটা প্রশ্ন, বিশেষ করে যারা অতি বাম, সব সময় মনে করি তারা প্রোগ্রেসিভ দল, তারা খুবই গণমুখী দল ইত্যাদি। সেখানে আমার প্রশ্ন হচ্ছে, ঠিক আছে তারা আমাকে উৎখাত করবে। পরবর্তী সময়ে কে আসবে তাহলে, সেটা কি ঠিক করতে পেরেছে? তিনি বলেন, ‘১৫ বছর আগে দেশের অবস্থাটা কী ছিল, এখন কী কোনো পরিবর্তনই হয়নি? তারপরও দেশবিরোধী অনেকেই অপবাদ ছড়িয়ে বেড়াচ্ছে। তারা মানুষকে প্রভাবিত করার চেষ্টা চালাচ্ছে। আন্দোলন করে যাচ্ছে কেউ রিফিউজিটিভ হয়ে বিদেশে বসে। আমরা ডিজিটাল বাংলাদেশ করে দিয়েছি, সেই ডিজিটাল বাংলাদেশের বদৌলতে প্রতিদিন অনলাইনে বসে আন্দোলন সংগ্রাম করেই যাচ্ছে, নির্দেশ দিয়েই যাচ্ছে। যারা আন্দোলন করে করুক, আমরা তো বাধা দিচ্ছি না।’
যুক্তরাষ্ট্রের বিভিন্ন বিশ্ববিদ্যালয়ে ফিলিস্তিনপন্থি আন্দোলনকারীদের দমাতে পুলিশ যেভাবে বল প্রয়োগ করেছে, বাংলাদেশে রাজনৈতিক আন্দোলন দমাতে সরকার সেই কৌশল নেবে কি না, পরিহাসের ছলে সেই প্রশ্ন রাখেন প্রধানমন্ত্রী। তিনি বলেন, ‘আমরা যদি আমাদের পুলিশকে বলে দিই যে, আমেরিকার পুলিশ যেভাবে আন্দোলন থামায় সেটা অনুসরণ করতে পারে, সেটা কি বলে দেব? আমার মনে হয়, এখন আমাদের পুলিশ আমেরিকান পুলিশদের অনুসরণ করতে পারে।’ এ সময় হাস্যরস করে প্রধানমন্ত্রী বলেন, আমার মনে হয় সাংবাদিকরা এ ব্যাপারে আমাকে সমর্থন করবেন।
মানবাধিকার নিয়ে বাংলাদেশসহ অন্যদের ‘সবক’ না দিয়ে আগে নিজ দেশের দিকে নজর দিতে যুক্তরাষ্ট্র সরকারকে পরামর্শ দেন শেখ হাসিনা। যুক্তরাষ্ট্রে ফিলিস্তিনের পক্ষের বিক্ষোভ দমনে বলপ্রয়োগ এবং ‘গণহত্যা’ চালাতে ইসরাইলকে অর্থ ও অস্ত্র যোগান দেওয়ারও সমালোচনা করেন তিনি। যুক্তরাষ্ট্রে গুলিতে দুই বাংলাদেশির নিহত হওয়ার প্রসঙ্গ টেনে এক প্রশ্নে প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘তাদের দেশে যে প্রতিনিয়ত মানবাধিকার লঙ্ঘন হচ্ছে, গুলি করে সাধারণ-নিরীহ মানুষগুলোকে হত্যা করা হচ্ছে, এটাতো তাদের দেখা উচিত। নিজের ঘরকে আগে সামলানো উচিত। গুলিতে এবং ছুরিকাঘাতের বিভিন্ন ঘটনায় সম্প্রতি যুক্তরাষ্ট্রে বেশ কয়েক জন বাংলাদেশি নিহত হওয়ার ঘটনায় বাংলাদেশ সরকারের পক্ষ থেকে প্রতিবাদে জানানো হবে কি না, সেই প্রশ্ন রাখেন একজন সাংবাদিক। উত্তরে শেখ হাসিনা বলেন, ‘অলরেডি প্রতিবাদ জানানো হয়েছে। আমেরিকায় বসেও প্রতিবাদ জানানো হচ্ছে, সেখানে আমাদের আওয়ামী লীগ খুব সোচ্চার আছে, আমাদের সহযোগী সংগঠন, এটার প্রতিবাদতো আমরা সবসময় করেই যাচ্ছি।’ প্রধানমন্ত্রী বলেন, অন্য জায়গায় মানবাধিকারের কথা বলেও ফিলিস্তিনের প্রশ্নে যুক্তরাষ্ট্রের ‘দুমুখো’ নীতি কেন? এই প্রশ্ন আন্তর্জাতিক পর্যায়েও আমরা করে আসছি। আমাদের দেশেওতো মানবাধিকারের কত বিরাট বিরাট প্রবক্তা আছে, তারা এখন চুপ কেন?
ফিলিস্তিনিদের পক্ষে বাংলাদেশের জোরালো অবস্থানের বিষয়ে প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘ফিলিস্তিনিদের বিষয়ে তো বললাম, আমরা সবসময় ফিলিস্তিনিদের পক্ষে আছি। আমি যেখানেই যাই, আমার কথা আমি বলবই। কারণ সেখানে যেভাবে গণহত্যা চলছে, এটা অমানবিক। যুক্তরাষ্ট্রে ফিলিস্তিনপন্থিদের বিক্ষোভ দমনের বলপ্রয়োগের সমালোচনা করে তিনি বলেন, ‘আপনারা দেখেছেন, আজকে ৯০০ ছাত্রছাত্রী, অধ্যাপক থেকে শুরু করে সবাই গ্রেফতার হয়েছে এই আন্দোলন করার জন্য একমাত্র আমেরিকায়। আর এটা নাকি গণতন্ত্রের একটা অংশ। সেটাও আমাদের শুনতে হয়। যেভাবে একজন অধ্যাপককে জাপটে ধরে, মাটিতে ফেলে হ্যান্ডকাফ পরানো হলো। ২০০১ সালের পর ঠিক যেভাবে আওয়ামী লীগের নেতাকর্মীদের ওপর বিএনপির সন্ত্রাসী, পুলিশ বাহিনী যেভাবে অত্যাচার করেছিল, সেই অত্যাচারের কথাটাই মনে করিয়ে দেয়। অবশ্য তাদের কাছ থেকে আমাদের মানবাধিকারের সবক নিতে হয়। এটাই হচ্ছে, সবচেয়ে দুর্ভাগ্যের।’
উপজেলা নির্বাচনে এক জায়গায় বউ, আরেক জায়গায় ছেলে—এটা ঠিক না: প্রধানমন্ত্রী বলেন, উপজেলা পরিষদ নির্বাচন প্রভাবমুক্ত রাখতেই মন্ত্রী-এমপির পরিবারের সদস্যদের প্রার্থিতা না করার নির্দেশনা দিয়েছিলেন তিনি। অবশ্য পরিবার বলতে তিনি নিজে (মন্ত্রী বা এমপি), তার স্ত্রী ও ছেলেমেয়েকে ঝুঝিয়েছেন বলেও ব্যাখ্যা দেন। এ প্রসঙ্গে এক প্রশ্নের জবাবে প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘ফ্যামিলি ফর্মুলা কী? নিজে, ছেলেমেয়ে স্ত্রী; এই তো? এর বাইরে তো পরিবার হয় না। একবার হিসাব করেন তো, কয়জনের (মন্ত্রী-এমপি) ছেলেমেয়ে-স্ত্রী ভোটে দাঁড়িয়েছে। হ্যাঁ, আমি বলেছিলাম। কারণ হচ্ছে—আমরা চাইছি ইলেকশনটা প্রভাবমুক্ত যেন হয়, মানুষ যেন স্বাভাবিকভাবে ভোটটা দিতে পারে। সেটাই হচ্ছে আমাদের লক্ষ্য।’ তিনি বলেন, ‘আওয়ামী লীগের অনেক নেতাকর্মীর পরিবার দীর্ঘদিন ধরে রাজনীতি করছেন। তারা আগে নির্বাচন করেছেন। তাদের তো রাজনৈতিক জীবনী আছে। তাদেরকে মানা করি কি করে? তবে এটা ঠিক, এক জায়গায় বউকে দিল, আরেক জায়গায় ছেলেকে দিল, এগুলো ঠিক না। কর্মীদের মূল্যায়ন করা উচিত।’
যাদের নির্বাচন করার সক্ষমতা নেই, তারা ভোট বর্জন করে: প্রধানমন্ত্রী বলেন, জনগণ যতক্ষণ চাইবে, ততক্ষণই ক্ষমতায় থাকবে আওয়ামী লীগ। জনগণের ভোটে নির্বাচিত হয়ে আওয়ামী লীগ ক্ষমতায় এসেছে। যাদের নির্বাচন করার সক্ষমতা নেই, তারা ভোট বর্জন করেছে। পার্লামেন্ট নির্বাচন করতে হলে জাতিকে দেখাতে হবে যে পরবর্তী নেতৃত্ব কে আসবে, প্রধানমন্ত্রী কে হবে, নেতা কে হবে? একটা নেতা দেখাতে হবে। আপনার কাছে উপযুক্ত নেতা না থাকলে তখন তো আপনাকে ছুতা খুঁজতে হয়। আমাদের দেশে সেটাই হচ্ছে। কারণ একজন সাজাপ্রাপ্ত আসামিকে যদি পাবলিকের কাছে নেতা হিসেবে দেখান, তারা তো সেটা মেনে নেবে না। পলাতক আসামিকে তো পাবলিক মেনে নেবে না।
তিনি বলেন, ‘রাজনীতি করতে গেলে তো ঝুঁকি নিতে হয়। পঁচাত্তরের পর আমাকে দেশে আসতে দেবে না। রেহানার (জাতির পিতার কনিষ্ঠ কন্যা শেখ রেহানা) তো পাসপোর্টও রিনিউ করে দেয়নি। আমার বাবার খুনিরা পুরস্কারপ্রাপ্ত, যুদ্ধাপরাধী খুনিরা ক্ষমতায়। ঐ অবস্থায় তো আমি দেশে ফিরে এসেছি। আমার ওপর বারবার আঘাত এসেছে। কিন্তু আমি বেঁচে গেছি। এত বার বেঁচে গেলাম কেন, এটা হয়তো অনেকের ভালো লাগে না।’ কোনো দেশের নাম উল্লেখ না করেই প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘অনেক দেশে তো নির্বাচন হচ্ছে, আমরা দেখব। আমরা অবজারভার টিমও পাঠাব। দেখি কেমন নির্বাচন হয়। সেখানকার মানুষ কেমন ভোট দেয়, আমরা দেখব।’
তিনি বলেন, ‘আমাদের চেষ্টা হচ্ছে নির্বাচন প্রক্রিয়াটাকে আরো গণমুখী ও স্বচ্ছ করা। এই প্রথম আমরা আইন করে নির্বাচন কমিশন গঠন করেছি। আগে কখনো এটা করা হয়নি। অতীতে নির্বাচন কমিশন সম্পূর্ণ আর্থিকভাবে প্রধানমন্ত্রীর দপ্তরের ওপর নির্ভরশীল ছিল উল্লেখ করে তিনি বলেন, তার সরকার এটাকে সেখান থেকে মুক্ত করে সম্পূর্ণ স্বায়ত্তশাসিত করে দিয়েছে। আলাদা বাজেট দেওয়া হয়েছে। প্রধানমন্ত্রী বলেন, বাংলাদেশের পুরো নির্বাচনি ইতিহাস যদি আপনারা দেখেন—২০২৪ সালের ৭ জানুয়ারির নির্বাচন প্রত্যেকটি নির্বাচনের তুলনায় সবচেয়ে অবাধ, নিরপেক্ষ, সুষ্ঠু এবং জনগণের ভোটের অধিকার নিশ্চিত করার নির্বাচনই হয়েছে।
১৪ দলীয় জোট আছে, থাকবে: এক জন সাংবাদিক বলেন, দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনের পর ১৪ দলীয় জোটের কোনো কার্যক্রম চোখে পড়ছে না। জবাবে প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘১৪ দল তো অবশ্যই আছে। থাকবে না কেন? ১৪ দলীয় জোট না থাকার প্রশ্নই আসে না। তাদের সঙ্গে আমাদের সব সময়ই যোগাযোগ আছে। নির্বাচনে ১৪ দলের অনেকে প্রার্থী দিয়েছিল, নির্বাচন করেছে, আর নির্বাচনে জেতা না জেতা আলাদা কথা, কিন্তু আমাদের এই জোট থাকবে। এটুকু বলতে পারি, জোট শেষ হয়ে গেছে কে বলল?’ শিগগিরই ১৪ দলের সঙ্গে বৈঠকে বসবেন জানিয়ে শেখ হাসিনা বলেন, ‘কার্যনির্বাহী বৈঠক করেছি, আমাদের উপদেষ্টাদের সঙ্গে বৈঠক করব এবং আমি ১৪ দলের সঙ্গেও বসব।’
শেখ হাসিনা বলেন, ‘আন্তর্জাতিক পর্যায়ে আমাদের তো কিছু লোক রয়েছে, যারা সবসময় বাংলাদেশের বিরুদ্ধে কান ভারী করছে। তারা অনেক জ্ঞানীগুণী, বুদ্ধিজীবী এবং তারা যখন সারাক্ষণ উলটাপালটা বলতেই থাকবে, কিছুটা (বিদেশিরা) তাদের দ্বারা প্রভাবিত হওয়াটাই স্বাভাবিক। আমার দেশের মানুষই তো অনেকে প্রভাবিত হয়ে যায়, আর বিদেশিরা তো হবেই। কিন্তু দেশের সাধারণ মানুষ কিন্তু এসব কথায় প্রভাবিত হয় না। তারা কিন্তু ঠিক আছে। তাদের একটা আত্মবিশ্বাস আছে। জনগণের ভোটের অধিকার নিশ্চিত আমরা করেছি।’
হিট স্ট্রোক বাড়ছে, প্রকৃতির সঙ্গে তো কিছু বলার নেই: প্রধানমন্ত্রী গরমে সবাইকে সচেতনতা অবলম্বনের পরামর্শ দেন এবং তার দলের পক্ষ থেকে বিভিন্ন কর্মসূচি নিয়ে মানুষের পাশে দাঁড়ানোর বিষয়টি উল্লেখ করে বলেন, ‘যে কোনো দুর্যোগ মোকাবিলার সামর্থ্য আমাদের রয়েছে। নিরাপদে থাকতে হবে, প্রচুর পানি খেতে হবে। কেননা হিট স্ট্রোক বাড়ছে। প্রকৃতির সঙ্গে তো কিছু বলার নেই। দেশে বন্যা হতে পারে? সেসব মোকাবিলায় আগাম প্রস্তুতি নেওয়া হচ্ছে।’
আওয়ামী লীগের প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী উদ্যাপন বড় আকারে: আওয়ামী লীগের ৭৫ বছর পূর্তি উপলক্ষ্যে এবার বড় আকারে প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী উদ্যাপনের প্রস্তুতি নেওয়ার কথা বলেন শেখ হাসিনা। তিনি বলেন, ‘আমরা আমাদের পঁচাত্তর বছর উদ্যাপন করব খুব ব্যাপকভাবে। কারণ আমাদের দল উপমহাদেশে একটা বড় দল, যেটা ৭৫ বছর উদ্যাপন করছে, এটা তো কম কথা না।’
পণ্যের একটু দাম বাড়লেই বড় করে গণমাধ্যমে প্রচার, এটা ঠিক না: প্রধানমন্ত্রী বলেন, অবৈধ মজুতদারদের বিষয়টা সরকারের নজরে আছে। কিছু আছে চক্রান্ত, কিছু আছে অধিক মুনাফার লোভ। নির্দিষ্ট বেতনে চলা মানুষ কষ্টে আছে এটা ঠিক। তবে পণ্যের দাম একটু বাড়লেই, অনেক বড় করে গণমাধ্যমে প্রচার করা হয়, এটা ঠিক না। কেননা কমবেশি বিশ্বের সব দেশেই এখন মুদ্রাস্ফীতি চলছে।
নিজের সমবায় কৃষির মডেল সারা দেশে ছড়ানোর ইচ্ছা প্রধানমন্ত্রীর: গোপালগঞ্জের টুঙ্গিপাড়ায় নিজের গ্রামে সমবায় পদ্ধতিতে যে চাষাবাদ প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা করছেন, তা সারা দেশে ছড়িয়ে দেওয়ার আগ্রহের কথা বলেছেন তিনি। এক প্রশ্নের জবাবে শেখ হাসিনা বলেন, সমবায় পদ্ধতিতে চাষ করলে উত্পাদনের পরিমাণ বাড়বে, কমবে খরচ। গোপালগঞ্জের টুঙ্গিপাড়ায় ‘আমার বাড়ি আমার খামার’ প্রকল্পের আওতায় তিনি একটি সমিতি করেছেন। নিজেদের ৯ বিঘা জমিও দিয়েছেন সমবায়ের আওতায় চাষাবাদের জন্য। সমিতির আওতায় যুক্ত হয়েছে মাছ চাষ। আমাদের ট্রাস্টের পক্ষ থেকে দুটি মেশিন আমি কিনে দিয়েছি সেখানে। কার জমি কতটুকু, ফসল বিক্রি করে সে অনুযায়ী টাকাটা ভাগ করে দেওয়া হয়েছে। মাছ বিক্রি করে ৮ লাখ টাকা পাওয়া গেছে। কৃষান-কৃষানি যারা শ্রম দিয়েছেন, তার ভাগ পেয়েছেন। আমি আমার ভাগে ১ লাখ টাকা পেয়েছি। আমি নিজের এলাকায় করেছি। এটা করে আমি মডেল হিসেবে দাঁড় করাব।
সহযোগিতার নতুন দুয়ার উন্মোচিত হলো থাইল্যান্ডের সঙ্গে: থাইল্যান্ড সফরে বাংলাদেশের প্রাপ্তি কী এমন প্রশ্নের জবাবে প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘আমি বলতে পারি-কী পেলাম, কী পেলাম না সেটা বড় কথা না। সহযোগিতা পাওয়ার এবং সার্বিক উন্নয়নের নতুন দুয়ার খুলে গেল। সেখানে ভালো সুযোগ সৃষ্টি হলো। আমি সবসময় দক্ষিণ এশিয়া এবং দক্ষিণ পূর্ব এশিয়ার দেশগুলোর সহযোগিতা, যোগাযোগ এবং মতবিনিময়, অভিজ্ঞতা বিনিময়ের ওপর গুরুত্ব দিয়ে থাকি। কারণ সার্বিকভাবে আর্থসামাজিক উন্নয়নের জন্য বন্ধুত্বটা গুরুত্বপূর্ণ। কাজেই এখানে বলব সরকার গঠনের পর এবার প্রথম বিদেশ সফর করলাম থাইল্যান্ডে। বলতে গেলে ঘরের কাছের পড়শী দেশ। আমি সবসময় বন্ধুত্বকে গুরুত্ব দেই। রোহিঙ্গা প্রত্যাবাসনের বিষয়টি নিয়েও থাইল্যান্ডের প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে আলোচনা হয়েছে বলে এক প্রশ্নের উত্তরে জানান শেখ হাসিনা। তিনি বলেন, ‘থাইল্যান্ডের প্রধানমন্ত্রী বলেছেন, তিনি মিয়ানমারের বিষয়টা গভীরভাবে দেখবেন এবং প্রত্যাবাসনের জন্য যেটা করার তা করবেন।’
আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক এবং সড়ক পরিবহন ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের, স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামাল, প্রধানমন্ত্রীর বেসরকারি শিল্প ও বিনিয়োগ উপদেষ্টা সালমান এফ রহমান, আওয়ামী লীগের প্রেসিডিয়াম সদস্য ও সংসদ উপনেতা বেগম মতিয়া চৌধুরী, প্রেসিডিয়াম সদস্য শেখ ফজলুল করিম সেলিম, বাণিজ্য প্রতিমন্ত্রী আহসানুল ইসলাম টিটু এবং তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি প্রতিমন্ত্রী জুনাইদ আহমেদ পলক মঞ্চে উপস্থিত ছিলেন। প্রধানমন্ত্রীর স্পিচ রাইটার মো. নজরুল ইসলাম অনুষ্ঠান সঞ্চালনা করেন ।
সূত্র:ইত্তেফাক