জগন্নাথপুরে গোলায় ধান তুলতে ব্যস্ত কৃষকেরা

জগন্নাাথপুর প্রতিনিধি
সুনামগঞ্জের জগন্নাথপুরে এবার আগেভাগেই হাওরের বোরো ফসল কাটা শেষ হয়েছে। শুক্রবার শতভাগ ধান কর্তন সম্পন্ন হয়েছে বলে জানিয়েছে কৃষি অফিস। ধান মাড়াই ও শুকিয়ে গোলায় তুলার কাজে এখন ব্যস্ত কৃষক-কৃষাণি। এ বারের বোরোর বাস্পার ফলনে খুশি হাওরবাসী।
শুক্রবার সরেজমিনে বিভিন্ন হাওর ঘুরে দেখা যায়, উপজেলার সর্ববৃহ নলুয়ার হাওরের পাকা ধান কাটা শেষ হয়েছে। এসব পাকা ধান গোলায় তুলতে সকাল থেকে সন্ধ্যারাত পর্যন্ত কাজ করছেন কৃষক পরিবার। এছাড়া উপজেলার মইয়ার হাওর, পিংলার হাওরসহ ছোট বড় ১৫টি হাওরের সোনারাঙা ধান কর্তন শেষ।
স্থানীয় কৃষকরা জানিয়েছেন, এবার বৈশাখ মাস শেষ হওয়ার আগেই ধান কাটা শেষ হয়েছে।প্রকৃতি অনুকুলে থাকায় ভালোয় ভালোয় ধান কাটার কাজ শেষ হয়। এ উপজেলায় সাধারণত বোরো ফসল চৈত্রের শেষের দিকে ধান পাকা শুরু হয়। পুরো বৈশাখ মাসজুড়ে ধান কর্তনের ধুম পড়ে। জ্যৈষ্ঠ মাস পর্যন্ত লেগে যায় ফসল গোলায় তুলতে। অন্য যেকোনো বছরের তুলনায় এ বছর বৈশাখ মাসেই ধান গোলায় তুলার কাজ সম্পন্ন হয়ে যাবে। বোরোর সোনার ধান ঘরে তুলতে প্রচণ্ড তাপদাহ উপেক্ষা করে ফসলের মাঠে মাঠে লড়ছেন হাওরপারের কৃষক পরিবারের লোকজন। এ বারের বাম্পারে ফলনে কৃষকরা আনন্দিত। তবে শ্রমিক সংকটের দুঃশ্চিতায় থাকলেও কম্পাইন হারভেষ্টার ধান কাটার যন্ত্রের সুবিদায় এবং প্রকৃতির আর্শিবাদে ফসলের মাঠ থেকে ধান কাটার কাজ সমাপ্তি হয়েছে।
কৃষক মোহন মিয়া বলেন, এবারই আগেভাগে ধান কাটা শেষ হয়েছে। ৬০ কেদার জমিতে ধান চাষ করি। সব জমির ধান কাটা শেষ। এক দুই দিনের মধ্যে গোলায় তুলার কাজও শেষ হয়ে যাবে। অন্যান্য বছর বোরো ফসল গোলায় তুলতে জ্যেষ্ট মাস পর্যন্ত লাগতো। এ বছরই মনে বৈশাখেই শেষ হবে।
হাওর বাঁচাও আন্দোলন কমিটির সদস্য সচিব অমিত দেব বলেন, প্রকৃতির কৃপায় এবার ভালোয় ভালোয় ধান কাটা শেষ হয়েছে। কৃষকরা গোলায় ধান তুলতে এখন ব্যস্ত সময় পার করছেন। এ বছর ফসল ভালো হওয়ায় হাওরবাসী খুশি।
জগন্নাথপুর উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা কাওসার আহমেদ বলেন, গতকাল শুক্রবার ধান কাটার মধ্যদিয়ে এ উপজেলার সবকটি হাওরের শতভাগ ধান কর্তন শেষ হয়েছে। তবে হাওরের বাহিরে কিছু উচু জমিতে এখনও ধান কাটা চলছে। দুই তিন দিনের মধ্যে তা শেষ হয়ে যাবে। প্রায় ২০ হাজার ৩৭৫ হেক্টর জমিনে বোরো আবাদ করা হয়েছে। লক্ষ্যমাত্রা ছিল এক লাখ ২৮ হাজার ১২০ মেট্রিকটন। আশা করছি এ বছর বোরোর বাম্পার ফলনে লক্ষ্যমাত্রা ছাড়িয়ে যাবে।