বন্যার পানিতে তাহিরপুর প্লাবিত, দূর্ভোগ মানুষ

তাহিরপুর প্রতিনিধি
টানা বর্ষন আর ভারত থেকে অব্যাহত ভাবে নেমে আসা পাহাড়ী ঢলের পানি বৃদ্ধির কারনে সুনামগঞ্জের তাহিরপুর উপজেলায় নতুন নতুন এলাকা প্লাবিত হচ্ছে।
জেলা শহরের সাথে তাহিরপুর উপজেলার সড়ক যোগাযোগ বন্ধ রয়েছে।অসাধু ব্যবসায়ীরা দ্রবমূল্যের দাম বাড়িয়ে দিয়েছে।
যাদুকাটা, বৌলাই নদী দিয়ে পানি প্রবল বেগে ভাটির দিকে প্রবাহিত হওয়ায় উপজেলায় ইতিমধ্যে ৮-১০ গ্রামের বসতবাড়ি পানিতে তলিয়ে গেছে। যে পরিস্থিতি সৃষ্টি হয়েছে এতে করে গত ২০২২ সালের মতই বন্যার আতংকে উৎবেগ আর উৎকন্ঠা রয়েছেন হাজার হাজার মানুষ।
বুধবার (১৯ জুন) দুপুর ২টায় সুনামগঞ্জের ষোলগড় পয়েন্টের সুরমা নদীর পানি বিপদসীমার ৪০সেন্টিমিটারের উপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে। এছাড়াও ছাতক পয়েন্ট সুরমা নদীর পানি বিপদসীমার ১৪৬সেন্টিমিটারের উপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে বলে জানিয়েছেন সুনামগঞ্জ পানি উন্নয়ন বোর্ড।
খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, ঢলের পানি ভাটির দিকে প্রবল বেগে প্রবাহিত হওয়ায় হু হু করে বাড়ছে বিশ্বম্ভরপুর,তাহিরপুর,জামালগঞ্জ, র্ধমপাশা উপজেলার ভাটি এলাকায়। পানি বৃদ্ধি পাওয়ায় বন্যার আতংকে নিজেদের ও বসত বাড়ির মালামাল রক্ষায় উৎবেগ আর উৎকন্ঠায় আছে। নদীর তীরবর্তী বসত বাড়ি ভাঙ্গনের হুমকির মুখে পড়েছে,এছাড়াও নিন্মাঞ্চলের মসজিদ,মন্দির,শ্বশ্বান,বসত বাড়ি ও বিভিন্ন বাজারে দোকান পানিতে ডুবে গেছে। সড়ক পানিতে ডুবে যাওয়ায় তাহিরপুর উপজেলা সাথে সড়ক যোগাযোগ বন্ধ রয়েছে ৭ টি ইউনিয়নের সাথে। তাহিরপুর বিশ্বম্ভরপুর সুনামগঞ্জ সড়কের দূর্ঘাপুর ও শক্তিয়ারখলা সড়ক এবং আনোয়ারপুর সড়ক,তাহিরপুর বাদাঘাট সড়ক পানিতে ডুবে গেছে যার জন্য যানবাহন চলাচল বন্ধ রয়েছে। নৌকায় চলাচল করতে গিয়ে চরম দুর্ভোগের শিকার হচ্ছেন তাহিরপুর,বিশ্বম্ভরপুর, ধর্মপাশা,মধ্যনগর উপজেলাসহ ৪টি উপজেলার মানুষ।
টাংগুয়ার হাওর পাড়ে বাসিন্দা শামিম আহমেদ জানান,আমরা হাওর পাড়ের মানুষজন বন্যার আতংকে আছি। যে হারে পানি বৃদ্ধি পাচ্ছে এতে করে বসত ঘরে পানি প্রবেশ করবে যদি আর সামান্য পরিমান পানি বাড়ে।
তাহিরপুর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা সালমা পারভিন জানান, উপজেলার পাহাড়ী ঢলে পানি বৃদ্ধি পাওয়ার পর্যটকদের আগমনে নিষেধাজ্ঞা জারী করা হয়েছে। এছাড়াও বন্যা পরিস্থিতি মোকাবিলা প্রশাসনের পক্ষ থেকে প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ গ্রহণ করা হয়েছে। উপজেলার আশ্রয় কেন্দ্র গুলো খোলা হয়েছে।
সুনামগঞ্জ পানি উন্নয়ন বোর্ডের নির্বাহী প্রকৌশলী মামুন হাওলাদার জানান, ভারতের চেরাপুঞ্জিতে বৃষ্টির কারনে জেলার সকল নদী ও হাওরের পানি বৃদ্ধি পাওয়ায় নিন্মাঞ্চলের বসত বাড়িতে পানি উঠেছে। বৃষ্টি ও বন্যা পরিস্থিতি আরও অবনতি হবে।
সুনামগঞ্জ জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ রাশেদ ইকবাল চৌধুরী জানিয়েছেন, ঢলের পানি বাড়ছে। বন্যা পূর্ব প্রস্তুতি হিসাবে সকল ধরনের প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ গ্রহণ করা হয়েছে। এছাড়াও জেলার সকল উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তাদের বন্যা মোকাবিলা সর্তক থাকা নিদেশ দেয়া হয়েছে।