জৈন্তাপুরে স্বেচ্ছাশ্রমে রাস্তা নির্মাণ
প্রলয়ঙ্কারী বন্যায় ক্ষতিগ্রস্ত ১৫০ফুট ভেঙ্গে যাওয়া রাস্তা স্হানীয় উদ্যোগে চলাচলের উপযোগী করে তুলা হয়েছে।
গত ৩০ মে গভীররাতে উপজেলার ২নং জৈন্তাপুর ইউনিয়ন পরিষদের অন্তর্ভুক্ত ১নং লক্ষিপুর গ্রামের মানুষের চলাচলের একমাত্র রাস্তাটি বানের পানির ধাক্কায় ১৫০ ফুট পর্যন্ত ভেঙ্গে গভীর খালের সৃষ্টি হয়।
এ সময় রাস্তার বিপরীতে থাকা একটি বাড়ী ও বাড়ীতে থাকা সব আসবাবপত্র পানির স্রোতে ভাসিয়ে নিয়ে যায়। আব্দুল হক কালাই মিয়ার ছেলে হারুণ মিয়ার মালিকানাধীন ওই বাড়ী হারিয়ে এখনোও সে গৃহহীন অবস্থায় বসবাস করছে।
এদিকে মে মাসের বন্যায় রাস্তা ভেঙ্গে যাওয়ার কারণে লক্ষিপুর গ্রামে কোন গাড়ী কিংবা মোটরসাইকেল প্রবেশ করতে পারছে না। তার উপর গত ১৭ই জুন দ্বিতীয় দফা ও ১লা জুলাই তৃতীয় দফা বন্যায় প্লাবিত হলে এই রাস্তার ভাঙ্গা অংশ দিয়ে প্রবল স্রোতে পানি প্রবেশ করতে শুরু করে।
স্হানীয়দের সাথে আলাপকালে জানা যায়,প্রতিদিন এই সড়কে প্রায় ১০-১২ হাজার মানুষ যাতায়াত করে থাকে। তার মধ্যে বড় একটা অংশ হলো স্কুল ও কলেজ যাওয়া আসা করা ছাত্রছাত্রীরা। গত একমাস ধরে সীমাহীন কষ্ট উপেক্ষা করে ১নং লক্ষিপুর, ডুলটিরপাড়, চাতলারপাড় এলাকার মানুষ এই সড়কে যাতায়াত করছে।
কোন ধরণের গাড়ী চলাচল না করার ফলে বাজার সদাই,বস্তা,গ্যাস সিলিন্ডারের মত ভারীপন্য নিয়ে আনুমানিক ৫ কিমি এলাকা চলাচল খুবই দুর্বিষহ হয়ে পড়েছিলো।
এদিকে সরকারিভাবে ক্ষতিগ্রস্ত সড়কটি পুনঃসংস্কারে বিলম্ব হওয়ায় মানুষের দুর্ভোগ লাঘবে এবার সেচ্ছাশ্রম ও স্হানীয়দের সহযোগিতায় রাস্তাটি সংস্কারের উদ্যোগ গ্রহন করা হয়।
বৃহস্পতিবার (৪ জুলাই) সরজমিনে ভেঙে যাওয়া এলাকায় গিয়ে দেখা যায় গ্রামের যুবকের বাঁশ কেটে বাঁধ নির্মাণ করে রাস্তাটি চলাচলের জন্য উপযোগী করে তুলছে। এ সময় সংস্কার কাজের স্হান পরিদর্শনে আসেন ২ নং জৈন্তাপুর ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান ফখরুল ইসলাম, সাবেক চেয়ারম্যান আলমগীর হোসেন।
এ সময় আরো উপস্থিত ছিলেন শ্রীপুর পাথর কোয়ারী ব্যবসায়ী বহুমুখী সমবায় সমিতির সাধারণ সম্পাদক দিলদার আহমেদ, আব্দুল মতিন,আমির হোসেন, যুবলীগ নেতা দিলাল আহমেদ সহ অন্যান্যরা।
এবিষয়ে ২নং জৈন্তাপুর ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান ফখরুল ইসলাম বলেন, উপজেলা পরিষদ ও উপজেলা প্রশাসনের পক্ষ থেকে কিছু আর্থিক সহায়তার পাশাপাশি স্হানীয়দের সার্বিক সহযোগিতায় ১৫০ ফুট ভেঙ্গে পড়া রাস্তা আজ এলাকাবাসীর সেচ্ছাশ্রমের ভিত্তিতে সংস্কার করা হচ্ছে।
তিনি আরো বলেন, চলতি বছর তিনদফা বন্যায় শুধু লক্ষিপুর নয় বরং জৈন্তাপুর ইউনিয়নের বেশ কয়েকটি পয়েন্টে মারাত্মক ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। তিনি বলেন ইউনিয়ন পরিষদের জনপ্রতিনিধিদের মাধ্যমে ইতিমধ্যে সম্পূর্ণ, আংশিক ক্ষতিগ্রস্ত রাস্তার তালিকা করে উপজেলা স্হানীয় সরকার প্রকৌশল অধিদপ্তর ও পিআইও অফিসে জমা দেয়া হয়েছে বলে তিনি নিশ্চিত করেছেন।