বাংলা ব্লকেড কর্মসূচি পালনে শাবিপ্রবি শিক্ষার্থীরা, ফের মহাসড়ক অবরোধ

শাবিপ্রবি প্রতিনিধি
কোটা বাতিলের দাবিতে বাংলা ব্লকেড কর্মসূচি বাস্তবায়নে ফের সিলেট-সুনামগঞ্জ মহাসড়ক অবরোধ করেছে শাহজালাল বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের (শাবিপ্রবি) শিক্ষার্থীরা।
রবিবার (৭ জুলাই) বেলা চারটায় শাবিপ্রবির মূল ফটকের সামনের এ অবরোধ কর্মসূচি পালন করে বিশ্ববিদ্যালয়ের সাধারণ শিক্ষার্থীরা। তবে জরুরি কাজের যানবাহনসহ অ্যাম্বুলেন্স ছেড়ে দেওয়া হচ্ছে। এরআগে বিশ্ববিদ্যালয়ের গুরুত্বপূর্ণ সড়ক প্রদক্ষিণ করে বিক্ষোভ মিছিল ও ক্যাম্পাসের গোলচত্বরে ছাত্র সমাবেশ করে আন্দোলনকারীরা।
সরেজমিনে দেখা যায়, এসময় সড়ক অবরোধ করে রাস্তায় ক্রিকেট খেলতে দেখা যায় শিক্ষার্থীদের।
এদিকে বিক্ষোভ মিছিল চলাকালীন কোটা বাতিলের দাবিতে কোটা না মেধা? মেধা মেধা, আপোস না সংগ্রাম? সংগ্রাম সংগ্রাম, দালালি না রাজপথ? রাজপথ রাজপথ, সারা বাংলায় খবর দে কোটা প্রথার কবর দে, মেধা হত্যার অপর নাম কোটা প্রথার জয়গান, মুক্তিযুদ্ধের চেতনা কোটা প্রথা মানেনা, চলছে দাবি চলবে কোটার শিকড় জ্বলবে ইত্যাদি স্লোগান দেন আন্দোলনরত শিক্ষার্থীরা।
অবরোধকালীন বিশ্ববিদ্যালয়ের আন্দোলনকারী শিক্ষার্থী সাকিব আল হাসান বলেন, বাংলাদেশ গড়তে হলে মেধাবীদের নিয়েই গড়তে হবে। স্বাধীনতার ৫৩ বছর পর কোটা প্রথার কোনো প্রয়োজন নেই। কোটা প্রথা পুনর্বহাল শিক্ষার্থীদের সঙ্গে প্রহসন। ২০১৮ সালের পরিপত্র যতক্ষণ না বহাল হচ্ছে, ততক্ষণ ছাত্রসমাজ রাজপথে থাকবে।
বাংলা বিভাগের শিক্ষার্থী আব্দুল্লাহ বলেন, আমরা দাবি আদায় না হওয়া পর্যন্ত রাজপথ ছাড়ব না। এই বৈষম্যের দ্রুত অবসান চাই। নাহলে আবারও এই আন্দোলন ভয়াবহ রূপ নিবে।
উল্লেখ্য, শিক্ষার্থীদের আন্দোলনের মুখে ২০১৮ সালের ৪ অক্টোবর জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়ের জারি করা পরিপত্রে সরকারি দপ্তর, স্বায়ত্তশাসিত বা আধা স্বায়ত্তশাসিত প্রতিষ্ঠান ও বিভিন্ন করপোরেশনে চাকরিতে সরাসরি নিয়োগের ক্ষেত্রে ৯ম থেকে ১৩তম গ্রেডে ৩০ শতাংশ মুক্তিযোদ্ধা কোটা বাতিল করা হয়। মুক্তিযোদ্ধা কোটার পাশাপাশি বাতিল হয় ১০ শতাংশ করে নারী ও জেলা কোটাও।
তবে প্রথম ও দ্বিতীয় শ্রেণির চাকরিতে কোটা বাতিল হলেও তৃতীয় ও চতুর্থ শ্রেণির পদে কোটা ব্যবস্থা আগের মতই বহাল থাকবে বলে ওই পরিপত্রে বলা হয়।
ওই পরিপত্রের বৈধতা চ্যালেঞ্জ করে ২০২১ সালে রিট করেন চাকরিপ্রত্যাশী ও মুক্তিযোদ্ধার সন্তান অহিদুল ইসলামসহ সাতজন। রিটের প্রাথমিক শুনানি নিয়ে ২০২১ সালের ৬ ডিসেম্বর হাই কোর্ট রুল দেয়। রুলে ওই পরিপত্র কেন আইনগত কর্তৃত্ববহির্ভূত ঘোষণা করা হবে না, সে বিষয়ে জানতে চাওয়া হয়। এরপর থেকেই ২০১৮ সালের পরিপত্র পুনর্বহালের দাবিতে আন্দোলন করে আসছেন শিক্ষার্থী ও চাকরিপ্রত্যাশীরা।
এরই মধ্যে গত বৃহস্পতিবার সকালে সরকারি চাকরির প্রথম ও দ্বিতীয় শ্রেণিতে মুক্তিযোদ্ধা কোটা পদ্ধতি বাতিলের সিদ্ধান্ত অবৈধ ঘোষণা করে হাইকোর্টের রায় স্থগিত চেয়ে রাষ্ট্রপক্ষের করা আবেদনের শুনানি মুলতবি হয়েছে। প্রধান বিচারপতি ওবায়দুল হাসানের নেতৃত্বে আপিল বেঞ্চ চেম্বার আদালত এ আদেশ দেন। ফলে আপাতত হাইকোর্টের রায় বহাল রয়েছে।
এরই প্রতিবাদে শিক্ষার্থীদের এই আন্দোলন।