কোম্পানীগঞ্জে প্রতিনিয়ত পাথর চুরি, কমতে পারে পর্যটক
সিলেটের সীমান্তবর্তী উপজেলা কোম্পানীগঞ্জের ভোলাগঞ্জে রয়েছে সাদা পাথর নামক পর্যটন কেন্দ্র। এখানে ছড়িয়ে ছিটিয়ে শুভ্র বিছানা সাজিয়ে আছে অসংখ্য সাদাপাথর। অপূর্ব এ স্থানটিতে দেশের বিভিন্ন প্রান্ত থেকে প্রতিদিন হাজার হাজার পর্যটক আনন্দ ভ্রমণ করতে আসেন শুধুমাত্র সাদা পাথর দেখতে । কিন্তু কয়েকমাস ধরে রাতের আঁধারে চুরি হয়ে যাচ্ছে এখানকার সাদাপাথর।
প্রতিনিয়ত সাদাপাথর চুরি হওয়ার ফলে সৌন্দর্য হারাচ্ছে দেশের অন্যতম পর্যটন কেন্দ্র ভোলাগঞ্জ সাদাপাথর এলাকা। ওই এলাকায় বিজিবির ক্যাম্প রয়েছে। অপরদিকে ভোলাগঞ্জ ১০ নম্বর নামক এলাকায়ও রয়েছে বিজিবির অস্থায়ী চেকপোস্ট, ভোলাগঞ্জ পুলিশ ফাঁড়ি, কালাইরাগ ক্যাম্প। এরপরে ধলাই সেতু সংলগ্ন এলাকায় কালাসাদক ক্যাম্প। এতোকিছু থাকার পরও সাদাপাথর চুরি হয়। সবাই যেখানে সাধু, তাহলে কী ভুত? এসে রাতের আধাঁরে খেয়ে সাফ করছে এসব পাথর! প্রশ্ন জনমনে।
স্থানীয়দের অভিযোগ, ভোলাগঞ্জ পুলিশ ফাঁড়ির কিছু অসাধু সদস্যের যোগসাজশেই একটি প্রভাবশালী সিন্ডিকেট চুরি করে এসব পাথর। রাতের আধারে পুলিশ ও বিজিবিকে ম্যানেজ করে বারকি নৌকা দিয়ে সাদা পাথর পর্যটন স্পট থেকে পাথর এনে নদীর পশ্চিম পাড়ে ভোলাগঞ্জ গুচ্ছগ্রাম এলাকায় নদীর কিনারে রাখা হয়। অপরদিকে নদীর পূর্বপাড়ের কালাইরাগ, দয়ার বাজার, লিলাইবাজার, কলাবাড়ী (সুজনের ঘাট) নামক স্থানের বিভিন্ন যায়গায় পাথর স্তুপ করে রাখে।
সকাল হওয়ার পূর্বে স্তুপাকারে রাখা সেই পাথর পে-লোডার মেশিন দিয়ে ট্রাকে বুঝাই করে ধুপাগোল নামক এলাকায় নিয়ে যাওয়া হয়। যে সব পাথর ট্রাকে বুঝাই করা সম্ভব হয়না সেগুলো ইঞ্জিন চালিত ট্রলি ও ট্রাক্টর দিয়ে অন্যত্র সরিয়ে ফেলা হয় এবং সকাল হয়ে গেলে অবশিষ্ট যে পাথর সরানো যায়না সেগুলো নদীর কিনারেই পরে থাকে। ১৬ জুলাই মঙ্গলবার সরজমিনে গিয়ে এর সত্যতা পাওয়া যায়।
সাদাপাথর পর্যটন কেন্দ্রের নিকটবর্তী এলাকার এক বাসিন্দা নাম প্রকাশ না করার শর্তে জানান, প্রায়ই রাতের আঁধারে সাদাপাথর চুরি করছে একটি মহল। নেপথ্যে রয়েছেন ধলাই নদীর পূর্ব ও পশ্চিম পাড়ের কয়েকজন পাথর ব্যবসায়ী। ভোলাগঞ্জ পুলিশ ফাঁড়ির নৌকার মাঝি মোশাহিদের মাধ্যমে পুলিশ’কে ম্যানেজ করেন বারকি শ্রমিক ও পাথর ব্যবসায়ীরা।
এ বিষয়ে ভোলাগঞ্জ ফাঁড়ির ইনচার্জ সহকারী উপপরিদর্শক (এএসআই) বিজয় পাশী বলেন, পাথর চুরি ঠেকাতে আমরা সবসময় তৎপর রয়েছি।
কোম্পানীগঞ্জ থানার ওসি গোলাম দস্তগীর আহমেদ বলেন, পুলিশ নিয়মিত দায়িত্ব পালন করে। পাথর চুরি বন্ধে আমরা কঠোর অবস্থানে রয়েছি।
সহকারী কমিশনার (ভূমি) এম. আব্দুল্লাহ ইবনে মাসুদ আহমেদ বলেন, আমরা নিয়মিত অভিযান পরিচালনা করছি।