ঢাকার সঙ্গে সিলেটসহ সারাদেশের বাস চলাচল বন্ধ

দৈনিকসিলেট ডেস্ক :
শিক্ষার্থীদের কোটা সংস্কার আন্দোলনে রাজধানীর ঢাকার সঙ্গে দেশের সব জেলার বাস যোগাযোগ বন্ধ রয়েছে। বৃহস্পতিবার (১৮ জুলাই) সকাল থেকে রাজধানীর গাবতলী, মহাখালী, সায়েদাবাদ বাস টার্মিনাল থেকে দূরপাল্লার কোনো বাস ছেড়ে যায়নি।
অন্যান্য জেলা থেকেও আসছে না কোনো বাস। এদিন সকাল সোয়া ৯টার দিকে গাবতলী বাস টার্মিনালে গিয়ে দেখা যায়, যাত্রী না থাকায় টার্মিনালের প্রায় সব টিকিট কাউন্টার ফাঁকা। টার্মিনালের অনেক বাস কাউন্টার বন্ধ দেখা গেছে। সারি সারি দাঁড়িয়ে আছে বাসগুলো।
গাবতলী ও সায়েদাবাদ বাস টার্মিনালের বিভিন্ন কাউন্টারের স্টাফরা জানান, মালিকরা বাস চলাচল বন্ধ রাখার সিদ্ধান্ত নিয়েছেন। এদিন সকাল সোয়া ৯টার দিকে গাবতলী বাস টার্মিনালে গিয়ে দেখা যায়, যাত্রী না থাকায় টার্মিনালের প্রায় সব টিকিট কাউন্টার ফাঁকা।
উল্লেখ্য, ‘শিক্ষার্থীদের শান্তিপূর্ণ আন্দোলনে পুলিশ-বিজিবি-র্যাব ও সোয়াটের ন্যক্কারজনক হামলা, খুনের প্রতিবাদ, খুনিদের বিচার, সন্ত্রাসমুক্ত ক্যাম্পাস নিশ্চিত করা এবং কোটাব্যবস্থার যৌক্তিক সংস্কারের দাবিতে’ এদিন কমপ্লিট শাটডাউন (সর্বাত্মক অবরোধ) পালন করছেন আন্দোলনকারী শিক্ষার্থীরা। হাসপাতাল, গণমাধ্যমসহ অন্যান্য জরুরি সেবা ছাড়া এই কর্মসূচি চলাকালে সব কিছু বন্ধ থাকবে—ঘোষণা দিয়েছেন শিক্ষার্থীরা।
২০১৮ সালে সরকারি চাকরির প্রথম ও দ্বিতীয় শ্রেণিতে কোটা বাতিল করে জারি করা পরিপত্র হাইকোর্ট অবৈধ ঘোষণার প্রতিক্রিয়ায় শিক্ষার্থীরা দুই সপ্তাহ ধরে টানা আন্দোলন চালিয়ে আসছে। এরমধ্যে গত রবিবার এক সংবাদ সম্মেলনে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা সাফ জানিয়ে দেন, সরকারি চাকরিতে কোটার বিষয়টি আদালতেই ফয়সালা করতে হবে।
বক্তব্যের এক পর্যায়ে সরকারপ্রধান বলেন, “কোটা আন্দোলন করার আগে তো তাদের রেজাল্টগুলো দেখা উচিত ছিল যে- কোথায় তারা দাঁড়িয়েছে! দ্বিতীয়টি হচ্ছে মুক্তিযুদ্ধ এবং মুক্তিযোদ্ধাদের প্রতি তাদের এত ক্ষোভ কেন? মুক্তিযোদ্ধাদের নাতি পুতিরা পাবে না, তাহলে কি রাজাকারের নাতি পুতিরা (চাকরি) পাবে?”
ধারাবাহিক আন্দোলনের মধ্যে শিক্ষার্থী ও চাকরিপ্রত্যাশীরা প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার ওই বক্তব্য নিয়ে রবিবার রাতে ব্যাপক প্রতিক্রিয়া দেখান, বিভিন্ন বিশ্ববিদ্যালয়ের ক্যাম্পাসে গভীর রাতে বিক্ষোভে নামেন। সেখানে স্লোগান দেয়া হয়, ‘তুমি কে আমি কে, রাজাকার-রাজাকার; কে বলেছে কে বলেছে, স্বৈরাচার, স্বৈরাচার’।
এরপর সোমবার পাল্টাপাল্টি কর্মসূচি নিয়ে মাঠে নামে আন্দোলনরত শিক্ষার্থীদের প্ল্যাটফর্ম বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন এবং সরকার সমর্থক ছাত্র সংগঠন ছাত্রলীগ। একপর্যায়ে দুই পক্ষের মধ্যে সংঘর্ষ বাঁধে এবং পরে আন্দোলনকারীদের পিটিয়ে ছত্রভঙ্গ করে দেয় ছাত্রলীগ। পিটুনিতে আহত হয়ে প্রায় তিনশ শিক্ষার্থী ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে চিকিৎসা নিতে যান, তাদের মধ্যে ১২ জনকে হাসপাতালে ভর্তি করে নেয়া হয়। পরদিন মঙ্গলবার ও বুধবার ঢাকাসহ দেশের বিভিন্ন স্থানে সড়ক ও রেল অবরোধ করেছেন আন্দোলনকারীরা।