পুরুষের যৌন রোগ
ডা. দিদারুল আহসান
শরীরের অন্যান্য রোগের মতোই এটা একটি রোগ। কিন্তু বেশির ভাগ সময়েই কেউ এ রোগের কথা স্বীকার করতে চান না আমাদের দেশে। যৌন রোগে আক্রান্ত হলেও এ বিষয়টি সহজে কারও কাছে বলতে চান না, এমনকি চিকিৎসকের কাছে পর্যন্ত অনেক বিষয় গোপন করেন।
এতে চিকিৎসকের চিকিৎসা করতেও সমস্যা হয়ে যায়। আর যিনি আক্রান্ত হয়েছেন, তিনিও নানা ধরনের জটিলতায় ভোগেন। যৌন স্বাস্থ্যের বিষয়ে সচেতনতা নারী-পুরুষ সবার জন্যই জরুরি।
খেয়াল রাখা জরুরি: যৌন রোগ আক্রান্ত পুরুষ মিলনের সময় তার সঙ্গীর দেহে এসব রোগ সংক্রমিত করে। এ কারণে এগুলোকে যৌন সংক্রমিত রোগ বলা হয়। তাই এ বিষয়ে সচেতনতা প্রয়োজন।
এসব রোগ যাদের আছে, অনেক সময় তারা তা জানেন না অথবা এ রোগের প্রতি কোনো নজর দেন না। তাই সমস্যা দেখা দেয়া মাত্র চিকিৎসকের কাছে যেতে হবে। একাধিক সঙ্গীর সঙ্গে সঙ্গম করলে এসব রোগে আক্রান্ত হওয়ার ঝুঁকি বেড়ে যায়।
প্রতিরোধ: যৌন রোগ প্রতিরোধের জন্য সবচেয়ে বেশি যে জিনিসটি দরকার সেটা হলো, যৌবনের শুরুতেই তরুণদের এ বিষয়ে জ্ঞানলাভে সহায়তা করা। তরুণ, যুবকদের থেকে শুরু করে বয়স্ক সবাইকে সচেতন করে তুলতে হবে নানা প্রকার যৌন রোগ হওয়ার কারণ এবং এগুলোর মারাত্মক পরিণতি সম্পর্কে।
বিজ্ঞাপন
এই রোগ প্রতিরোধে বেশকিছু পদক্ষেপ নেয়া যেতে পারে।
*বহুগামিতা দূর করতে হবে।
*গোপন স্থান সবসময় পরিষ্কার রাখতে হবে। বিশেষ করে সঙ্গমের পর।
*চিকিৎসা নিশ্চিত করতে হবে, যাতে এই রোগ অন্যদের মধ্যে না ছড়ায়।
*কনডমের সঠিক ব্যবহার অনেক ক্ষেত্রে যৌনরোগ প্রতিরোধ করে।
*কেউ যদি মনে করেন তার যৌনরোগ আছে, তাহলে শিগগিরই সম্ভব পরীক্ষা এবং চিকিৎসা করানো উচিত। শুরুতে যৌনরোগের চিকিৎসা করা সহজ, পরে চিকিৎসা করা কঠিন হয়ে পড়ে।
এই সংক্রমণের চিকিৎসা যদি তাড়াতাড়ি করা না হয়, তাহলে পুরুষের মাধ্যমে নারীরা আক্রান্ত হবে। নারীদের জরায়ু, টিউব ও ডিম্বকোষে সেটা সংক্রমণ হবে। এটা প্রথম দিকে সাংঘাতিক অসুস্থতার কারণ হতে পারে এবং পরে মহিলা বন্ধ্যা হয়ে যেতে পারে। অথবা বার বার গর্ভ নষ্ট হতে পারে অথবা মৃত বাচ্চা প্রসব করতে পারে।
পুরুষের বেলায় অণ্ডকোষ আক্রান্ত হতে পারে। সন্তান জন্মদানের ক্ষমতা হারিয়ে ফেলতে পারে। এ ছাড়া দেখা দিতে পারে আরও নানা ধরনের সমস্যা। তাই কেউ আক্রান্ত হলে তাৎক্ষণিকই কোনো ধরনের সংকোচ না করে চিকিৎসকের কাছে যাওয়া উচিত।
লেখক: ত্বক ও যৌনব্যাধি বিশেষজ্ঞ আল-রাজী হাসপাতাল, ফার্মগেট ঢাকা।