প্রতিবেশীকে কষ্ট দেওয়ার পরিণতি
দৈনিকসিলেট ডেস্ক :
মানুষের জীবনযাত্রায় প্রতিবেশীর গুরুত্ব অপরিসীম। প্রতিবেশীর হক ও অধিকার ইসলামে অনেক গুরুত্বপূর্ণ ব্যাপার। প্রতিবেশীর সঙ্গে ভালো ব্যবহার করা ঈমানি দায়িত্ব। তাদের খোঁজখবর নেওয়া, বিপদে পাশে দাঁড়ানো ইবাদত। প্রতিবেশীকে কষ্ট দেওয়া গুনাহ। যারা প্রতিবেশীকে কষ্ট দেয়, তারা জান্নাত পাবে না। আল্লাহতায়ালা এদের পছন্দ করেন না। প্রতিবেশীর সঙ্গে সদাচরণের নির্দেশ দিয়ে আল্লাহ বলেন, ‘তোমরা আল্লাহর ইবাদত করো, কিছুকেই তাঁর শরিক করো না এবং মাতা-পিতা, আত্মীয়-স্বজন, এতিম, অভাবগ্রস্ত, নিকট প্রতিবেশী, দূর প্রতিবেশী, সাথি, মুসাফির এবং তোমাদের আয়ত্তাধীন দাস-দাসীদের সঙ্গে সদ্ব্যবহার করো, নিশ্চয়ই আল্লাহ ওই লোককে ভালোবাসেন না, যে অহংকারী, দাম্ভিক।’ (সুরা নিসা, আয়াত: ৩৬)
মুমিন হওয়ার অন্যতম শর্ত হলো প্রতিবেশীর সঙ্গে উত্তম আচরণ করা। কেউ নামাজ পড়েন, রোজা রাখেন, হজ করেন, জাকাত দেন ও নিয়মিত দান-সদকাও করেন; কিন্তু প্রতিবেশীর সঙ্গে মন্দাচরণ করেন, তা হলে সে প্রকৃত মুমিন হতে পারবে না। রাসুলুল্লাহ (সা.) বলেছেন, ‘আল্লাহর কসম! সে মুমিন নয়। আল্লাহর কসম! সে মুমিন নয়। আল্লাহর কসম! সে মুমিন নয়। জিজ্ঞেস করা হলো, হে আল্লাহর রাসুল, কে সেই ব্যক্তি? তিনি বলেন, যার অনিষ্ট থেকে তার প্রতিবেশী নিরাপদ থাকে না।’ (বুখারি, ৪৭৪৫)
আরেক হাদিসে আছে, ‘যে ব্যক্তি আল্লাহ ও আখেরাতের প্রতি ঈমান রাখে, সে যেন প্রতিবেশীর সঙ্গে সদাচরণ করে।’ (মুসলিম, ১৮৫)
মুমিনের জীবনের কাঙ্ক্ষিত স্বপ্ন থাকে জান্নাতে যাওয়ার। জান্নাতে যাওয়ার অন্যতম উপায় হলো প্রতিবেশীকে কষ্ট না দেওয়া। রাসুলুল্লাহ (সা.) বলেছেন, ‘সেই ব্যক্তি কখনো জান্নাতে যাবে না, যার অন্যায়ের কারণে তার প্রতিবেশী নিরাপদে থাকে না।’ (মিশকাত, ৪৯৬৩)
প্রতিবেশীর খোঁজ নেওয়া মুমিনের বৈশিষ্ট্য। প্রতিবেশীর অভাব কিংবা বেদনার দিনে তার পাশে দাঁড়ানো সওয়াবের কাজ। মাঝেমধ্যে তাকে হাদিয়া দেওয়া যায়। হাদিয়া পরস্পরের মধ্যে সম্প্রীতি বৃদ্ধি করে। রাসুলুল্লাহ (সা.) বলেছেন, ‘হে আবু জর, যখন তুমি তরকারি রান্না করো, তখন একটু বেশি পানি দিয়ে ঝোল বেশি করো এবং তোমার প্রতিবেশীর হক পৌঁছে দাও।’ (মিশকাত, ১৯৩৭)
রাসুলুল্লাহ (সা.) বলেছেন, ‘যে আল্লাহ ও পরকালের প্রতি ঈমান রাখে, সে যেন তার মেহমানকে আপ্যায়ন করে। আর যে আল্লাহ ও পরকালের প্রতি ঈমান রাখে, সে যেন তার প্রতিবেশীকে কষ্ট না দেয়। অনুরূপ যে আল্লাহ ও পরকালের প্রতি ঈমান রাখে, সে যেন ভালো কথা বলে অথবা চুপ থাকে।’ (মিশকাত, ৪২৪৩)