সংখ্যালঘু সম্প্রদায় ও চা-বাগান নেতৃবৃন্দের সঙ্গে মতবিনিময়
আইনশৃঙ্খলা বিঘ্ন ঘটালে কঠোর ব্যবস্থা: মেজর শাহিন আলম
নুর উদ্দিন সুমন, হবিগঞ্জ
হবিগঞ্জের চুনারুঘাটে আসন্ন জন্মাষ্টমী পূজা উদযাপন উপলক্ষে সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতি বজায় রাখতে উপজেলা প্রশাসন ও সেনাবাহিনীর মতবিনিময় সভা অনুষ্ঠিত হয়েছে। এতে প্রধান অতিথির হিসেবে বক্তব্যে ৬ বীর পিএসসি কমান্ডিং অফিসার মেজর মোঃ শাহিন আলম বলেন, সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতি বজায় রাখতে হবে, আমরা কোন দলের নয়, আইনশৃঙ্খলা বিঘ্ন ঘটালে ব্যবস্থা নেওয়া হবে। উপজেলার সার্বিক আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি রক্ষা করার জন্য আমরা সর্বদা সচেষ্ট। আসন্ন জন্মাষ্টমী উপলক্ষে যে কোনো দুষ্কৃতিকারী নাশকতা কার্যক্রম করতে চাইলে আমাদেরকে জানাবেন, ব্যাক্তি নিরাপত্তা, ভাংচুর, লুটপাট, সংঘর্ষ না করতে পারে এবং ধর্মীয় সকল কার্যক্রম নির্বিঘ্নে করতে পারে সে জন্য আমাদের সেনাবাহিনীর টহল জোরদার করা হয়েছে। দুষ্কৃতিকারীদের কোন দল বা পরিচয় নেই, আমরা কোন দলের নয়, আমরা সবার নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে চাই এবং সকল মানুষের নিরাপত্তা দিতে এসেছি। তিনি আরও বলেন, কোন গুজব ছড়াবেন না। অনেক সময় সেনাবাহিনীকে ভুল তথ্য দিয়ে হয়রানী করা হয়। সঠিক তথ্য দিয়ে সেনাবাহিনীর সহযোগীতা নিন।জনগনের যে কোন সমস্যায় সেনাবাহিনী সহযোগীতা করবে।
মঙ্গলবার (১৩ আগস্ট) সন্ধ্যায় চুনারুঘাট উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার সভাকক্ষে এ মতবিনিময় সভা অনুষ্ঠিত হয়।
চুনারুঘাট উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা আয়েশা আক্তার এর সভাপতিত্বে এতে প্রধান অতিথি বক্তব্য রাখেন ৬ বীর পিএসসি কমান্ডিং অফিসার মেজর মোঃ শাহিন আলম। সহকারী কমিশনার ভূমি মাহবুব আলম মাহবুব এর পরিচালনায় বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন ক্যাপ্টেন সামিউল হাসান, থানার অফিসার ইনচার্জ ওসি হিল্লোল রায়, উপজেলা পরিষদের ভাইস চেয়ারম্যান মাওলানা আব্দুল কাইয়ুম তরফদার, মহিলা ভাইস চেয়ারম্যান খাইরুন আক্তার, ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যানবৃন্দ, সাংবাদিকবৃন্দ, সংখ্যালঘু সম্প্রদায়ের নেতৃবৃন্দ, চা- বাগান শ্রমিক নেতৃবৃন্দ। সরকার পতনের পরবর্তী আইনশৃঙ্খলার যে অবনতি হয়েছে তা স্বাভাবিক অবস্থায় ফেরাতে উপজেলা প্রশাসন ও সেনাবাহিনীর যৌত আয়োজনে এই মত বিনিময় সভা অনুষ্ঠিত হয়।
সভায় আইন শৃঙ্খলা রক্ষার্থে বিভিন্ন পদক্ষেপ গ্রহনে সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়। এতে সভার সমাপনী বক্তব্যে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা আয়েশা আক্তার বলেন, আমাদের চুনারুঘাটের পরিস্থিতি স্বাভাবিক, চুনারুঘাটে সম্মিলিতভাবে সবাই মন্দির পাহারা দিচ্ছেন এবং সাম্প্রদায়িক সম্প্রতি বজায় রেখে সকলকে সম্মিলিতভাবে কাজ করতে আহ্বান জানান।
থানার অফিসার ইনচার্জ ওসি হিল্লোল রায় বলেন, সকলের সার্বিক সহযোগিতায় আমরা ভালো আছি।আমরা সকলে কাছে কৃতজ্ঞ। দেশের এই পরিস্থিতিতে একটি তৃতীয় মহল ভিন্ন ঘটনাকে কেন্দ্র করে ইতিপূর্বে আমরা যাদেরকে মাদক, চুরি, ছিনতাই ও ডাকাতির মামলায় গ্রেপ্তার করেছি এরাই কিন্তু এ সুযোগটা কাজে লাগাতে চেয়েছিল। কিন্তু আমাদের তৎপরতার কারণে রাজনৈতিক নেতৃবৃন্দ, জনপ্রতিনিধি ও সাংবাদিকবৃন্দের সহযোগিতায় তারা করতে পারেনি। অন্য যে কোনো থানার চেয়ে আমরা ভালো আছি। আমরা সতর্ক ছিলাম এবং সকলের সহযোগিতা পেয়েছি।
তিনি আরও বলেন, আপনারা জানেন ঘটনার পর আমাদের থানার কার্যক্রম বিঘ্নিত হয়েছে। পরবর্তীতে আমাদের সকল পুলিশ সদস্য কাজে যোগ দিয়েছেন, স্বল্প পরিসরে থানার কার্যক্রম চালু হয়েছে এবং পূর্বের ন্যায় আমাদের কার্যক্রম চলবে। অপরাধ করলে কেউ ছাড় পাবে না। চুনারুঘাট উপজেলা হিন্দু বোদ্ধ ঐক্য পরিষদের সাধারণ সম্পাদক ও উপজেলা আওয়ামীলীগের যুগ্ম সাধারন সম্পাদক বাবু সজল দাস বলেন, চুনারুঘাটে সুন্দর পরিবেশ, আমরা হিন্দু-মুসলিম একসাথে মিলেমিশে বাস করছি, আমি বিশ্বাস করি চুনারঘাট সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতি বন্ধন আজীবন থাকবে।