ওসমানী বিমানবন্দরে মাঙ্কিপক্স প্রতিরোধে সচেতনতামূলক সভা অনুষ্ঠিত
দৈনিকসিলেট ডটকম
বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা (WHO)-এর মাঙ্কিপক্স নিয়ে বৈশ্বিক জনস্বাস্থ্য সতর্কতার প্রেক্ষিতে বাংলাদেশ বেসামরিক বিমান চলাচল কর্তৃপক্ষ, সদর দপ্তরের নির্দেশনা মোতাবেক ওসমানী আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর কর্তৃপক্ষ, এয়ারলাইন্স অপারেটরসমূহ, সিভিল সার্জন অফিস, সিলেট এবং বিমানবন্দর স্বাস্থ্য বিভাগের সহযোগিতায় মাঙ্কিপক্স প্রতিরোধে সচেতনতামূলক সভা অনুষ্ঠিত হয়েছে।
সোমবার (১৯ আগস্ট) দুপুর ১২টায় ওসমানী আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর, সিলেট-এর পরিচালক মোঃ হাফিজ আহমেদের সভাপতিত্বে ডাঃ মনিসর চৌধুরী, সিভিল সার্জন, সিলেট-এর উপস্থিতিতে মাঙ্কিপক্স প্রতিরোধে সচেতনতামূলক ব্রিফিং সেশনে আরো উপস্থিত ছিলেন সিভিল সার্জন কার্যালয়, সিলেট-এর প্রতিনিধি দল, বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা (WHO) প্রতিনিধি, ইউনিসেফ সিলেট প্রতিনিধি, উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা, বিমানবন্দর স্বাস্থ্য কর্মকর্তা, কাস্টমস, ইমিগ্রেশন, অত্র বিমানবন্দরে এয়ারলাইন্স অপারেটরসমূহের (বিমান বাংলাদেশ এয়ারলাইন্স লিমিটেড, ইঊ-এস বাংলা এয়ারলাইন্স, নভোএয়ার, এয়ার-এস্ট্রা) স্টেশন ব্যবস্থাপকগণ এবং অত্র বিমানবন্দরের সিএএবি বিভিন্ন শাখার কর্মকর্তাগণ।
ডাঃ বিনায়ক ভট্টাচার্য্য, কনসালটেন্ট, মেডিসিন, শহীদ শামসুদ্দিন আহমেদ হাসপাতাল, সিলেট Power Point Presentation-এর মাধ্যমে মাঙ্কিপক্স ভাইরাসের উৎপত্তি, ইতিহাস, সংক্রমণ, সচেতনতা, প্রতিরোধ ও প্রতিকারের বিভিন্ন দিক সম্পর্কে উপস্থাপন করেন। যেহেতু আফ্রিকা মহাদেশ হতে উৎপত্তি হওয়া এ ভাইরাসের উপস্থিতি সাম্প্রতিক সময়ে ইউরোপের সুইডেন, দক্ষিন এশিয়ার পাকিস্থান, শ্রীলংকা, ভারত, নেপালে পাওয়া যায়, তাই বাংলাদেশে এই ভাইরাসের সংক্রমণ প্রতিরোধে করণীয় ব্যবস্থা গ্রহনে আলোচনা করা হয়। মাঙ্কিপক্সের সাধারণ লক্ষণগুলির মধ্যে রয়েছে জ্বর (>৩৮.৫° সেলসিয়াস), মাথাব্যথা, পেশী ব্যথা, পিঠে ব্যথা, দুর্বলতা, ফোলা লসিকা গ্রন্থি এবং ত্বকের ফুসকুড়ি বা ক্ষত। লসিকা গ্রন্থির ফোলাভাব মাঙ্কিপক্সের একটি বৈশিষ্ট্যযুক্ত লক্ষণ।
যেহেতু অত্র বিমানবন্দরে নিয়মিত যুক্তরাজ্য ও মধ্যপ্রাচ্যের বিভিন্ন দেশ (সৌদি আরব, সংযুক্ত আরব আমিরাত, কাতার, ওমান) হতে নিয়মিত ফ্লাইট পরিচালিত হয় তাই সাম্প্রতিক সময়ে ছড়িয়ে পড়া মাঙ্কিপক্স ভাইরাসে যাত্রী আক্তান্ত হয়ে বাংলাদেশে সংক্রমিত না হয় সেলক্ষ্যে বিমানবন্দর মেডিকেল টিম কর্তৃক মেডিকেল স্ক্রিনিং গত গত ১৭ আগস্ট হতে চালু হয়েছে এবং বিশেষ প্রয়োজনে ব্যবহারের লক্ষ্যে একটি আইসোলেশন কক্ষ প্রস্তুত রাখা হয়েছে। আগত সকল সম্মানিত যাত্রীদের তাপমাত্রা থার্মাল স্ক্যানারের দ্বারা স্ক্রীন করা হয় এবং প্রয়োজন হলে লক্ষণযুক্ত যাত্রীদের শহীদ শামসুদ্দিন আহমেদ হাসপাতাল, সিলেটে অ্যাম্বুলেন্সের মাধ্যমে পাঠানো হবে।
সিভিল সার্জন প্রতিনিধিরা সুরক্ষামূলক পদক্ষেপের উপর আলোকপাত করেন যেমন সন্দেহভাজন বা নিশ্চিত মাঙ্কিপক্স আক্রান্ত ব্যক্তিদের সাথে ঘনিষ্ঠ যোগাযোগ এড়ানো, মেডিক্যাল মাস্ক পরা, ত্বক থেকে ত্বকে সংস্পর্শ এড়ানো এবং ডিসপোজেবল গ্লাভস ব্যবহার করা, সাবান এবং পানি বা অ্যালকোহল ভিত্তিক হ্যান্ড রাব দিয়ে নিয়মিত হাত পরিষ্কার করা। এয়ারলাইন্সসমূহকে সতর্ক থাকতে এবং কোনও লক্ষণযুক্ত যাত্রী থাকলে দ্রুত স্বাস্থ্য বিভাগকে অবহিত করতে বলা হয়েছে। বিমানবন্দর পরিচালক ও সিভিল সার্জন উপস্থিত সকলকে এসকল বিষয়ে এযাবৎ প্রাপ্ত তথ্য ও স্বাস্থ্য নির্দেশনা সম্পর্কে সচেতন থাকার আহ্বান জানান।