বিয়ানীবাজারে অর্ধশত ভুয়া মুক্তিযোদ্ধা: রাজনৈতিক প্রভাবে সনদ লাভ
বিয়ানীবাজার প্রতিনিধি
সিলেটের বিয়ানীবাজারের অন্তত অর্ধশত ভূয়া মুক্তিযোদ্ধা রাজনৈতিক প্রভাব ও আর্থিক লেনদেনের মাধ্যমে তালিকায় স্থান পান। তারা মুক্তিযোদ্ধা তালিকায় নাম অর্ন্তভূক্ত করে রাষ্ট্রের সকল সুবিধা গ্রহণ করেছেন। অনেক ভূয়া মুক্তিযোদ্ধার বিরুদ্ধে যথাযথ কর্তৃপক্ষ তদন্ত করছে। নতুন করে কারো বিরুদ্ধে অভিযোগ জমা হলে সেগুলোও তদন্ত করে দেখা হবে বলে জানা গেছে।
উপজেলা সমাজসেবা অফিস সূত্র জানায়, বিয়ানীবাজারে ৫৫৪ জন বীর মুক্তিযোদ্ধা তালিকাভূক্ত রয়েছেন। তারা রাষ্ট্রীয় সুবিধা গ্রহণের পাশাপাশি বিভিন্ন ভাতা-সম্মাননা পাচ্ছেন। যদিও এই তালিকার অন্তত অধর্শত মুক্তিযোদ্ধা ভূয়া, তাদের সনদও জাল। এছাড়া শহীদ মুক্তিযোদ্ধার তালিকায় আরো ২৬ জনের নাম লিপিবদ্ধ আছে। আর মুক্তিযোদ্ধাদের সমন্বিত তালিকায় মোট ৬০৭ জনের নাম উল্লেখ করা হয়েছে। ভুয়া মুক্তিযোদ্ধাদের দৌরাত্ম্য ঠেকাতে সরকারের নানা উদ্যোগ থাকলেও থেমে নেই জালিয়াত চক্রকে রোখা যায়নি। আর এই ভুয়া মুক্তিযোদ্ধাদের গেজেটভুক্তির প্রক্রিয়া অনুসন্ধান করতে গিয়ে খোঁজ মিলেছে অভিনব ‘শর্টকাট’ পদ্ধতির। গত কয়েক বছরে এ পদ্ধতিতে যারা গেজেটভুক্ত হয়েছেন, এমন অনেকেই এখন চিহ্নিত হয়েছেন ভুয়া মুক্তিযোদ্ধা হিসেবে। বিধি অনুযায়ী মন্ত্রণালয়ের পক্ষে মুক্তিযুদ্ধবিষয়ক মন্ত্রী গেজেটভুক্তির সংশ্নিষ্ট আবেদন গ্রহণের জন্য অনুমোদন করলে সেটি জামুকায় নথিভুক্ত করা হয়। এরপর জামুকার বৈঠকে করা সিদ্ধান্ত সুপারিশ অনুযায়ী সংশ্নিষ্ট মুক্তিযোদ্ধার আবেদন মন্ত্রণালয়ের নির্দেশে গেজেট আকারে প্রকাশ করে বিজি প্রেস। তবে ভারতীয় তালিকায় উল্লিখিত মুক্তিযোদ্ধাদের গেজেটভুক্তির জন্য জামুকার সুপারিশের প্রয়োজন নেই। মন্ত্রণালয় এ বিষয়ে গেজেট প্রকাশ করে থাকে।
খোঁজ নিয়ে জানা যায়, গত ১৬ বছরে বিয়ানীবাজারে বেশী ভূয়া মুক্তিযোদ্ধার আভির্বাব হয়েছে। কেউ আবার যোদ্ধাহত মুক্তিযোদ্ধা তালিকায়ও নাম লিখিয়েছেন। এসব ভূয়া মুক্তিযোদ্ধাদের বিরুদ্ধে সাধারণ মানুষের নানা অভিযোগ রয়েছে। গত প্রায় ৬ মাস পূর্বে ৪-৫ জন ভূয়া মুক্তিযোদ্ধার সনদ তদন্ত করা হয়। ওই প্রতিবেদনটি ঢাকায় জামুকার দপ্তরে পাঠানো হয়েছে।
বিয়ানীবাজার উপজেলা সমাজসেবা কর্মকর্তা অনুজ চক্রবর্তী জানান, ভূয়া মুক্তিযোদ্ধার তালিকা আমাদের কাছে নেই। তবে উপজেলা নির্বাহী অফিসারের কার্যালয় থেকে তা তদারকি করা হয়।