হবিগঞ্জে ১৬৭ কিলোমিটার জুড়ে ভেসে উঠেছে বন্যার ক্ষত
দৈনিকসিলেট ডটকম
বন্যায় হবিগঞ্জে সাত উপজেলার ১৬৭ কিলোমিটার গ্রামীণ সড়ক ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। এসব সড়ক মেরামতে প্রয়োজন ১৩৬ কোটি টাকা। জেলায় বন্যার এ ক্ষতি শুধু স্থানীয় সরকার প্রকৌশল অধিদপ্তরের (এলজিইডি) মাধ্যমে নির্মিত ৬২ সড়কের। পানি নেমে যাওয়ার পর সড়কগুলোর ১৬৭ কিলোমিটার জুড়ে বন্যার ক্ষত ভেসে উঠেছে।
এর বাইরে সড়ক বিভাগের হবিগঞ্জ-নাছিরনগর সড়কের আড়াই কিলোমিটার রাস্তা ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে, যা মেরামতের জন্য ৫০ লাখ টাকার প্রয়োজন। এবারের বন্যায় সবচেয়ে বেশি ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে হবিগঞ্জ সদর উপজেলায়। এ উপজেলার ২৪টি সড়কে ৫৮ কিলোমিটারে ছোট-বড় গর্ত ও অনেক স্থানে ভেঙে গেছে। মেরামতে প্রয়োজন ৩৭ কোটি টাকা।
বন্যাকবলিত সড়কের ৪০ কিলোমিটার বানিয়াচং উপজেলায়। এ ছাড়া আজমিরীগঞ্জে ৩১ কিলোমিটার, চুনারুঘাটে ১৪, বাহুবলে ১১, মাধবপুরে ৭ ও লাখাই উপজেলায় ৫ কিলোমিটার সড়ক ক্ষতিগ্রস্ত হওয়ার হিসাব দিয়েছে এলজিইডি।
সরেজমিনে দেখা যায়, হবিগঞ্জ সদর উপজেলায় খোয়াই নদীর বাঁধে এলজিইডির ২১ কিলোমিটার সড়ক ব্যাপকভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। লোকড়া ও রিচি ইউনিয়নের লোকজন এতে দুর্ভোগে পড়েছেন।
পানির স্রোতে জালাবাবাদ এলাকায় খোয়াই নদীর বাঁধে প্রায় ৫০ ফুট প্রস্থ ভাঙন দেখা গেছে। সেখানে নদী ও হাওর যুক্ত হয়ে গেছে। ফলে মানুষ ও যান চলাচল বন্ধ। মাছুলিয়া-মশাজান এলাকায়ও নদীর দুই পারের বাঁধে নির্মিত এলজিইডির সড়ক ব্যাপক ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে।
জেলা শিক্ষা কর্মকর্তা মোহাম্মদ রুহুল্লাহ জানান, বন্যায় জেলার ২৪টি মাধ্যমিক বিদ্যালয় ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে।এর মাঝে নবীগঞ্জ উপজেলায় আটটি এবং হবিগঞ্জ সদর উপজেলা ও বানিয়াচং উপজেলায় পাঁচটি মাধ্যমিক বিদ্যালয় ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। লাখাই উপজেলায় তিনটি, আজমিরীগঞ্জ উপজেলায় দুটি ও শায়েস্তাগঞ্জ উপজেলায় একটি বিদ্যালয় ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। এসব বিদ্যালয় মেরামতে প্রয়োজন ৩৯ লাখ ২৫ হাজার টাকা।
জেলা প্রাথমিক শিক্ষা কর্মকর্তা গোলাম মাওলা জানান, বন্যায় জেলার ২০টি সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। এর মধ্যে সব চেয়ে বেশি নবীগঞ্জে ছয়টি ও হবিগঞ্জ সদর উপজেলায় পাঁচটি। এর মাঝে নবীগঞ্জের পাঁচটি স্কুল ছিল বন্যা আশ্রয়কেন্দ্র।
এলজিইডি হবিগঞ্জের সিনিয়র সহকারী প্রকৌশলী ইসতিয়াক হাসান জানান, বন্যার পানিতে অন্য ছয় উপজেলার সড়কগুলোও একইভাবে ক্ষতিগ্রস্ত। ১৬৭ কিলোমিটার গ্রামীণ সড়ক মেরামতের জন্য প্রায় ১৩৬ কোটি টাকার চাহিদা পাঠানো হয়েছে।