অরক্ষিত শাবিপ্রবি, নিরাপত্তা দেওয়ার আছে কে?
নুর আলম, শাবিপ্রবি
সরকার পতনের পর প্রশাসনিক ব্যক্তিবর্গ পদত্যাগের কারণে নিরাপত্তাহীন ক্যাম্পাস শাহজালাল বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়। বিশ্ববিদ্যালয়ের সার্বিক শৃঙ্খলা দেখভাল করা ও নিরাপদ ক্যাম্পাস নিশ্চয়তা দেওয়ার জন্য নেই প্রক্টরিয়াল বডিও। সরকারের পতনের পর একযোগে পদত্যাগ করে প্রক্টরিয়াল বডি ও আবাসিক হলগুলোর প্রাধ্যক্ষরা। এদিকে নানা অনিয়মের অভিযোগের দায়ে পদত্যাগ করেন নিরাপত্তা শাখার কর্মকর্তা সাইফুল ইসলাম সাইফ। তাছাড়া গত ২৬ আগস্টে এলাকাবাসীদের আলটিমেটামে হল ছাড়তে বাধ্য হন ছেলেদের তিন হলের শিক্ষার্থীরা। এতে সর্বদিক দিয়ে প্রায় অরক্ষিতভাবে চলছে বিশ্ববিদ্যালয়টি।
জানা যায়, নানা অনিয়মের সঙ্গে জড়িত বিশ্ববিদ্যালয়ের নিরাপত্তার নিমিত্তে চুক্তিবদ্ধ যমুনা গার্ড লিমিটেডের সুপারভাইজারও দীর্ঘ এক মাস ধরে তার কর্মস্থলে অনুপস্থিত। এতে অভিভাবকহীন দায়িত্ব পালন করছেন নিরাপত্তাকর্মীরা। কিন্তু তারাও দেড়মাস ধরে পাচ্ছেনা কোন বেতন। এদিকে শিক্ষামন্ত্রণালয়ের নির্দেশে দেশের অন্যান্য পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়ের ন্যায় আংশিক অস্থায়ী প্রশাসন গঠিত হয়েছে এই বিশ্ববিদ্যালয়ও। প্রশাসন গঠনের এক সপ্তাহ পেরিয়ে গেলেও তারাও নিরাপত্তার অভাবে খুলে দিতে পারছেনা ছেলেদের আবাসিক হলগুলো। এদিকে, সরকার পতনের পর থেকে ছাত্রীরা তাদের হলে সুষ্ঠু-শান্ত পরিবেশে আছে বলে জানায় একাধিক আবাসিক ছাত্রী৷ তবে নিরাপত্তা নিয়ে শঙ্কায় রয়েছেন তাঁরা৷
বিশ্ববিদ্যালয়ের নিরাপত্তাকর্মীরা জানান, ৫ আগস্টের পর থেকে ক্যাম্পাসে আগের তুলনায় বহিরাগতদের আনাগোনা বেড়েছে। স্থানীয় এলাকাবাসীরাও ক্যাম্পাসে বিচরণ করে। তবে বহিরাগতদের ক্যাম্পাসে প্রবেশে বিরত রাখার জন্য তাদের তদারকি রয়েছে বলে জানান।
নৃবিজ্ঞান বিভাগের শিক্ষার্থী মো. ফাহিম শাকিল বলেন, ক্যাম্পাসে এখন কোন স্থায়ী প্রশাসন নেই। তবে অস্থায়ী প্রশাসন দ্বারা বিভিন্ন প্রশাসনিক কার্যালয় খুলে দেওয়া হয়েছে। তবে আমি মনে করি, ক্যাম্পাসের এখন যে উদ্ভূত পরিস্থিতি তাতে উপাচার্য নিয়োগ না হওয়া পর্যন্ত পুরোদমে বিশ্ববিদ্যালয় সচল করা সম্ভব নয়। বিশ্ববিদ্যালয়ের নিরাপত্তার বিষয়টিও এটার বাইরে নয়। তাই উপাচার্য না আসা পর্যন্ত সম্পূর্ণ রক্ষিত ক্যাম্পাস গঠন সম্ভবও নয়।
নিরাপত্তার বিষয় নিয়ে বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রথম ছাত্রী হলের আবাসিক শিক্ষার্থী তানিয়া আক্তার বলেন, হল প্রাধ্যক্ষ পদত্যাগ ও এলাকাবাসীরা ছেলেদের হল থেকে নামিয়ে দেওয়ার পর আমরা মেয়েরা প্রথমদিকে হলের নিরাপত্তার আশঙ্কায় ছিলাম। কিন্তু এখন থাকতে থাকতে সে ভয়টা কেটে গেছে। তবে এভাবে অনিশ্চিত নিরাপত্তায় হলে থাকা যায় না। কখন কি ঘটে কি ঘটে তা তো বলা যায় না। এজন্য আমরা অতি দ্রুত প্রশাসন চাই।
সার্বিক বিষয়ে জরুরি প্রশাসনিক ও আর্থিক দায়িত্বরত অধ্যাপক সৈয়দ বদিউজ্জামান ফারুক বলেন, ক্যাম্পাসের নিরাপত্তা অক্ষুন্ন রাখার জন্য আমাদের সাধ্যমতো আমরা চেষ্টা করতেছি। কর্তৃপক্ষ দ্রুতই প্রশাসনিক ব্যক্তিবর্গ নিয়োগ দিবে বলে আশা করছি। তাই আমরা এখন আর কোন অস্থায়ী প্রশাসন নিয়োগ দিচ্ছি না।