শান্তিগঞ্জে অপরিকল্পিত খাল খননে ভাঙনের গ্রাসে গ্রাম
দৈনিকসিলেট ডেস্ক
বেগুন, মরিচ, পাট যেখানে চাষ হতো, সেখানে এখন থৈ থৈ পানি। পারিবারিক সবজির ক্ষেত, বাড়ির আঙিনা, গ্রামের চলাচল সড়ক সবই গেছে খালে। সুনামগঞ্জের শান্তিগঞ্জে অপরিকল্পিতভাবে খাল খননের কারণে কয়েকটি গ্রামের মানুষ এমন ভোগান্তির শিকার হচ্ছেন।
সরেজমিন দেখা যায়, শান্তিগঞ্জ উপজেলার জয়কলস ইউনিয়নের নাইনন্দা খালের পাড়ের গ্রাম উজানীগাঁও, সুলতানপুর, পার্বতীপুরসহ কয়েকটি গ্রামের মানুষ ভাঙনের দুশ্চিন্তায় পড়েছেন। গত বছর গ্রামের পাশ দিয়ে যাওয়া এই খাল খননের পর এমন ভাঙনের মুখে পড়েছেন তারা।
সুলতানপুর থেকে পার্বতীপুরের সড়কের বড় অংশ খালে বিলীন হয়ে গেছে। গ্রামের সামনে সবজির ক্ষেতের অস্তিত্ব নেই। অনেকের বাড়ি ভাঙতে শুরু করেছে। এতে দিশেহারা এসব গ্রামের মানুষ। গ্রামের সড়কের কোনো অংশ খালের গর্ভে চলে গেছে। কোনো কোনো অংশ এখনো ভাঙছে। ভাঙা সড়ক পথে যাতায়াত বন্ধ হয়ে গেছে পার্বতীপুর গ্রামের মানুষের। এতে গ্রামের কারো অসুখ হলে রোগী নিয়ে যেতেও বিপাকে পড়েন তারা।
পানি উন্নয়ন বোর্ডের দায়িত্বশীলরা জানান, তিন কোটি ৫৮ লাখ টাকা ব্যয়ে ৬.৮ কিলোমিটার নাইন্দা খাল খননের কাজ শুরু হয় ২০২২ সালে। ২০২৩ সালে এই কাজ শেষ করে ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান মেসার্স গুডম্যান এন্টারপ্রাইজ।
পার্বতীপুর গ্রামের বাসিন্দা আজমাতুন নেছা বলেন, বাড়ির সামনের জমিতে আগে সবজির ক্ষেত হতো। অপরিকল্পিতভাবে খাল খননের পর সবজির ক্ষেত বিলীন হয়ে গেছে। সামনের সড়ক ভেঙে গেছে। আরসিসি ঢালাই থাকলেও নিচে মাটি নেই। যেকোনো সময় এটি তলিয়ে যাবে।
একই গ্রামের দিলবাহার বলেন, খাল খননের পরেই আমাদের ঘরবাড়ি ভাঙছে। এর আগে বাড়ি ঘর ভাঙেনি। বন্যার সময় সড়কে পানি উঠলেও চলাচল করা গেছে। এখন চলাচল করতে পারি না। নৌকা ছাড়া উপজেলা, বাজার বা হাসপাতালে যেতে পারি না।
একই গ্রামের প্রবাসী আলী আক্কাস বলেন, গ্রামের সামনের সড়ক ভাঙার কারণে চার পাঁচ গ্রামের মানুষ অসুবিধায় আছি। বর্তমানে আমাদের বাড়ি ঘর ভেঙে খালে যাওয়ার পথে। খননের সময় আমরা প্রতিবাদ করেছি। তারা শুনে নি। একজন প্রসূতি রোগী নৌকা ছাড়া নিয়ে যাওয়ার উপায় নেই। সময় মতো নৌকাও পাওয়া যায় না।
অভিযোগের বিষয়ে খতিয়ে দেখে ব্যবস্থা নেয়ার কথা জানিয়ে সুনামগঞ্জ পানি উন্নয়ন বোর্ডের নির্বাহী প্রকৌশলী মো. মামুন হাওলাদার বলেন, সুনামগঞ্জে নদ নদীর পানি ধীরে ধীরে কমছে। এতে অনেক জায়গায় ভাঙন দেখা দিচ্ছে। ভাঙন এলাকা চিহ্নিত করে ঊর্ধ্বতন কতৃর্পক্ষকে জানিয়েছি। অনুমোদন পেলে কাজ শুরু করা হবে।