সালমান-শাবনূরের কি সত্যিই প্রেম ছিল
দৈনিকসিলেটডেস্ক
ঢালিউডের সবচেয়ে জনপ্রিয় জুটিগুলোর অন্যতম সালমান-শাবনূর। জহিরুল হক পরিচালিত ‘তুমি আমার’ সিনেমায় একত্রে প্রথম কাজ করেন দুজন। ১৯৯৪ সালে মুক্তি পায় ছবিটি। ক্যারিয়ারের ২৭টি সিনেমার ১৪টিতেই সালমানের নায়িকা ছিলেন শাবনূর। আজ নায়কের ৫৪তম জন্মদিনে ভালোবাসা জানিয়ে পোস্ট দিয়েছেন শাবনূর। শোনা যায়, তাদের মধ্যে ছিল ঘনিষ্ঠ সম্পর্ক। নায়কের জীবদ্দশায় সত্যিই কি প্রেম ছিল দুজনার?
সালমানের নায়িকা শাবনূর এখন অস্ট্রেলিয়া প্রবাসী। আজ সকালে সালমানকে স্মরণ করে ফেসবুকে শাবনূর লিখেছেন, ‘বাংলা চলচ্চিত্রের যুবরাজ সালমান শাহ এক অকৃত্রিম ভালোবাসার নাম, এক ইতিহাসের নাম। প্রিয় এই নক্ষত্র এখনো আমাদের সবার হৃদয়ে, ভাবনায়, অনুভবে বেঁচে আছে, বেঁচে থাকবে চিরকাল। জন্মদিনে বরাবরের মতো পরম শ্রদ্ধা ও ভালোবাসায় স্মরণ করছি তোমাকে। আল্লাহপাক তোমাকে জান্নাতবাসী করুন, আমিন।’
কদিন আগে সালমানের মৃত্যুদিনেও তাকে স্মরণ করে ফেসবুকে একটি পোস্ট দিয়েছিলেন শাবনূর। সেখানে তিনি লেখেনে, ‘আজ চলচ্চিত্রের রাজপুত্র সালমান শাহর ২৮তম মৃত্যুবার্ষিকী। ১৯৯৬ সালের ৬ই সেপ্টেম্বরের ওই দিনে ঢাকাই চলচ্চিত্রে বিশাল শূন্যতা তৈরি করে বিদায় নিয়েছিলেন সবার প্রিয় নায়ক সালমান শাহ। ক্ষণজন্মা এ নক্ষত্রের প্রতি বিনম্র শ্রদ্ধা, ভালোবাসা এবং তার আত্মার মাগফেরাত কামনা করছি। ওপারে ভালো থেকো সালমান।’
পর্দায় সালমান-শাবনূরের রসায়ন ভীষণ পছন্দ করতো দর্শক। মিথের মতো ছড়িয়ে পড়েছিল এ দুই তারকার প্রেমের গুঞ্জনও। কিন্তু বিবাহিত সালমান কখনই দুজনের সম্পর্ককে প্রেমের দিকে ঠেলে দেননি। বরং বন্ধু হিসেবে সালমান-শাবনূর ছিলেন ঢালিউডের আদর্শ। সে প্রসঙ্গে জানতে চাইলে একবার শাবনূর বলেন, ‘প্রেম নয়, সালমান আর আমার ভাইবোনের সম্পর্ক ছিল। সালমানের নিজের ছোট বোন ছিল না, তাই সে আমাকে ছোট বোনের মতোই দেখতো। এটাও ঠিক, সালমান শাহ আর আমাকে নিয়ে অনেকে অনেক কথা বলেছেন, কিন্তু সেসবের কোনোটিই সত্য নয়।’
অন্যদিকে সালমানের সাবেক স্ত্রী সামিরার দাবি, শাবনূরের সঙ্গে সালমানের প্রেম ছিল। তা নিয়ে দাম্পত্যকলহের জের ধরেই আত্মহত্যা করেছিলেন সালমান শাহ।
সে প্রসঙ্গে শাবনূর বলেছিলেন, ‘আমি তখন অবিবাহিত একটা মেয়ে। সালমান ছিল বিবাহিত। ওর স্ত্রীর সঙ্গেও আমার ভালো সম্পর্ক ছিল। সালমানের স্ত্রী সব সময় আমাদের সঙ্গেই থাকত। প্রেমের সম্পর্ক বা ওই রকম কিছু যদি হতো, সেটা তখন সবাই বুঝতে পারতো।’
সালমান শাহর অস্বাভাবিক মৃত্যু নিয়ে তদন্ত করেছিল পুলিশ ব্যুরো অব ইনভেস্টিগেশন (পিবিআই)। ২০২০ সালের ফেব্রুয়ারি মাসে এক সংবাদ সম্মেলনে পিবিআইয়ের তৎকালীন প্রধান বনজ কুমার মজুমদার বলেন, ‘পিবিআইয়ের তদন্তে সালমান শাহকে হত্যার কোনো প্রমাণ পাওয়া যায়নি। পারিবারিক কলহ ও মানসিক যন্ত্রণায় তিনি আত্মহত্যা করেছেন।’
সেসময় সালমানের আত্মহত্যার পাঁচ কারণ দেখিয়েছিল পিবিআই। এক, সালমান শাহ ও শাবনূরের অতিরিক্ত অন্তরঙ্গতা। দুই, সামিয়ার সঙ্গে দাম্পত্য কলহ। তিন, মাত্রাতিরিক্ত আবেগপ্রবণতা, চার, মায়ের প্রতি অসীম ভালোবাসা, জটিল সম্পর্কের বেড়াজালে পড়ে পুঞ্জীভূত অভিমানে রূপ নেওয়া এবং পাঁচ, সন্তান না হওয়ায় দাম্পত্য জীবনের অপূর্ণতা।
নির্মাতাদের কেউ এখন আর এ বিষয়ে কিছু বলতে রাজি হন না। কারণ শাবনূর তার সংসারে নিজের মতো জীবনযাপন করছেন। যদিও কিছুদিন আগে স্বামীর সঙ্গে বিচ্ছেদ হয়ে গেছে তার। তবে পুরাতন সাক্ষাৎকার থেকে অনুমান করে নেওয়া যায়, বন্ধুত্ব ও প্রেমের মাঝামাঝি এক ধরনের গভীর বোঝাপড়া ছিল সালমান ও শাবনূরের। নায়িকা শাবনূরের ভাষায়, ‘সালমান খুব আন্তরিক আর কাজপাগল ছিলেন। আমাদের দুজনের বোঝাপড়াটা ছিল চমৎকার। বলতে পারেন, একে অন্যের চোখের ইশারা বুঝতে পারতাম।’
২০১১ সালের ৬ ডিসেম্বর অনিক মাহমুদ হৃদয়ের সঙ্গে আংটিবদল করেন শাবনূর। ২০১২ সালের ২৮ ডিসেম্বর তারা বিয়ে করেন। ২০১৩ সালের ২৯ ডিসেম্বর জন্ম নেয় তাদের ছেলে আইজান নিহান। ‘বনিবনা’ না হওয়ায় ২০২০ সালের ২৬ জানুয়ারি স্বামীকে তালাক দেন শাবনূর।
ছেলেকে নিয়ে এখন অস্ট্রেলিয়ায় থাকেন অভিনেত্রী শাবনূর। চলতি বছর তিনি ঢাকায় এসেছিলেন। জানা গিয়েছিল ‘মাতাল হাওয়া’, ‘রঙ্গনা’ ও ‘এখনো ভালোবাসি’ নামে তিনটি সিনেমায় অভিনয় করবেন তিনি। এগুলোর মধ্যে প্রথমটি পরিচালনা করার কথা চয়নিকা চৌধুরী ও অন্য দুটি আরাফাত হোসাইন নামের এক তরুণ পরিচালকের।